বৃহস্পতিবার, ১৫ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

বগুড়ায় করোনা রোগীর শয্যা সংকট

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

বগুড়ায় করোনা রোগীর শয্যা সংকট

বগুড়ার সরকারি দুই হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ১০০ জন করোনা রোগী ভর্তি হতে আসছেন। শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের ২৫০ শয্যার করোনা ইউনিটে তিল ধারণের জায়গা নেই। এখানে অনেকে মেঝেতে অবস্থান করছেন। আর মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে কোনো রোগী সুস্থ হলে কিংবা কেউ মারা না গেলে (সিট খালি) নতুন ভর্তি নেওয়ার সুযোগ নেই। মোহাম্মদ আলী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, বিশেষ বিবেচনা ছাড়া হাসপাতালে গতকাল থেকে নতুন রোগী ভর্তি নেওয়া হচ্ছে না। তবে এখনো করোনা রোগী ভর্তি নেওয়া হচ্ছে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য মতে, বর্তমানে বগুড়ায় করোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১ হাজার ৯২৭ জন। এদের মধ্যে শজিমেক হাসপাতালে ২৩৯ জন, মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ২৮৪ জন ও টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছেন ৯৩ জন। বাকি এক হাজার ৩১১ জন রোগী বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, দেশে করোনা শুরুর পর বগুড়ার ২৫০ শয্যার মোহাম্মদ আলী হাসপাতালকে করোনা রোগীদের বিশেষায়িত হাসপাতাল করা হয়। এখানে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন ব্যবস্থা চালু রয়েছে। হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা রয়েছে ২০টি। আছে আটটি আইসিইউ বেড। একইভাবে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ-শজিমেক হাসপাতালে উচ্চমাত্রার অক্সিজেন সরবরাহের সুবিধাযুক্ত ২৫০ শয্যার করোনা ইউনিট চালু করা হয়েছে। এখানে হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা রয়েছে ২৫টি। এ ছাড়া বেসরকারি হাসপাতাল টিএমএসএস মেডিকেল কলেজে ২০০ আসন থাকলেও সেন্ট্রাল অক্সিজেন না থাকায় সেখানে রোগী ১০৫ জনের বেশি ভর্তি করা হচ্ছে না। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা বাড়িয়েও সংকট মেটানো যাচ্ছে না। এত রোগীকে তিন হাসপাতালে ভর্তি করানো সম্ভব নয়। এ কারণে যেসব রোগীর অক্সিজেন স্যাচুরেশন ভালো তাদের কাউন্সেলিং করে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কেবল আশঙ্কাজনক রোগী ভর্তি করা হচ্ছে হাসপাতালে। মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, বারান্দায়ও অনেক রোগীকে অক্সিজেন সিলিন্ডার দিয়ে রাখা হয়েছে। রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন ডাক্তার-নার্সরা। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এ টি এম নুরুজ্জামান সঞ্চয় বলেন, মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে প্রায় ২৮৪ রোগী ভর্তি আছেন। শজিমেকে সিট খালি রয়েছে। এ কারণে আমরা শজিমেকে রোগী পাঠিয়ে দিচ্ছি। শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপরিচালক ডা. আবদুল ওয়াদুদ বলেন, এখানে ২৫০ সিটের বিপরীতে ২৩৯ জন ভর্তি রয়েছেন। প্রতিদিন অনেক রোগী আশঙ্কাজনক অবস্থায় এখানে ভর্তি হতে আসছেন। জেলার একমাত্র করোনা চিকিৎসার বেসরকারি হাসপাতাল টিএমএসএসের চিত্র সরকারি দুটির মতোই। এখানে চিকিৎসা ব্যয়বহুল। এ কারণে সাধারণ মানুষ কম আসছেন। সম্প্রতি সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সেখানেও রোগীর চাপ বেড়েছে। হাসপাতালটির মুখপাত্র ডা. আবদুর রহিম বলেন, আমাদের সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন নেই। সিলিন্ডারের মাধ্যমে রোগীকে অক্সিজেন দেওয়া হয়। ২০০ সিট থাকলেও অক্সিজেন স্বল্পতার জন্য বেশি রোগী ভর্তি করতে পারছি না।

সর্বশেষ খবর