রবিবার, ১৩ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

৬৪ জেলার কারিগরি শিক্ষা ব্যাহতের শঙ্কা

মো. জহুরুল আলম, খাগড়াছড়ি

৬৪ জেলার কারিগরি শিক্ষা ব্যাহতের শঙ্কা

পাহাড়ের তিন জেলা খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, বান্দরবানসহ দেশের ৬৪ জেলার ২৬৮ জন প্রশিক্ষক ( সেইপ প্রকল্পের আওতায়) দীর্ঘ করোনাকালীন বেতন-ভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন। জানা গেছে, সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারে সেইপ প্রকল্পের ১০ বিভাগে ১৩৯টি কোর্সে ৪৬ লাখ  ৮৮ হাজার ৩ জন প্রশিক্ষণার্থী ইতিমধ্যে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে নানাভাবে বিভিন্ন পেশায় কাজ করে স্বাবলম্বী হতে চলেছে। অথচ সেসব প্রশিক্ষকরা তাদের মাথার ঘাম পায়ে ফেলে অত্যন্ত সুচারুরূপে হাতে-কলমে বিভিন্ন ট্রেড যেমন আইটি সাপোর্ট, ইলেকট্রনিক্স,  ওয়েল্ডিং অ্যান্ড ফেব্রিকেশন, মোটর কার ড্রাইভিংসহ এমন গুরুত্বপূর্ণ ১০টি ডিপার্টমেন্টে ২৬৮টি কোর্সে প্রশিক্ষণার্থীদের প্রশিক্ষণ প্রদান করে জনশক্তিতে রূপান্তর করে চলেছে।  ওই সব প্রশিক্ষকরাই  আজ দীর্ঘ ১০ মাস ধরে বেতন-ভাতা না পেয়ে সংসার ও পারিবারিক জীবনে অর্থনৈতিকভাবে চরম দুর্দশায় দিন কাটাচ্ছেন । খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ১৪০ জন দক্ষ এসব প্রশিক্ষক দেশের বিভিন্ন জেলায় সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। তাদের মেধা ও শ্রম দিয়ে এসব প্রতিষ্ঠানের প্রশিক্ষণার্থী বেকার যুবক ও যুবাদের কারিগরি প্রশিক্ষণ দিয়ে স্বাবলম্বী করে তুলছে। সরকার করোনাকালীন সময়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মকর্তা কর্মচারীদের নানাভাবে আর্থিক প্রণোদনা ও চিকিৎসা ভাতা  প্রদান করলেও এসব প্রশিক্ষকরা তা থেকেও বঞ্চিত।  তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে কর্মসংস্থান বিনিয়োগ কর্মসূচির স্কিলস্ ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট  প্রোগ্রাম (সেইপ) সরকারের একটি বিশেষায়িত প্রকল্প। প্রকল্পটি বাংলাদেশ সরকার রাজস্ব ও উন্নয়ন বাজেটের আওতায় দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে দক্ষ ও উৎপাদনশীল জনশক্তিতে উচ্চ বর্ধনের পথে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে চলেছে।  অংক্য মারমা সুইং মেশিন অপারেশন ট্রেডের প্রশিক্ষক ও ড্রাইভিং ট্রেডের ইন্সট্রাক্টর মো: আবদুল খালেক এ প্রতিবেদকে জানান, গত বছরের মার্চ মাস থেকে এখনো  পর্যন্ত কোনো বেতন-ভাতা পাননি। অংক্য মার্মা জানান, স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে একার উপার্জনে চলে চার জনের সংসার। দুই সন্তানের পড়ালেখা ও ভরণপোষন চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। করুণ দশায় দিন পার করছেন তিনি।  অংক্য মারমার মতো আরও ২৬৭ জন প্রশিক্ষক একই অবস্থায় দিন কাটচ্ছে। এসব প্রশিক্ষকরা অচিরেই তাদের বেতন-ভাতা (মাস ভিত্তিক) প্রদান ও চাকরি স্থায়ীকরণের জন্য সরকরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। জানতে চাইলে খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারের অধ্যক্ষ মো: সোহেল গতকাল জানান, এসব প্রশিক্ষকদের (ইন্সট্রাক্টর) বেতন-ভাতা প্রদানের জন্য ঊর্ধ্বতন কতৃর্পক্ষের কাছে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।

সর্বশেষ খবর