শুক্রবার, ৩০ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে উপকূল

প্রতিদিন ডেস্ক

টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে উপকূল

বরগুনায় জলাবদ্ধ বসতবাড়ি -বাংলাদেশ প্রতিদিন

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে অবিরাম বৃষ্টি ও জোয়ারের পানি বেড়ে উপকূলীয় বিভিন্ন জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে লাখ লাখ মানুষ। ভেসে গেছে বহু মাছের ঘের ও পুকুর। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমন বীজতলা ও ফসলের খেত। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। প্রতিনিধিদের খবর- বরিশাল : টানা বৃষ্টির কারণে বরিশালের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বেড়েছে নদ-নদীর পানি। দিনে দুই বার জোয়ারের সময় নদীসংলগ্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর এবং নদীবন্দরে জারি করা হয়েছে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত। উত্তর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে আগামী দুই-এক দিন বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে স্থানীয় আবহাওয়া বিভাগ।  খুলনা : টানা তিন দিনের ভারী বৃষ্টিতে খুলনার নিম্নাঞ্চলের বাড়িঘর তলিয়ে গেছে। উপকূলীয় এলাকায় অসংখ্য চিংড়ি ঘের ভেসে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমন বীজতলাসহ ফসলি জমি। পাইকগাছায় নদীতীরে থাকা জেলে পল্লীর ৮-১০টি মাটির ঘর ধসে পড়েছে। বাগেরহাট : দুই দিন ধরে অবিরাম বৃষ্টি ও জোয়ারের পানি বেড়ে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে ৪৭টি ইউনিয়নের ৬০ হাজার পরিবার। ভেসে গেছে ৯ হাজার চিংড়ি খামার ও সাড়ে ৭ হাজার পুকুরের মাছসহ ২৫০টি খামারের শিলা কাঁকড়া। তলিয়ে গেছে আমন বীজতলা ও সবজি খেত। দুর্ভোগে পড়া নিম্ন আয়ের হাজার হাজার মানুষ ১৬টি সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছে। কক্সবাজার : টানা ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। বিভিন্ন উপজেলায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন অন্তত ২ লাখ মানুষ। জেলার প্রধান নদী বাঁকখালী, মাতামুহুরী ও রেজু নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এসব এলাকার মাছের ঘের, সবজি খেত ও ধানের চারা তলিয়ে গেছে। জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপকূলীয় এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বান্দরবান : প্রবল বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে জেলার শংখ ও মাতামুহুরী নদীতে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে প্লাবিত হয়েছে জেলা সদর ও লামা, নাইক্ষ্যংছড়ি, থানচিসহ বিভিন্ন উপজেলার নিম্নাঞ্চল। বুধবার রাতভর ভারী বর্ষণের কারণে গতকাল পৌর এলাকার আর্মি পাড়া, ইসলামপুর, শেরেবাংলা নগর, ফজর আলী পাড়া, কালাঘাটা এবং বালাঘাটায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। অচল হয়ে পড়েছে জনজীবন। বরগুনা : জেলায় গত ৪৮ ঘণ্টায় ৪৭৩ মি.মি. বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। টানা বর্ষণে প্লাবিত হয়েছে উপকূলীয় নিম্নাঞ্চল। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে মৎস্য ও কৃষি খাতের। বেড়িবাঁধের বাইরে অবস্থিত বসতঘর ও আবাসন প্লাবিত হয়েছে। ঘরে পানি ঢোকায় রান্না বন্ধ রয়েছে অধিকাংশ পরিবারে। খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে নিম্ন আয়ের মানুষের। সাতক্ষীরা : ভারী বর্ষণে সাতক্ষীরার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ভসে গেছে অসংখ্য মৎস্য ঘের ও পুকুর। তলিয়ে আছে সদ্য রোপা আমন, বীজতলা ও ফসলি জমি। আশাশুনি ও শ্যামনগরের কপোতাক্ষ, খোলপেটুয়াসহ বিভিন্ন নদ ও নদীর বেড়িবাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে হাজার হাজার পরিবার। এদিকে ফরিদপুরের ভাঙ্গায় ৩০ সেকেন্ডের ঘূর্ণিঝড়ে চুমুরদী ইউনিয়নের চুমুরদী গ্রাম ও পাশের আলগী ইউনিয়নের পীরেরচর গ্রামের ৩০টি পরিবারের ঘরবাড়ি লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। ভেঙে গেছে কয়েক শ গাছপালা।

সর্বশেষ খবর