গ্রামের নাম কল্যাণনগর। বগুড়া জেলার এ গ্রামের কৃষিপণ্য, হাট-বাজার, স্কুল-কলেজ থাকলেও গ্রামের একমাত্র সড়কটিই যেন গ্রামবাসীর জন্য অকল্যাণকর হয়ে আছে। জেলার নন্দীগ্রাম উপজেলার চাকলমা থেকে কল্যাণনগর গ্রামে যাওয়ার প্রায় তিন কিলোমিটারের একমাত্র সড়কটি দিয়ে চলাচলে দুর্ভোগ ও বিড়ম্বনা নিত্যসঙ্গী। এ সড়কটির কিছু অংশ পাকা এবং প্রায় দেড় কিলোমিটার কাঁচা থাকায় ১০ গ্রামের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তির শিকার। জানা যায়, এ জেলার নন্দীগ্রাম উপজেলার চাকলমা ও কল্যাণনগরে সাপ্তাহিক দুটি করে হাট বসে। ফলে ওই সড়ক দিয়ে টাকুরাই, দেওতা, হাটধুমা, পান্তাগাড়ি, পাঁচপুকুরিয়াসহ প্রায় ১০ গ্রামের মানুষ দু-হাটে সওদা করতে বাজারে যাতায়াত করেন। ট্রাক, ইজিবাইক, অটোভ্যান এবং ভটভটি চলাচল করে প্রতিদিন। গ্রামের মানুষের চাষকৃত ধান, পাট, বিভিন্ন ধরনের সবজিসহ হাট-বাজারে যাওয়া-আসা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। বৃষ্টি হলেই গ্রামীণ এই সড়কে একাধিক স্থানে কাদা এবং বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। কল্যাণনগর বাজার থেকে গ্রামের মধ্যে সড়কের কিছু অংশে পাকা হলেও দেড় কিলোমিটার কাঁচা সড়কে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। বর্ষা এলে সড়কের গর্তে পানি জমে থাকে। অনেক সময় এ সময় ওই সড়কে যানবাহন চলাচল করে না। কৃষি পণ্য পরিবহনে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ভ্যান-রিকশা চলাচল করতে না পারায় গ্রামের মানুষ পায়ে হেঁটে চলাচল করে থাকেন। স্থানীয় কার্তিক চন্দ্র, নিতাই চন্দ্র ও নিখিল চন্দ্র জানান, কল্যাণনগর বাজারে সপ্তাহের শুক্রবার, মঙ্গলবার এবং চাকলমা বাজারে সপ্তাহের সোমবার ও বৃহস্পতিবার হাট বসে। আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ এ দুই হাটে মাছ, চাল, ডাল, সবজি, মসলা, তেলসহ বিভিন্ন ব্যবসা করেন। অনেকে কৃষিকাজও করেন। তারা নিজের মাঠে চাষকৃত সবজি হাটে নিয়ে বিক্রি করেন। বৃষ্টি হলেই কল্যাণনগর-চাকলমা কাঁচা রাস্তায় দুর্ভোগ বাড়ে। গ্রাম থেকে কৃষকের ধান সংগ্রহ করতে এই সড়ক দিয়ে ট্রাক চলাচল করলেও বর্ষার সময় চলাচল করে না। কল্যাণনগর এলাকার নরেশ চন্দ্র প্রামাণিক বলেন, আমাদের কান্না কেউ দেখে না। জনপ্রতিনিধিরা স্বপ্ন দেখাচ্ছেন বছরের পর বছর। ধান নিয়ে হাটে যাওয়ার সময় দুর্ভোগের শিকার হচ্ছি। বৃষ্টি হওয়ায় কাঁচা সড়কে কাদাপানি জমেছে। হেঁটে চলাচল করাও কঠিন হয়ে পড়েছে। এই সড়ক দিয়ে ভ্যানচালক আমজাদ ও আজাহার বলেন, বৃষ্টি হওয়ায় এ সড়কে কোনো ধরনের যানবাহন চলাচল করে না। কল্যাণনগর বাজার থেকে গ্রামের মধ্যে কিছু অংশে পাকা হয়েছে। কিন্তু আর মাত্র দেড় কিলোমিটার সড়কে মেরামত কাজ হয় না। কার কাছে গেলে আমাদের দুর্ভোগের অবসান হবে। নন্দীগ্রামের উপজেলা প্রকৌশলী শারিদ শাহনেওয়াজ বলেন, কল্যাণনগর-চাকলমা সড়ক প্রকল্প পাস হলেই টেন্ডারের মাধ্যমে কাজ শুরু করা হবে।