যক্ষ্মা নামক মারাত্মক রোগের চিকিৎসা কেন্দ্র হিসেবে প্রায় ৫২ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত গাইবান্ধার ‘বক্ষব্যাধি ক্লিনিক’ এখন মৃতপ্রায় অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতাল চত্বরে। কার্যত রোগ শনাক্তর করে চিকিৎসার জন্য ব্র্যাক নামের এনজিওর কাছে পাঠানোই তাদের কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রোগীদের কোনো চিকিৎসা এখানে হয় না। ফলে দিনে দিনে রোগীরাও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন এই ক্লিনিক থেকে। ফলে সেখানে ডাক্তার, কর্মচারী সবাই অলস সময় কাটাচ্ছেন। ১৭ বছর ধরে এক্সরে মেশিনটিও নষ্ট হয়ে পড়ে আছে এই ক্লিনিকে। বক্ষব্যাধি ক্লিনিক সূত্রে জানা গেছে, এখানে জুনিয়র কনসালটেন্ট এবং মেডিকেল অফিসার পদে দুজন চিকিৎসকের থাকার কথা থাকলেও ২০১৬ সাল থেকে জুনিয়র কনসালটেন্ট পদটি শূন্য। এ ছাড়া দুজন গৃহ পরিদর্শিকার পদও দীর্ঘদিন থেকে ফাঁকা পড়ে আছে। এর পাশাপাশি সহকারি নার্স, ড্রাইভারসহ ছয়টি পদ ফাঁকা আছে লম্বা সময় ধরে। বক্ষব্যাধি ক্লিনিকের অফিস সহকারী সাইফুল ইসলাম জানান, এই ক্লিনিকে এখন রোগীর তেমন উপস্থিতি নেই। গড়ে প্রতি মাসে ৬০ জন রোগ শনাক্ত করতে আসেন। তার মধ্যে ১৫ জনের যক্ষ্মা ধরা পড়ে। একসময় রোগীদের ওষুধ এখান থেকে দেওয়া হলেও বর্তমানে তা বন্ধ আছে। যক্ষ্মা রোগ শনাক্ত এবং রোগীদের ওষুধ বাড়ি বড়ি গিয়ে খাওয়ানোর কাজ ব্র্যাক নামের এনজিও ভালোভাবে করছে বলে রোগীরা সেখানেই বেশি ভিড় করে বলে তাদের ধারণা। গাইবান্ধা সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম গোলাপ বলেন, যদিও এটি কাগজপত্রে ‘বক্ষব্যাধি ক্লিনিক’ কিন্তু ভবনের গায়ে লেখা আছে ‘যক্ষ্মা রোগ চিকিৎসাগার’। অথচ যক্ষ্মার কোনো চিকিৎসাই এখানে করা হয় না।
কফ পরীক্ষা করে যক্ষ্মা শনাক্ত করা সম্ভব না হলে এক্সরে করানোর প্রয়োজন হয়ে পড়ে কিন্তু ২০০৩ সাল থেকে এক্সরে মেশিনটি নষ্ট হয়ে পড়ে আছে এখানে। ক্লিনিকের জুনিয়র কনসালটেন্ট পদের দায়িত্বে থাকা মেডিকেল অফিসার ডা. নাজমুল হুদা বলেন, আমরা রোগ শনাক্ত করে রোগীদের ওষুধ খাওয়ানোর দায়িত্ব ইত্যাদির জন্য ব্র্যাকের কাছে পাঠানোর সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করে থাকি। সরকার থেকেই এ রকম ব্যবস্থা করা হয়েছে।