সোমবার, ২৬ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

করোনা হুমকিতে বেনাপোল

ভারতীয় ট্রাকচালকদের অবাধ চলাফেরা

বেনাপোল প্রতিনিধি

করোনা হুমকিতে বেনাপোল

দেশের রাজস্ব আদায়ের স্বার্থে ও রপ্তানি খাতকে বাঁচিয়ে রাখতে  বেনাপোল বন্দর ও কাস্টমস হাউস কঠোর লকডাউনের মাঝেও খোলা রেখেছে সরকার। ফলে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত- বাংলাদেশ দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য সচল রয়েছে। তবে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ভারত ফেরত পাসপোর্টযাত্রীরা  করোনা নেগেটিভ সনদ নিয়ে দেশে ফিরলেও  কোনো রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই ও করোনার সনদপত্রবিহীন অবস্থায় বেনাপোল বন্দরে অবাধে প্রবেশ করছে ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাক, চালক ও হেলপাররা। ফলে সর্বদা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে বন্দর এলাকার লক্ষাধিক মানুষ। বন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা বলেন, দেশের স্বার্থে আমদানি-রপ্তানিসহ বন্দর ও কাস্টমসের অভ্যন্তরীণ কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য কোনো সংগঠন দাবি করেনি। সবার দাবি, স্বাস্থ্যবিধি মেনেই বন্দরের কাজ সম্পন্ন করা হোক। গত শনিবার  পর্যন্ত বেনাপোল পৌর এলাকাসহ শার্শা উপজেলায় ১ হাজার ৪১ জন আক্রান্ত হয়েছে। নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ৩ হাজার ৯১৪ জনের। করোনায় মারা গেছেন ১৫ জন।  তবে  বন্দর, কাস্টমস, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ও কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের কেউ মারা না গেলেও  অনেকের শরীরে উপসর্গ রয়েছে। যারা বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছে। আর এ নিয়ে বিরাজ করছে মানুষের মধ্যে করোনার আতঙ্ক। স্থানীয়দের অভিযোগ, ভারত ফেরত পাসপোর্ট যাত্রীদের মতো পণ্যবাহী ট্রাক ও হেলপাররা করোনা নেগেটিভ সনদ নিয়ে দেশে প্রবেশ করুক। বন্দর অভ্যন্তরে ঘুরে দেখা যায়, ভারতীয় চালক-হেলপাররা পিপিই, মাক্স ছাড়াই বন্দরের শ্রমিক-কর্মচারীদের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে।

 করোনা শুরুর প্রথম দিকে দুই দেশের ব্যবসায়ীরা আশ্বস্ত করেছিলেন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে করোনার নেগেটিভ সনদপত্র নিয়ে চালক এবং হেলপাররা বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করবে। আজ পর্যন্ত সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। প্রথম দিকে বন্দরের পক্ষ থেকে তাপমাত্রা দেখা, ভারতীয় ট্রাকে জীবাণুনাশক ¯েপ্র ও চালক-হেলপাররা পিপিই, মাক্স পরে আসলেও এখন এগুলোর কোনো খোঁজ নেই। অপর দিকে বন্দর এলাকায় কঠোর লকডাউনে দোকানপাট বন্ধ থাকায় অনেক চালক, হেলপার  আবার বিশেষ পাস নিয়ে ভারতে যাচ্ছে বাজার করতে। এদের মধ্যে কেউ কেউ আবার বাড়িতে রাত্রযাপন করে পরের দিন সকালে আবার বন্দর এলাকায় ফিরে আসছে। বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান স্বজন জানান, ভারতে করোনার ভয়াবহ অবস্থা। এ অবস্থায় বিশেষ ব্যবস্থায় বেনাপোল বন্দর সচল রাখা হয়েছে। তবে এখানে ভারতীয় ট্রাকচালক থেকে শুরু করে বন্দরের শ্রমিক কেউ যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। এতে সীমান্তে করোনা সংক্রমণের হার সম্প্রতি বেড়েছে। ভারত থেকে আগত ট্রাকচালকদের শূন্য রেখায় স্যানিটাইজেশন করতে হবে। আগত ভারতীয় ট্রাকে ¯েপ্র করতে হবে। ভারতীয় ট্রাকচালকদের বন্দরে প্রবেশের পূর্বে থার্মাল স্ক্যানার দ্বারা শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করতে হবে। এ সংক্রান্ত একটি পত্র বাণিজ্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে দেওয়া হলেও কার্যকরী কোনো ভূমিকা দেখা যায়নি। তিনি বন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন সংগঠনের প্রায় ১৫ হাজার কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের  অনতিবিলম্বে টিকার আওতায় আনার দাবি জানান। বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার বলেন, ভারত থেকে আসা পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে প্রতিদিন আমদানি-রপ্তানি গেটে ¯েপ্র করা হচ্ছে। বন্দরের নিরাপত্তায় থাকা আনসার সদস্যদের ভারতীয় ট্রাকচালক ও হেলপাররা যাতে বাইরে যেতে না পারে সে জন্য নজরদারি রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগে জনবল স্বল্পতার কারণে ভারতীয় চালকদের তাপমাত্রা মাপা সম্ভব হচ্ছে না। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের জানানো হয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর