শনিবার, ৩১ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

কুড়িগ্রামে ওষুধের কৃত্রিম সংকটে রোগীদের ভোগান্তি

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

কুড়িগ্রামে ওষুধের কৃত্রিম সংকটে রোগীদের ভোগান্তি

কুড়িগ্রামে গত একমাস যাবত করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়া ও ঘরে ঘরে জ্বরের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় ওষুধের দোকানগুলোতে প্রতিষেধক ট্যাবলেট ও সিরাপ প্যারাসিটামলের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। তবে ভুক্তভোগী রোগীর স্বজন ও বিক্রেতাগণ এ ধরনের সংকটকে প্যারাসিটামল উৎপাদনকারী ওষুধ কোম্পানিগুলোর কৃত্রিম সংকট বলে দাবি করেন। শহরের পৌরবাজার, জিয়াবাজার, ত্রিমোহনী বাজারসহ বিভিন্ন মার্কেটের ফার্মেসি ও এমনকি গ্রামগঞ্জের ফার্মেসিগুলোতে ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে। প্যারাসিটামলের তীব্র সংকটে রোগীরা দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। একদিকে, চিকিৎসকের পরামর্শমতো প্যারাসিটামল ওষুধ সেবন করতে হয়। অন্যদিকে জ্বর-গায়ে ও গলা ব্যথাসহ অন্যান্য অসুখ থেকে দ্রুত সেড়ে ওঠার কারণে প্যারাসিটামল ট্যাবলেট ও নাপা সিরাপ কিনতে দোকানগুলোতে প্রচ- ভিড় পরিলক্ষিত হয়। কিন্তু ফার্মেসির মালিকগণ তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। এ অবস্থা গত এক মাস যাবত চলছে বলে জানান ক্রেতা ও বিক্রেতাগণ। জেলা শহরের পৌরবাজার এলাকায় ‘নিউ টাউন প্লাস’ ফার্মেসিতে ওষুধ কিনতে আসা রোগীর এক স্বজন আহমেদুল কবির জানান, ‘আমাদের বাড়িতে সবার একের পর এক জ্বর আসছে। চিকিৎসকগণ দ্রুত জ্বর থেকে মুক্তি মিলতে নাপা রেপিড ট্যাবলেট লিখেছেন। কিন্তু আমি এখন পর্যন্ত গত তিনদিন যাবত এ ট্যাবলেট কোথাও পাচ্ছি না। কোনো ডিসপেনসারিতেই প্যারাসিটামল নেই। তারা বলেন, সাপ্লাই নেই দেই কি করে।

অপরদিকে, লাইফ ফার্মেসি, সবুজ ফার্মেসি, সততা ফার্মেসি, টাউন ফার্মেসিসহ বিভিন্ন ফার্মেসিতে খোঁজ নিলে দেখা যায়, তাদের নিকট নাপা, নাপা এক্সটেন্ড, নাপা রেপিড, নাপা সিরাপ, এইচ, এইচ প্লাস, এক্সএল ওষুধগুলো কোনো দোকানে নেই। অথচ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ বরাবরই প্যারাসিটামল প্রেসক্রিপশনে লিখে যাচ্ছেন। কোনো কোনো চিকিৎসক মনে করেন যে নাপা গ্রুপের সবচেয়ে কার্যকরী ট্যাবলেট নাপা রেপিড। তাই অধিকাংশ চিকিৎসক এ ওষুধটি জ্বর, মাথা-গলা ও গায়ে ব্যথার জন্য প্রত্যেক রোগীকে লিখে যাচ্ছেন। এ অবস্থায় রোগীরা পড়েছেন বিপাকে। ‘লাইফ ফার্মেসির মালিক উদয় শঙ্কর চক্রবর্তী প্যারাসিটামল সংকটের কথা স্বীকার করে জানান, এখন মানুষ প্রয়োজনের তুলনায় হুমড়ি খেয়ে এক পাতার জায়গায় ৫ পাতা ট্যাবলেট কিনছেন। তাছাড়া চিকিৎসকগণ নাপা রেপিডসহ দুএকটি ট্যাবলেটের নাম লিখায় এরূপ চাপ সৃষ্টি হয়েছে। সবুজ ফার্মেসির বিক্রেতা নিত্য চন্দ্র বর্মণ বলেন, আমরা ওষুধ কোম্পানিগুলোকে যদি আগাম অর্ডার দেই ৫ প্যাকেট তারা আমাদের দেন মাত্র ১ প্যাকেট। তাহলে তো সংকট হবেই। কুড়িগ্রাম জেলা ড্রাগ অ্যান্ড মেডিসিন বিক্রেতা অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি উজ্জ্বল সরকার বলেন, বর্তমানে নাপা গ্রুপটি বেশি চলছে। কোম্পানিও শর্ট দিচ্ছে আবার কিছু ওষুধ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে ধীরে ধীরে ওষুধ মার্কেটে ছাড়ছে। বেক্সিমকো ওষুধ কোম্পানির কুড়িগ্রাম এরিয়া ম্যানেজার কিংশুক পোদ্দার প্যারাসিটামল গ্রুপের ওষুধের সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, করোনাকালীন সর্দি, জ্বর ও ব্যথাসহ এ ওষুধের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় আমরা সাপ্লাই দিতে হিমশিম খাচ্ছি। তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে কেন্দ্র অফিসে জানিয়েছি।

সর্বশেষ খবর