মঙ্গলবার, ২৭ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

হাইওয়েতে বেপরোয়া ইজিবাইক

অদক্ষ চালক, যেখানে-সেখানে পার্কিং, বেপরোয়া গতির ইজিবাইক বাধাহীনভাবে চলছে এশিয়ান হাইওয়ে সড়কে

জাহাঙ্গীর আলম হানিফ, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)

হাইওয়েতে বেপরোয়া ইজিবাইক

কঠোর লকডাউনের মধ্যে মহাসড়কে চলছে অবৈধ ইজিবাইক -বাংলাদেশ প্রতিদিন

করোনাভাইরাসের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে সারা দেশে ঘোষিত কঠোর লকডাউনের মধ্যে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও গাজীপুর-চট্টগ্রাম এশিয়ান হাইওয়ে সড়কে বেপরোয়া গতিতে চলছে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক। অদক্ষ চালক, যেখানে-সেখানে পার্কিং, বেপরোয়া গতির ইজিবাইক এখন বাধাহীনভাবে বীরদর্পে চলছে মহাসড়ক ও এশিয়ান হাইওয়ে সড়কে। পুলিশের হাতে সাময়িক কয়েকটি গাড়ি আটক হলেও টাকার বিনিময়ে মুক্ত হয়ে যায় নিমিষেই। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় মহাসড়কে নিষিদ্ধ সত্ত্বেও দিন দিন ইজিবাইকের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। প্রশাসন তেমন তৎপর না থাকায় সরকারিভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণার পরও তার তোয়াক্কা না করেই অভ্যন্তরীণ সড়ক ছেড়ে মহাসড়ক ও এশিয়ান হাইওয়ে সড়কে চলছে এই ব্যাটারিচালিত অবৈধ যান। কখনো সোজা, কখনো উল্টো পথে। এতে বাড়ছে ঝুঁকি, বাড়ছে দুর্ঘটনা। এ ছাড়া এই ইজিবাইকের ব্যাটারি চার্জ করতে বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ খরচ হচ্ছে। যার সিংহভাগই অবৈধ সংযোগের। বাড়তি এই বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে বিদ্যুৎ বিভাগ। তবে শুরুতে যাতায়াতের ক্ষেত্রে সুবিধা হওয়ায় এ যান জনপ্রিয় হয়ে উঠলেও পরে সংখ্যার দিক থেকে বেড়ে যাওয়াসহ নানা কারণে এখন তা সুবিধার পরিবর্তে জনজীবনে মহাভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানা গেছে। সরেজমিন দেখা গেছে, রূপগঞ্জ উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও এশিয়ান হাইওয়ে সড়কে অবাধে চলছে এই ইজিবাইক। প্রশাসনের নাকের ডগায় এই ইজিবাইক চললেও কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের বেপরোয়া গতি দেখে মনে হয় তারা প্রতিযোগিতায় নেমেছে। জানা গেছে, সরকারি অনুমোদনের বাধ্যবাধকতা ও রাজস্ব প্রদানের সঠিক নিয়ম না থাকায় অসাধু ব্যবসায়ীরা নিয়ন্ত্রণহীনভাবে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক তৈরি করছে। আর এসব ইজিবাইক অভ্যন্তরীণ সড়ক ছেড়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও গাজীপুর-চট্টগ্রাম এশিয়ান হাইওয়ে সড়কে ব্যাপক হারে চলাচল করছে। স্বাভাবিক সময়ে এই ইজিবাইকগুলো উপজেলার তারাবো, বরাব, রূপসী, বরপা, ভুলতা, গোলাকান্দাইল, কাঞ্চনসহ প্রতিটি সড়কেই চলাচল করত। এখন লকডাউনের মধ্যে ইজিবাইকগুলো গাউছিয়া হতে ঢাকা, ঢাকা হতে গাউছিয়া, আবার গাউছিয়া হতে নরসিংদীও যাতায়াত করছে। হাইওয়ে পুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশ কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় দিনকে দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ইজিবাইকগুলো। এ ছাড়া ব্যাটারিচালিত যানগুলোকে ঘিরে চলছে চাঁদাবাজির মহোৎসব। এক শ্রেণির রাজনৈতিক দলের পরিচয়ধারী চাঁদাবাজচক্র ইজিবাইক থেকে প্রতিদিন মোটা অঙ্কের চাঁদা আদায় করছেন। ফলে সবাইকে ম্যানেজ করায় ইজিবাইক চালকরা আরও বেশি সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ট্রাকচালক কবির হোসেন জানান, ইজিবাইক মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করায় আমাদের বড় গাড়ি চালাতে এই লকডাউনেও অনেক হিমশিম খেতে হয়। হাইওয়ে পুলিশের ভুলতা ক্যাম্প ইনচার্জ ইন্সপেক্টর সালাউদ্দিন জানান, মহাসড়কে চলাচল নিষিদ্ধ অটোরিকশা, ইজিবাইক ও সিএনজিসহ যত পরিবহন আছে সেগুলো প্রতিদিনই আটক করে নিয়মিত মামলা দেওয়া হচ্ছে। যেগুলো মামলার যোগ্য নয় সেগুলো আটক করে ডাম্পিংয়ে পাঠানো হয়। এগুলো দ্রুত বন্ধ করার যথাসাধ্য চেষ্টা চলছে।

সর্বশেষ খবর