মঙ্গলবার, ২৯ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

বেহাল সড়কের জনপদ সোনারগাঁ

সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি

বেহাল সড়কের জনপদ সোনারগাঁ

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলা জুড়েই বেহাল সড়কের ছড়াছড়ি। এ উপজেলার মোগরাপাড়া থেকে শম্ভুপুরা ইউনিয়নের ৭ কিলোমিটার সড়কটি সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ফলে দুর্ভোগের শেষ থাকে না। অপরদিকে নোয়াগাঁও ইউনিয়নের ধন্দীর বাজার থেকে পরমেশ্বরদী মাদরাসা পর্যন্ত সড়কটির অবস্থাও বেহাল। দীর্ঘ দিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দের সড়কে পরিণত হয়েছে। কার্পেটিং (পিচ) উঠে গিয়ে বর্তমানে সড়কগুলো চলাচলের অনুপযোগী। এতে করে ভোগান্তিতে পড়ছেন উপজেলার দুটি ইউনিয়নের দেড় লাখ বাসিন্দা। জানা গেছে, উপজেলার মোগরাপাড়া থেকে শম্ভুপুরা ইউনিয়ন পর্যন্ত সড়কে সামান্য বৃষ্টি হলেই সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতার। অনেক জায়গায় সড়কের দুই ধারের মাটি সরে গিয়ে ভেঙে পড়েছে। এতে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ভ্যানগাড়ি ও মোটরসাইকেল আরোহীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ সড়ক দিয়ে স্কুল-কলেজ ও হাসপাতালসহ ১৫টি প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করতে হয়। অপরদিকে, উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের ধন্দীর বাজার থেকে মুন্সীপুর, গরিবরদী, বানেশ্বরদী, নোয়াগাঁও, পেকেরচর, বিষনাদীকান্দাপাড়া, লক্ষ্মীবরদী, ভিটিপরমেশ্বরদিসহ আরও কয়েকটি এলাকার অভ্যন্তরীণ সড়কের অবস্থাও বেহাল। এ ছাড়া বিভিন্ন শিল্পকারখানার কর্মরত ও ব্যবসায়ীসহ হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করেন এসব সড়কে। বেহাল সড়ক দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন তারা। জানা গেছে, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নের আরটিআইটি প্রকল্পে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) দরপত্র আহ্বানের পর ২০১৯ সালে এই দুটি সড়কের কাজ পায় একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ব্যয় ধরা হয় সাড়ে ১৫ কোটি টাকা। পরে তারা তালতলা থেকে নয়াগাঁও ইউনিয়নের পরমেশ্বরদী পর্যন্ত কাজ শেষ করলেও মোগরাপাড়া থেকে শম্ভুপুরা পর্যন্ত কাজে অবহেলা করছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি সড়ক সংস্কারের নামে খোঁড়াখুঁড়ি করে ফেলে রাখে। দুর্গাপ্রসাদ গ্রামের মহসিন কবির বলেন, এ সড়কটি মানুষের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বটতলাবাজার থেকে হোসেনপুর সড়কটি সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি জমে বেহাল দশায় পরিণত হয়। কয়েক বছর আগে সংস্কার করা হলেও বৃষ্টির কারণে কয়েক বছরে সড়ক ভেঙে খানাখন্দ ও বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। দুর্গাপ্রসাদ গ্রামের খালেক বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে। খোঁড়াখুঁড়ির কারণে সড়কটি পুরোপুরি চলাচল অনুপযোগী হয়ে মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। নোয়াগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইউসুফ দেওয়ান বলেন, সড়কের অনেক জায়গায় পিচপাথর উঠে গর্ত হয়ে আছে। এর মধ্যে একটু বৃষ্টি এলে সব ডুবে যায়। মানুষ শান্তি মতো চলাচল তো দূরের কথা, বাজারঘাটও ঠিকভাবে করতে পারে না। সোনারগাঁ উপজেলা প্রকৌশলী আজহারুল হক বলেন, কার্যাদেশে ২০২২ সালের মধ্যভাগে এ সড়কের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। ইতিমধ্যে এক বছর অতিবাহিত হয়েছে। ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাত্র ৭ শতাংশ কাজ শেষ করেছে। কাজের ধীরগতির কারণে মানুষের দুর্ভোগ বেড়ে গেছে। এ কারণে এ প্রতিষ্ঠানকে বাদ দিয়ে নতুন করে ইজারার জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলা এলজিইডি অফিসকে কয়েকটি চিঠি দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর