যমুনার পানি বাড়ায় ও ভারি বর্ষণে সিরাজগঞ্জ শহররক্ষা বাঁধের জেলখানা ঘাট এলাকার প্রায় ১০০ মিটার ধসে গেছে। ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) গতকালই বালুভর্তি জিও ব্যাগ ও ব্লক ফেলা শুরু করেছে। স্থানীয়রা জানান, গতকাল দুপুর ২টার দিকে প্রথমে ধসের স্থানে বুদবুদ শুরু হয়। পরে ব্লকগুলো পানিতে দেবে যেতে শুরু করে। মাত্র এক ঘণ্টার ব্যবধানে ১০০ মিটার এলাকার সিসি ব্লক ধসে যায়। এতে শহরবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। শত শত মানুষ ভাঙন এলাকায় ভিড় করে। পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, অতিবৃষ্টি ও পানি বাড়ায় যমুনার তলদেশে ঘূর্ণাবর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে মাটি ও জিও ব্যাগ সরে দেখা দিয়েছে ধস। নিয়মিত সার্ভে করা হতো। কিন্তু ঘটনার দিন সকাল পর্যন্ত কোনো সমস্যা ধরা পড়েনি। তিনি শহরবাসীকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দেন। এদিকে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় ব্রহ্মপুত্র-যমুনা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটি সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। বাঁধের ওপর অবৈধ জনবসতি ও দোকানপাট তৈরির কারণে ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে বাঁধটি। সাঘাটা ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন সুইট বলেন, বাঁধে বসবাসরতদের স্থায়ী আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে বাঁধটি সংস্কার করা জরুরি। গাইবান্ধা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান বলেন, বাঁধটি সংস্কারের জন্য সম্প্রতি একটি প্রকল্প পাস হয়েছে। সংস্কারকাজ শুরু হলে বাঁধের ওপর ঘরবাড়ি ও জনবসতি সরিয়ে ফেলা হবে। জানা যায়, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনার ডান তীর রক্ষার জন্য পাউবো ১৯৬৮ সালে বাঁধটি তৈরি করে। প্রথম দিকে পাউবো বাঁধটি রক্ষণাবেক্ষণ করলেও আশির দশকের পর থেকে রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কার কাজ করেনি। এ সময় বাঁধ কেটে ঘরবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ করায় বাঁধটি সরু হয়ে যায়। কোথাও দুই পাশের ঢালু কেটে সমতল করে তৈরি হয়েছে ঘর। কোথাও বাঁধের মাটি কেটে নিয়ে নিজেদের ঘরের স্থান উঁচু করেছে এলাকাবসাী। ঘরের পাশে খরের স্তুপ রাখায় বাঁধটিতে ইঁদুরের অসংখ্য গর্ত তৈরি হয়েছে। এতে দুর্বল হয়ে গেছে বাঁধটি। বন্যায় এসব গর্ত দিয়ে পানি চুইয়ে বাঁধের বিভিন্ন পয়েন্টে ধসের শঙ্কা রয়েছে।