রবিবার, ২৭ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

ভাঙন আতঙ্কে ২০ গ্রামের মানুষ

আতঙ্কে দুই উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ। সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরকে প্রকল্প গ্রহণের অনুরোধ

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি

ভাঙন আতঙ্কে ২০ গ্রামের মানুষ

প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুম এলে হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার নদী পারের মানুষদের মধ্যে ভাঙন আতঙ্ক শুরু হয়। এবারও বর্ষা মৌসুম শুরুর পরপরই নদী পারের মানুষদের মধ্যে বিরাজ করে একই আতঙ্ক। এবার ভাঙন আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে সৌলরী, বদলপুর, মনিপুর, নজরাকান্দা, কাদিপুর, কন্যাজুড়ী, জয়নগর, শাহ নগর গ্রামসহ আশপাশের বেশ কিছু এলাকা। স্থানীয়দের অভিযোগ, বছরের পর বছর ধরে চলা এ ভাঙন রোধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপই নিচ্ছে না জেলা প্রশাসনসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্তাব্যক্তিরা। আজমিরীগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া কালনী কুশিয়ারা যা ভাটিতে মেঘনা। নদীর এপারে হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জ উপজেলা হলেও ওপারে কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা উপজেলা। বর্ষা মৌসুম এলেই নদীর দু’পাড়ে শুরু হয় ভাঙন আতঙ্ক। প্রতিনিয়ত ভাঙনের ফলে অনেক বাসিন্দাই সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছেন। অনেকে আবার বাড়ি ঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। ফলে এবারও নদীর দু’পাশে ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে অন্তত ২০টি গ্রাম। কালনী কুশিয়ারা নদীর ভাঙন প্রতিদিনই বেড়ে চলেছে। ইতিমধ্যে গত কয়েক বছরে দুই শতাধিক বাড়ি ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আরও ১৫/২০টি ছোট বড় গ্রাম ভাঙনের মুখে রয়েছে। ভাঙনের শিকার হয়ে বিপাকে পড়েছেন অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল হওয়া নদী পারের মানুষগুলো। মির্জাপুর গ্রামের আবুল ফয়েজ মিয়া জানান, গত ৩ বছর পূর্বেও আমাদের গ্রাম আরও প্রায় ৩০০ ফুট সামনে ছিল। কিন্তু নদী ভাঙনে আমাদের শেষ সম্বল মাথা গোঁজার ভিটেমাটিও নিয়ে গেছে। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই আমাদের স্থায়ীভাবে একটি বেড়িবাঁধ করে দেওয়ার জন্য। সৌলরী গ্রামের মিলন মিয়া জানান, গত কয়েক বছর ধরে কর্তাব্যক্তিরা শুধু মাপজোকই করে যাচ্ছেন কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। এ বছরও যদি দ্রুত সময়ের মধ্যে স্থায়ী পদক্ষেপ নেওয়া না হয় তাহলে হয়তো আর গ্রামের যেটুকু অংশ রয়েছে তাও আর থাকবে না।  হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকোশলী মো. শাহনেওয়াজ তালুকদার বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে ভাঙন এলাকা দেখে এসেছি। অস্থায়ী পদক্ষেপ হিসেবে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে আপাতত নদী ভাঙনের কবল থেকে গ্রামগুলো রক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। পরবর্তীতে বিবিয়ানা প্রকল্পের মাধ্যমে অনুমোদিত হলে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান বলেন, ভাঙন কবলিত আজমিরীগঞ্জ উপজেলার সৌলরী, বদলপুরসহ কয়েকটি গ্রাম পরিদর্শন করেছি। এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ভাঙন আতঙ্কে দুই উপজেলার কয়েক লাখ বাসিন্দা। সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরকে প্রকল্প গ্রহণের অনুরোধ করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর