মঙ্গলবার, ১ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

সীমান্তে গরুর সঙ্গে আসছে মাদক বাড়ছে করোনা ঝুঁকি

পঞ্চগড় প্রতিনিধি

সীমান্তে গরুর সঙ্গে আসছে মাদক বাড়ছে করোনা ঝুঁকি

উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের বিভিন্ন সীমান্তপথে ভারত থেকে অবাধে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে গরুসহ নানা রকমের পণ্য। গরুর সঙ্গে ঢুকে পড়ছে মাদক। সীমান্ত এলাকার চোরাকারবারিরা রাতের অন্ধকারে কাঁটাতার কেটে অথবা অন্য কোনো উপায়ে ভারতে প্রবেশ করছে। কয়েক দিন ভারতে অবস্থান করার পর তারা গভীর রাতে ফিরে আসছে বাংলাদেশে। এতে ভারতীয় করোনাভাইরাস এবং ব্লাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে গেছে। সীমান্ত এলাকার সাধারণ মানুষ আতংকে আছেন। বর্ষাকালে বৃষ্টির রাতে চোরাকারবারিরা বিজিবি এবং পুলিশ প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে গরু এবং মাদক নিয়ে আসছে। এসব এলাকায় মাদকে সয়লাব হয়ে গেছে। বোদা উপজেলার বড়শশি ইউনিয়নের  কয়েকটি গ্রামের সহস্রাধিক নাগরিক এই চোরাকারবারির সঙ্গে জড়িত। এসব এলাকার ভারতীয় সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া না থাকার কারণে বাড়িতে বাড়িতে মাদকের আখড়া। গ্রামগুলোতে বসে মাদকের হাট। এসব এলাকা থেকে সারা দেশে মাদক এবং গরু পাচার করা হয়। রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রছায়ায় বড় মাদক ও চোরাকারকবারি সিন্ডিকেট এই ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছেন। অভিযোগ উঠেছে এই এলাকার একজন জেলা পরিষদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা পুরো চোরাকারবারি নিয়ন্ত্রণ করছেন। বিজিবি এবং পুলিশের অভিযানে অনেক চোরাকারবারি ধরা পড়লেও আইনের ফাঁকফোকরে বেরিয়ে আসছেন তারা। স্থানীয়দের অভিযোগ, নাওতারি গ্রামের অনেকেই গরু ও মাদক চোরাকারবারির সঙ্গে জড়িত। এদের অনেকের নামে একাধিক মামলা চলমান আছে। জানা গেছে, এসব এলাকার স্কুলগামী শিশুরাও এখন মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। অপরাধ বেড়ে যাচ্ছে। স্থানীয়রা বলছেন বোদা থানা পুলিশ মাদক নিরোধে তৎপর রয়েছে। তবে আদালত থেকে জামিন পায় মাদক ব্যবসায়ীরা। বোদা থানার ওসি আবু সাঈদ জানান, গত ৬ মাসে অন্তত তিরিশটি মাদকের মামলা হয়েছে। আসামি গ্রেফতার করা হয়েছে অর্ধশতাধিক। মাদক চোরাকারবারি নিয়ে জিরো টলারেন্সে আছি। অসংখ্য মামলা হচ্ছে। আসামি ধরা হচ্ছে। পরিবেশকর্মী ইব্রাহিম এলিন জানান, গ্রামে গ্রামে মাদকে সয়লাব হয়ে গেছে। ভারত থেকে অনেকে সচেতনতার অভাবে গরু চোরাকারকারিতে জড়িয়ে পড়ছে। করোনার ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। প্রশাসনের আরও ভূমিকা নেওয়া প্রয়োজন। সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার সীমান্ত দিয়ে চোরাচালান হচ্ছে গরু ও মাদক। এসব উপজেলাতেও রয়েছে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। তেঁতুলিয়া উপজেলার কয়েকটি স্থান দিয়েও মাদক এবং গরু চোরাচালান হচ্ছে। একইভাবে আটোয়ারী উপজেলার বেশ কয়েকটি সীমান্ত গ্রাম দিয়েও ভারতের গরু এবং মাদক চোরাচালান হচ্ছে। এসব চোরাকারবারি রাতের অন্ধকারে ভারতে যাওয়া-আসা করছেন। স্থানীয় থানা পুলিশ ও বিজিবি মাঝে মধ্যে সীমান্ত এলাকায় টহল দিলেও থামছে না চোরাচালান।

 ফলে ভারতীয় স্টেইন করোনাভাইরাস এবং  ব্লাক ফাঙ্গাস যে কোনো সময় বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।  পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল খন্দকার আনিসুর রহমান বলেন, আমরা গরু চোলাচালান নিয়ে ২৪ ঘণ্টা তৎপর রয়েছি। বর্তমানে কোনো গরু পঞ্চগড়ের সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করতে পারছে না। আমরা সব ধরনের ডিভাইস ব্যবহার করছি। শুধু গরুই নয়, কোনো ধরনের মাদকসহ অন্যান্য পণ্যও ঢুকছে না। ভারতীয় করোনাভাইরাস যাতে কোনোভাবেই প্রবেশ করতে না পারে এ ব্যাপারে আমরা যথেষ্ট সজাগ রয়েছি। নীলফামারী ৫৬ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, বড়শশী এলাকার সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নেই। তাই এখানে চোরাচালান একটু বেশি হতো। কিন্তু আমরা বর্তমানে কঠোর অবস্থান নিয়েছি। তাই চোরাচালান প্রায় শূন্যের কাছাকাছি নেমে এসেছে। বড়শশী এলাকায় বিজিবি সদস্য বাড়ানো হয়েছে। টহল বাড়ানো হয়েছে।

সর্বশেষ খবর