রবিবার, ৪ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

করোনায় নিম্নবিত্তের নাভিশ্বাস

বান্দরবান প্রতিনিধি

করোনা পরিস্থিতিতে খোলাবাজারে চাল বিক্রি (ওএমএস) বন্ধ হয়ে যাওয়া কর্মহীন নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দেখা দিয়েছে। দুই মাস ধরে ডিলারের মাধ্যমে বান্দরবান পৌরসভার নয়টি ওয়ার্ডে প্রতি মাসে ২৩৫ মেট্রিক টন চাল ও ২৩৫ মেট্রিক টন আটা খোলাবাজারে বিক্রি করা হচ্ছিল। কিন্তু অর্থবছর শেষ হওয়ায় ৩০ জুনের পর ওএমএস বন্ধ করে দেয় খাদ্য বিভাগ। তাই ১ জুলাই থেকে ন্যায্যমূল্যে চাল কিনতে না পেরে বিপাকে পড়েছে সাধারণ মানুষ। তিন দিন ধরে চাল কিনতে এসে খালি হাতে ফিরে যাচ্ছেন তারা। এদিকে অনতিবিলম্বে ওএমএস শুরুর জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী শুধু জেলা সদরের পৌর এলাকায় এএমএস শুরু করা গেলেও জনবহুল লামা পৌরসভা এবং অন্য সাত উপজেলার ৪ লক্ষাধিক মানুষ কম মূল্যে চাল, আটা কেনার সুযোগ থেকে বঞ্চিত রয়ে যায়। জেলা খাদ্য বিভাগ জানিয়েছে, দরিদ্র এলাকা হিসেবে জেলার সব উপজেলায় ন্যায্যমূল্যে খাদ্যশস্য কেনার ব্যাপক চাহিদা থাকা সত্ত্বেও সরকারি নির্দেশনার বাধ্যবাধকতায় অন্য কোথাও ওএমএস চালু করা যায়নি। খাদ্য কর্মকর্তারা বলেছেন, খুব শিগগিরই আবারও এএমএস কর্মসূচি আসতে পারে। তবে ঠিক কবে নাগাদ চালু হতে পারে তা জানাতে পারেননি তারা।

জেলা খাদ্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি বিমল দাশ জানান, দুই মাস ধরে চলমান ওএমএস কর্মসূচির আওতায় বান্দরবান পৌরসভার প্রতি ওয়ার্ডে একজন করে মোট নয়জন।

ডিলারের অনুকূলে প্রতিদিন ১ টন চাল ও ১ টন আটা ছাড় করা হয়। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বরাদ্দ চাল, আটা থেকে জাতীয় পরিচয়পত্রের ভিত্তিতে একজন ক্রেতাকে সর্বোচ্চ ৫ কেজি চাল ও ৫ কেজি আটা দেওয়া যায়। এ নিয়ম অনুযায়ী প্রতিদিন সর্বোচ্চ ২০০ জনের বেশি লোককে ন্যায্যমূল্যে চাল, আটা দেওয়া সম্ভব হয় না। তিনি জানান, প্রতিদিন সকালে ওএমএসের দোকান খোলামাত্র ৩০০-৪০০ লোক লাইনে দাঁড়িয়ে যান। এতে যারা চাল, আটা পান না তারা ডিলারের ওপর চড়াও হন। বিমল দাশ জানান, দরিদ্র এলাকা হিসেবে নতুন ওএমএস কর্মসূচি চালুর ক্ষেত্রে ডিলারপ্রতি চাল, আটার বরাদ্দ দ্বিগুণ করা দরকার। এদিকে লামা পৌর এলাকার জনপ্রতিনিধিরা দরিদ্র জনগণকে বাঁচাতে খুব শিগগিরই এ পৌরসভায় দীর্ঘমেয়াদি ওএমএস কর্মসূচি চালুর দাবি জানিয়েছেন। ক্যাবের বান্দরবান জেলা সভাপতি মনিরুল ইসলাম মনু নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের কষ্ট লাঘবে অবিলম্বে জেলার সব এলাকায় ওএমএস পদ্ধতি চালুর জন্য সরকারের প্রতি আহ্‌বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বাজারে প্রতি কেজি চাল ৫০-৫৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বর্তমান মহামারীকালে কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষের পক্ষে এত উচ্চমূল্যে চাল কেনা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। এ অবস্থায় সরকারের তরফে ন্যায্যমূল্যে খাদ্যশস্য বিক্রি ছাড়া কোনো উপায় নেই।

সর্বশেষ খবর