বৃহস্পতিবার, ৩ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

অনলাইনে সারা দেশে যাচ্ছে মেহেরপুরের আম

মেহেরপুর প্রতিনিধি

অনলাইনে সারা দেশে যাচ্ছে মেহেরপুরের আম

সীমান্তবর্তী ঐতিহাসিক মেহেরপুর জেলায় শুরু হয়েছে আম সংগ্রহ। বাগানে বাগানে আম ভাঙার ধুম চলছে। মেহেরপুরের আম সুস্বাদু হওয়ায় দেশের বিভিন্ন জেলার বাজারের পাশাপাশি ইউরোপের বিভিন্ন দেশের বাজারে চাহিদা রয়েছে। তবে করোনাভাইরাসের কারণে জেলার বাইরে থেকে এবার বড় বড় ব্যবসায়ীরা আম সংগ্রহে আসেনি। তবে ব্যবসায়ীরা না এলেও অনলাইনের মাধ্যমে জেলার অনেক শিক্ষিত বেকার-যুবকরা বিক্রয় করছেন এসব বাগানের আম। ফলে বড় ক্রেতা না থাকলেও অনলাইনের অর্ডার নিয়ে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে জেলার আম চলে যাচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন্ বাজারে। ফলে লাভবান হচ্ছেন আমচাষি ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। গেল কয়েক বছরে প্যাকেট জাত মেহেরপুরের এই ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়েছে। কিন্তু করোনা মহামারীর কারণে এ বছর রপ্তানি বন্ধ হয়েছে। যার কারণে বিগত বছরগুলোতে যে কাক্সিক্ষত দাম জেলার কৃষকরা পেত সেটা এখন আর পাচ্ছে না। মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে এ মৌসুমে প্রায় ৯৮ ভাগ গাছেই মুকুল আসে। জেলার তিন উপজেলায় ছোট বড় গাছ মিলে প্রায় ২ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আমের বাগান রয়েছে। যা থেকে ৩৩ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। নিরাপদ আম বাজারজাতকরণে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। জেলায় উৎপাদিত আমের মধ্যে বোম্বাই, হিমসাগর, ল্যাংড়া, গোপালভোগ ও আম্রপালির চাহিদা সবচেয়ে বেশি। মেহেরপুরের হিমসাগর আম দেশের সবচেয়ে বেশি সুস্বাদু হওয়ায় ইউরোপ মহাদেশে এর চাহিদা রয়েছে। এ ছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলেও মেহেরপুরের হিমসাগর আমের ব্যাপক চাহিদা বেড়েছে। তবে এটিকে ধরে রাখতে হলে সঠিক সময় আম বাজারজাত করতে হবে বলে জানান আম চাষিরা। চিতলা গ্রামের আম চাষি আবদুর রাজ্জাক বলেন, তার বাগানের আম আগেই বিক্রি করে দিয়েছিলেন। পরের বাগানের আমগুলো স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ক্রয় করে বাইরে বিক্রয় করছে। তাছাড়াও স্থানীয় বাজারেও বিক্রয় করছে। চলতি মৌসুমে প্রচুর আম হয়েছে গাছে। তাছাড়া দামেও আমরা খুশি। প্রতি মণ আমরা ১ হাজার ৫০০ টাকা থেকে শুরু ১ হাজার ৭০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রয় করছি। অনলাইনের মাধ্যমে আম বিক্রেতা শামসু জামান রন্টু জানান, করোনা ভাইরাসের কারণে অনলাইনের ই-কমার্সের চাহিদা বেড়েছে। অনলাইনে মানুষ এখন বেশি আস্বস্ত হয়েছে। বাইরে গিয়ে আম কিনতে গিয়ে যে ভোগান্তি হয় এবং স্বাদেও সমস্যা দেখা দেয়। সেক্ষেত্রে আমাদের কাছ থেকে নিশ্চিত ভালো মানের আম বাড়িতে বসে কোনো প্রকার ভোগান্তি ছাড়াই পায়। যার ফলে আমাদের প্রতিদিন বিক্রি বাড়ছে আমের। আমরা এখন প্রতিদিন ৩০ মণ করে আম রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে পাঠাই। তবে কুরিয়ার চার্জটা অনেক বেশি। কুরিয়ার সার্ভিস খরচটা কম হলে ভালো হতো। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর উপপরিচালক স্বপন কুমার খাঁ জানান মেহেরপুরে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে আঁটি, বোম্বাই ও হিমসাগর আম সংগ্রহের কাজ। আসছে ৫ জুন থেকে ২৫ জুলাই পর্যন্ত হাইব্রিড জাতের আম সংগ্রহের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। যা থেকে ৩৩ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। মেহেরপুর জেলায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সব জাতের আমেরই চাষ হচ্ছে। ভোক্তাদের কাছে নিরাপদ আম পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে কৃষি বিভাগ কাজ করছে বলে জানালেন এই কর্মকর্তা।

সর্বশেষ খবর