শনিবার, ২৬ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

কাজ না করে টিআর-কাবিটা প্রকল্পের বিল উত্তোলন

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

কাজ না করে টিআর-কাবিটা প্রকল্পের বিল উত্তোলন

লালমনিরহাটে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ (কাবিটা) ও গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ না করেই বিল উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে। চলতি জুন মাসে অর্থবছর ক্লোজের টার্গেট নিয়ে মাঠ পর্যায়ে খোঁজ না নিয়েই প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) অফিসে দেওয়া হচ্ছে কাজ না করা এসব প্রকল্পের চেক।  সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিটা) নির্বাচনী এলাকাভিত্তিক তৃতীয় পর্যায় কর্মসূচির আওতায় উন্নয়ন প্রকল্পে সদর উপজেলার মোঘলহাট ইউনিয়ন ‘নিজাম মুন্সির বাড়ি হতে সুজালের বাড়ির পশ্চিমে তেপতি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারের’ জন্য ৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু এ প্রকল্পের সভাপতি মোঘলহাট ইউনিয়নের আয়নাল হক। তিনি শুধু রাস্তার উঁচু-নিচু সমান করে প্রথম দফার বিল উত্তোলন করে নিয়ে কাজ আর করেননি। এখন বাকি কাজ না করে পুরো টাকা উত্তোলন করতে ভুয়া কাগজপত্র নিয়ে পিআইও অফিসে ঘুরছেন। সদর উপজেলার কুলাঘাটের মোসলেম উদ্দিন নিজ এলাকার ‘তিন কানিয়া মাঠ হতে আবদুর মহুরির বাড়ি হয়ে সিদ্দিকুরের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার’ প্রকল্পে ৩ লাখ ৭ হাজার ২৮৪ টাকা বরাদ্দ পেয়েছেন। তিনি নিজেই প্রকল্পের সভাপতি। তিনি নিজেও পুরো কাজ না করেই পুরো বিল উত্তোলনে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এদিকে সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ প্রকল্পে ইউনিয়নের ‘খোলাহাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাট’ কাজের জন্য ১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জুলফিকার আলী বুলু নিজেই প্রকল্পের সভাপতি। তিনি মাটি ভরাট না করেই পুরো বিল উত্তোলন করতে (পিআইও) অফিসে ঘুরছেন।

সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের ‘হারাটি ডিএসআই দাখিল মাদরাসা সংস্কার’ ১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।

 প্রকল্পের সভাপতি ও ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক আবদুর সালাম সরকার মঞ্জু কাজ না করেই বিল উত্তোলনে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও লালমনিরহাট সদর-৩ আসনের এমপি জি এম কাদেরের নির্বাচনী এলাকা হওয়ায় পার্টির নেতা-কর্মীরা টিআর-কাবিটা প্রকল্পের কোনো কাজ ঠিকমতো করছেন না। ক্ষমতা দেখিয়ে একের পর এক বরাদ্দ নিয়ে এসে নেতা-কর্মীরাই লুটপাট করে খাচ্ছেন। যে পরিমাণ বরাদ্দ তার অর্ধেক টাকা দিয়েও যদি কাজ করা হতো তাতে কিছুটা হলেও রাস্তাগুলো ভালো থাকত। কিন্তু তারা শুধু রাস্তার গর্তগুলো ভরাট আর রাস্তার উঁচু-নিচু সমান করেই পুরো বিল উত্তোলন করছেন। জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা কাজ না করেই অফিসে পার্টির ক্ষমতা দেখিয়ে এসব বিল উত্তোলন করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। সদর উপজেলার মোঘলহাট ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক আয়নাল হক জানান, তিনি কোনো প্রকল্পের কাজ করছেন না। তার নাম দিয়ে অন্য কেউ কাজ করতে পারে। তবে, প্রকল্পের সভাপতি হিসেবে আপনার নামে স্বাক্ষর রয়েছে, স্বাক্ষরটি কার? এমন প্রশ্ন করলে আয়নাল হক কোনো সঠিক উত্তর দিতে পারেননি। লালমনিরহাট সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মশিয়ার রহমান বলেন, কাজ না করে কেউ পুরো বিল উত্তোলন করতে পারবেন না। সরেজমিন কাজ পরিদর্শন করে তারপরই বিল উত্তোলন করার অনুমতি দেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর