ঝিনাইদহের শৈলকুপায় ক্লিনিকে চিকিৎসকের অবহেলায় বিউটি খাতুন (২৪) নামে এক প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সকালে শৈলকুপা প্রাইভেট হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। নিহত প্রসূতি শৈলকুপা পৌর এলাকার ঋষিপাড়ার দিনমজুর রিপনের স্ত্রী। রোগীর স্বজনরা জানান, প্রসূতি বিউটি খাতুনের শনিবার ভোরে প্রসব বেদনা উঠলে তাকে শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। এ সময় হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে থেকে এক মহিলা দালাল তাদের ভুল বুঝিয়ে হাসপতালের প্রধান ফটকে অবস্থিত শৈলকুপা প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে ভর্তি করা হয়। অসুস্থ বিউটির প্রচ ব্যথা ওঠে। কিন্তু ডাক্তার আসতে দেরি হওয়ায় নার্সরা তাকে স্যালাইন দিয়ে রাখে এবং কিছুক্ষণ পর ইনজেকশন পুশ করে। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই বিউটি অসহ্য যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে মারা যান। এর আগে শুক্রবার আলট্রাসনো রিপোর্টে তার পেটে সুস্থ স্বাভাবিক ছেলে সন্তান ছিল বলে বিউটির পরিবার জানতে পারে। নিহতের স্বজনদের দাবি ক্লিনিকের চিকিৎসকের অবহেলায় এমন মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে ক্লিনিকের ছয় মালিক ও ম্যানেজারসহ সবাই গা ঢাকা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে নিহতের স্বজনদের মোটা অংকের টাকা দিয়ে ও ভয়ভীতি দেখিয়ে থানায় মামলা করতে দেয়নি ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। এমন খবরে এলাকাবাসী ফুঁসে উঠলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ক্লিনিকটিতে পুলিশ মোতায়েন করে রাখা হয়েছে। এ ব্যাপারে শৈলকুপা থানার ওসি মহসীন আলী জানান, রোগীর পরিবার থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ করা হয়নি।
অন্যদিকে যৌথ মালিকানায় গড়ে ওঠা একাধিক ক্লিনিক মালিকের সঙ্গে মোবাইলে বহুবার ফোন করলেও কেউ রিসিভ করেনি। তাই পরিস্থিতি শান্ত রাখতে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রাশেদ আল মামুন জানান, স্থানীয় একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট থাকায় দালাল দৌরাত্ম্য রোধ করা দিন দিন কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে হাসপাতাল চত্বর থেকে কোনো রোগীকে ভুলভাল বুঝিয়ে কেউ নিয়ে গেলে তাদের কিছু করার থাকে না। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে অবশ্যই তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।