কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে কথিত পীরের দরবারে রাশেদ (২৮) নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় পীর তাছের উদ্দিন কল্যাণপুরীসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে দৌলতপুর থানায় হত্যা মামলা করেছেন নিহতের পিতা আবদুর রাজ্জাক। গত রবিবার দুপুরে মোবাইল চুরির অভিযোগে দৌলতপুর উপজেলার কল্যাণপুরে পীর তাছের ফকিরের দরবারের ভিতরে ওই যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত যুবক দৌলতপুর উপজেলার রিফাইতপুর ইউনিয়নের হরিণগাছী গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আবদুর রাজ্জাকের ছেলে। এদিকে হত্যার ঘটনায় নিহতের বাবা আবদুর রাজ্জাক বাদী হয়ে রবিবার গভীর রাতে কল্যাণপুর দরবারের কথিত পীর তাছের  উদ্দিন কল্যাণপুরীসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ১৫-২০ জনকে আসামি করে দৌলতপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে এজাহার নামীয় ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে। তারা হলেন, পার্শ্ববর্তী ভেড়ামারা উপজেলার সাইদুর রহমান মিলন, দৌলতপুর উপজেলার কল্যাণপুর গ্রামের সামসুদ্দিন ওরফে শিমুল, সেনাইকুণ্ডি গ্রামের আবদুস সাদি শিমুল, ইনছাফনগর গ্রামের সুমন হোসেন, হোসেনাবাদ গ্রামের ইমরান আলী ও কল্যাণপুর গ্রামের শফিউল রহমান লিমন। আসামিরা সবাই কথিত পীর তাছের ফকিরের ভক্ত এবং সবসময় তারা দরবারের ভিতরে অবস্থান করত। দৌলতপুর থানার ওসি নাসির উদ্দিন জানান, মোবাইলফোন চুরির অভিযোগে কল্যাণপুর দরবারের লোকজন রাশেদ নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার এজাহার নামীয় ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামিদেরও গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

এদিকে মামলা দায়েরের পর থেকে পীর তাছের উদ্দিন পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ। উল্লেখ্য, কল্যাণপুর দরবারের কথিত পীর তাছের ও তার ক্যাডারদের বিরুদ্ধে দরবার সংলগ্ন হিসনা নদী ও স্থানীয় লোকজনের জমি জোরপূর্বক দখল করার একাধিক অভিযোগ রয়েছে। দরবারের ভক্ত ক্যাডারদের ভয়ে স্থানীয় লোকজন ভয়ে মুখ খুলতেও সাহস পায় না। কেউ মুখ খুললে বা জমি দখলের প্রতিবাদ করলে তার ওপর চালানো হয় অমানষিক নির্যাতন ও অত্যাচার। করা হয় মিথ্যা মামলা। নদীর জায়গা দখলের ঘটনায় সম্প্রতি দৌলতপুর উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এজাজ আহমেদ মামুন, দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার, দৌলতপুর থানার ওসি নাসির উদ্দিন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তারা এ সময় হিসনা নদী দখলমুক্ত করার নির্দেশ দিলেও সে নির্দেশ অমান্য করে চলেছে দরবারের ভক্তরা।