শিরোনাম
শনিবার, ৩ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

স্মার্ট প্রি-পেইড মিটারে গ্রাহকের ভোগান্তি

আবদুস সামাদ সায়েম, সিরাজগঞ্জ

স্মার্ট প্রি-পেইড মিটারে গ্রাহকের ভোগান্তি

সিরাজগঞ্জে নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন গ্রাহকরা। গ্রাহকরা বলছেন, স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার প্রতিস্থাপনের পর থেকে দুই থেকে চার গুণ টাকা বেশি গুনতে হচ্ছে। এ ছাড়াও আগের মিটারগুলো খুলে নেওয়ার পর নতুন স্মার্ট মিটার দেওয়ার পর প্রতি রিচার্জে মিটার ভাড়া বাবদ টাকা কেটে নেওয়া হচ্ছে। এমনকি বিদ্যুৎ ব্যবহার না করলেও মিটার থেকে টাকা উধাও হয়ে যাচ্ছে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছেন গ্রাহকরা। জানা যায়, ২০১৬ সাল থেকে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড থেকে সব সম্পদ ও দায়িত্ব গ্রহণ করে নর্দান ইলেকট্রিসিটি কোম্পানি (নেসকো) সিরাজগঞ্জে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ বিতরণ শুরু করে। শুরুতে অ্যানালগ ও প্রি-পেইড মিটারের মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছ থেকে বিল উত্তোলন করছিল। কিন্তু সম্প্রতি অ্যানালগ ও প্রি-পেইড মেটার বদলিয়ে স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার প্রতিস্থাপন শুরু করেন। নেসকোর আওতায় সিরাজগঞ্জ শহরে ৬০ হাজার গ্রাহক রয়েছেন। এর মধ্যে প্রায় ৫৫ হাজার গ্রাহকের স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। স্মার্ট প্রি-পেইড মিটারে মোবাইলের মাধ্যমে রিচার্জ করে বিদ্যুৎ কিনতে হয়। কিন্তু  মিটারটি স্থাপনের পর থেকেই গ্রাহকদের ভোগান্তি শুরু হয়েছে। আগের চেয়ে দুই থেকে চার গুণ টাকা বেশি লাগছে। এমনকি মিটার প্রতিস্থাপনের সময় আগের মিটারে বিল বাকি আছে দাবি করে লাখ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করে নিচ্ছে। অনেক গ্রাহকের আগের মিটারে ইউনিট থাকলেও তা ফেরত দেওয়া হচ্ছে না। এসব ভোগান্তি থেকে রেহাই পেতে নেসকো অফিসে গেলে কর্মকর্তারা সমাধান না করে উল্টো গ্রাহকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এ অবস্থায় ক্ষুব্ধ হয়ে গ্রাহকরা সমিতি গঠন করে গণশুনানিসহ জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন। শহরের বিদ্যুৎ গ্রাহক আশিক আহমেদ জানান, স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের পর নানা বিপত্তি শুরু হয়েছে। দেখা যায়, বাড়িতে বিদ্যুৎ বন্ধ থাকলেও টাকা কেটে নেওয়া হচ্ছে। রিচার্জ করলে মিটারে ইউনিটের বদলে টাকা দেখানো হচ্ছে। ফলে কত টাকা ইউনিট কাটছে তা কেউ বুঝতে পারছে না। এ ছাড়াও নিজের টাকার মিটার নিয়ে স্মার্ট মিটার দিয়ে প্রতি রিচার্জে মিটারের দাম ও ডিমান্ড চার্জের নামে টাকা কেটে নেওয়া হচ্ছে। আরেক গ্রাহক আবু সাঈদ জানান, আগে ১ হাজার টাকার বিদ্যুৎ ক্রয় করলে পুরো মাস অনায়াসে বিদ্যুৎ ব্যবহার করা যেত। কিন্তু স্মার্ট মিটার প্রতিস্থাপনের পর থেকে একই বিদ্যুৎ ব্যবহার করলেও আগের থেকে প্রায় দুই থেকে চার গুণ টাকা লাগছে।  ধানবান্ধি মহল্লার বিদ্যুৎ গ্রাহক আবদুস সাত্তার জানান, প্রতি মাসে বিল পরিশোধ করলেও মিটার পরিবর্তনের সময় বকেয়া আছে বলে নেসকোর লোকজন ১০ হাজার টাকা দাবি করেন। দাবিকৃত টাকা না দেওয়ার কারণে আমাকে ৬৫ হাজার টাকার বকেয়া বিল করে দিয়েছেন। এখন আমি দিশাহারা হয়ে পড়েছি। সিরাজগঞ্জ বিদ্যুৎ গ্রাহক সমিতির সদস্যসচিব ও সিরাজগঞ্জ স্বার্থরক্ষা সংগ্রাম কমিটির নবকুমার কর্মকার জানান, আগে একজন গ্রাহক ৪০০ টাকায় এক মাস বিদ্যুৎ ব্যবহার করতেন। সেই গ্রাহকই এখন একই বিদ্যুৎ ব্যবহার করলেও প্রতি মাসে ১ হাজার ৫০০ টাকা লাগছে। ডিমান্ড চার্জের নামে প্রতি রিচার্জে টাকা কেটে নেওয়া হচ্ছে। এটা গ্রাহকদের ওপর অন্যায়ভাবে জুলুম করা হচ্ছে। অভিযোগের বিষয়ে নেসকোতে গেলে গ্রাহকদের সঙ্গে কর্মকর্তারা দুর্ব্যবহারে করছেন।

সর্বশেষ খবর