নওগাঁর মহাদেবপুরে আইন অমান্য করে ওভার লোড নিয়ে বেপরোয়া গতিতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে প্রায় ৫০০ বালুবাহী অবৈধ ট্রাক্টর, ট্রাক এবং ১০ চাকার ডাম্পার। এসব যানের চাকার আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে পড়েছে উপজেলার বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক। কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সড়ক এখন ভেঙে একাকার। ফলে প্রতিদিন এলাকাবাসীসহ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন পরিবহন চালক, যাত্রী ও পথচারীরা। কেবল সড়কের ক্ষতি নয়, অহরহ ঘটছে দুর্ঘটনা। গত দুই বছরে বালুবাহী ট্রাকের চাকায় অন্তত ২০ জন প্রাণ হারিয়েছে। দন্ডবিধিতে কোনো সরকারি সম্পদের ক্ষতি করলে এর শাস্তির বিধান নিশ্চিত করা আছে। ৪৩১ ধারা মোতাবেক সরকারি রাস্তার ক্ষতি সাধন দন্ডনীয় অপরাধ। এ অপরাধের জন্য দায়ী ব্যক্তি পাঁচ বছর পর্যন্ত সশ্রম বা বিনাশ্রম জেলসহ অর্থদন্ডে দন্ডিত হবে। জানা যায়, উপজেলার আত্রাই নদীর মহিষবাথান থেকে পাঠাকাটা ঘাট পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার এলাকা থেকে খননযন্ত্র বসিয়ে অবাধে বালু তোলা হচ্ছে। এ দুটি বালুমহাল থেকে প্রতিদিন অন্তত ৫০০-৭০০ গাড়ি বালু নওগাঁ, জয়পুরহাট, রাজশাহী ও বগুড়া জেলার বিভিন্ন গন্তব্যে যাচ্ছে। মহিষবাথান, বুড়া শিবতলা, শিবগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকার বাঁধের ওপর দিয়ে ভারি ডাম্পার, অবৈধ টাক্টর ও ট্রাক নামছে নদীর তীরে। প্রতিটি ১০ চাকার ট্রাক বা ডাম্পার বহন করছে অন্তত ৪৫-৫০ মেট্রিক টন বালু। ছয় চাকার ডাম্পার বহন করছে ২৫-৩০ টন। পাঁচ টন বহন ক্ষমতার ট্রাকে বালু যাচ্ছে ১১-১৪ টন। আর অনভিজ্ঞ চালকরা ট্রাক্টরগুলো বেখেয়াল ভাবেই চালাচ্ছে। প্রশাসন-পুলিশের সামনে দিয়ে চলাচল করছে বালুবাহী ডাম্পার, অবৈধ ট্রাক্টর ও ট্রাক।

 কিন্তু এসব যানবাহনের বিরুদ্ধে কোনো আইন প্রয়োগ না করে শুধু মোটরসাইকেল ধরপাকড় করছে সংশ্লিষ্টরা। বালু বহনকারী বেপরোয়া যান চলাচলে ধুলো-বালি উড়ে রাস্তার দুই পাশের ঘর-বাড়ি বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে; হুমকির মুখে জনস্বাস্থ্য।  সড়ক ও জনপথ বিভাগের মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন মাহমুদ বলেন, সড়ক নষ্টের অন্যতম কারণ ওভার লোড। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে তারা একাধিকবার জানানা হয়েছে। বিআরটিএ নওগাঁ সার্কেলের সহকারী পরিচালক এটিএম ময়নুল হাসান বলেন, ওভার লোড বহন ও অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানুর রহমান মিলন বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে ওইসব যানবাহনের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।