শনিবার, ২৬ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

এশিয়ার বৃহত্তম গাছে ঝুলছে আম

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

এশিয়ার বৃহত্তম গাছে ঝুলছে আম

এশিয়ার বৃহত্তম আম গাছ ও ঠাকুরগাঁও জেলায় এবারও আমের বাম্পার ফলন হয়েছে। আবহাওয়া এখনো পর্যন্ত অনুকূলে থাকার ফলে আমের গুণগত মান ভালো রয়েছে। এলাকার বিস্তীর্ণ মাঠের আম বাগানগুলোতে শোভা পাচ্ছে নানান জাতের আম। যদি  কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হয় তাহলে ভালো ফলন পাওয়া যাবে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠানো হবে ঠাকুরগাঁও জেলার সূর্যাপুরী আমসহ অন্য প্রজাতির আম। স্থানীয় আমবাগান চাষিরা এমনটাই আশা করছেন।  অপরদিকে জেলা কৃষি অফিস আশা করছে কৃষিপ্রধান জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে গত বছরের তুলনায় এ বছর আমের আবাদ বেড়েছে। এবার যে ফলন হয়েছে তাতে তাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়ে আরও বেশি ফলন পাবেন তারা। জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ঠাকুরগাঁও জেলায় ৫ হাজার ৪৪০ হেক্টর জমিতে সূর্যাপুরী, আ¤্রপালি, হাঁড়িভাঙ্গা, গোপালভোগ, ল্যাংড়া, হিমসাগর, আশ্বিনা, বাড়ি-৪সহ বিভিন্ন প্রজাতির আমের বাগান রয়েছে।

এর মধ্যে সূর্যাপুরী ও আ¤্রপালি আমের বাগান বেশি। এবার ৭৫ হাজার মেট্রিকটন আমের ফলন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলার বালিয়াডাঙ্গি উপজেলার হরিণমারী গ্রামে অবস্থিত এশিয়ার সবচেয়ে বৃহৎ ঐতিহ্যবাহী সূর্যাপুরী আম গাছ। ওই গাছের মালিক নূর ইসলাম জানান, তিনটি মৌসুমের জন্য তাঁর সূর্যাপুরী আম গাছটির আমগুলো বিক্রি করেছেন তিন লাখ টাকায়। সদর উপজেলার মোহাম্মদপুর এলাকার আম বাগান মালিক জামাল উদ্দিন বলেন। আষাঢ় মাসের মাঝামাঝিতে এ জাতের আম পাকা শুরু হবে। আমের  শেষ সিজন পর্যন্ত এ গাছের আম থাকে। ১২টি আমগাছে প্রায় ২০ মণ আমের আশা করছেন তিনি।  সদর গিলাবাড়ি এলাকায় ২ একর জমিতে আ¤্রপালি আমবাগান করেছেন শাহজান ই হাবিব। তিনি বলেন, গত বছর বৃষ্টির জন্য আমের ফলন ও দাম পাইনি। চলতি বছর ফলন ভালো হয়েছে। বাগানে প্রায় ৩৫০ মণ আম হবে। যার প্রতি মণ আমের দাম মৌসুমের শুরু থেকেই দুই হাজার পাঁচশত টাকা থেকে তিন হাজার টাকা বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে। আম ব্যবসায়ীরা জানান, স্থানীয় বাজারে সূর্যাপূরী আম ৫০-১০০ টাকা কেজি, আম্রপালি ৭০-১০০ টাকা কেজি, হাঁড়িভাটা ৮০-১৫০ টাকা, ল্যাংড়া ১০০-২০০ টাকা, হিমসাগর ৮০-১৫০ টাকা, আশ্বিনা ৫০-১৫০ টাকা এবং বাড়ি-৪ আম ১০০-২৫০ টাকা কেজি দরে প্রতি বছর বিক্রি হয়। তবে গতবারের তুলনায় এবার আমের বাজারজাতকরণ সুবিধা ভালো আছে। আমের দাম আরও বাড়তে পারে।  অন্যদিকে এশিয়ার বৃহত্তম আম গাছটির আম আগাম কেনার জন্য অনেকেই ২০০ টাকা কেজি দরে গাছের মালিককে দিয়ে রেখেছেন। এই আম গাছটি প্রায় ২০০ বছর পুরনো। প্রায় ১ বিঘা জমি জুড়ে রয়েছে এই আম গাছ। ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কৃষিবিদ আবু হোসেন বলেন, আমের মুকুল আসার পরে মাঝে কয়েকদিন খরা গিয়েছিল। তখন আমরা মনে করেছিলাম ফলন কম হবে। সেই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য আমরা কৃষককে পরামর্শ দিয়েছিলাম। এখন বর্তমান যে অবস্থায় রয়েছে তাতে আমরা আশা করছি আমাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েও আমরা বেশি ফলন পাব। ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ড. কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, বাজারে  ভোক্তারা যেন বিষমুক্ত আম খেতে পারে এ জন্য আমরা আমচাষি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে একাধিকবার মতবিনিময় করেছি। এ ছাড়াও প্রশাসন সবসময় বাজার মনিটরিং করতেছে যেন ফরমালিন যুক্ত আম বিক্রয় বা বাজারজাত করা না হয়।

সর্বশেষ খবর