বৃহস্পতিবার, ৫ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

টানা বৃষ্টিতে সাতক্ষীরায় ভেসে গেছে ৫৯ কোটি টাকার মাছ

বীজতলা ও সবজি খেত ডুবে গেছে

মনিরুল ইসলাম মনি, সাতক্ষীরা

টানা বৃষ্টিতে সাতক্ষীরায় ভেসে গেছে ৫৯ কোটি টাকার মাছ

টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিপাতে সাতক্ষীরার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিতে ভেসে গেছে ১০ হাজার হেক্টর চিংড়ি ও মৎস্য ঘের। মৎস্য অধিদফতরের তথ্য মতে ক্ষতি হয়েছে ১৪ হাজার ৪৭০ জন মৎস্য চাষির ৫৯ কোটি টাকার মাছ। এ ছাড়া ভারী বর্ষণে তলিয়ে আছে ২ হাজার ১১২ হেক্টর আমন বীজতলা, রোপা আমন ও সবজি খেত। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ১৪৫৪ হেক্টর আমন বীজতলা। সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর খামারবাড়ীর হিসাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ১৭ কোটি টাকা। জেলা মৎস্য অফিসার মো. মশিউর রহমান জানান, গত দুদিন ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত টানা ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা বর্ষণসহ গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে সাতক্ষীরা জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে সবচেয়ে ক্ষতি হয়েছে চিংড়ি ও মৎস্য ঘের। ভেসে গেছে ১৫ হাজার ১৮টি ছোট বড় মৎস্য ঘের ও পুকুর। জেলার ৭টি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে আশাশুনি, কালীগঞ্জ ও সুন্দরবন সংলগ্ন শ্যামনগর উপজেলায়। এই তিন উপজেলায় এখনো ১৩ হাজার ২১ ঘের পানিতে একাকার হয়ে আছে। ভেসে গেছে ৪৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকার মাছ। এছাড়া সাতক্ষীরা সদর, তালা এবং দেবহাটার বিস্তীর্ণ এলাকার রোপা আমন ও চিংড়ি ঘের পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। এর মধ্যে তালায় ৩৭৮টি মৎস্য ঘের ও পুকুর, দেবহাটা উপজেলায় ১ হাজার ৩৬৯টি ঘের এবং সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ২৫০টি ঘের ভেসে গেছে। যার ক্ষতির পরিমাণ ১১ কোটি ২৪ লাখ টাকা।  এদিকে সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর খামারবাড়ীর উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. নূরুল ইসলাম জানান, অতি বৃষ্টিতে সাতক্ষীরায় ১৪৫৪ হেক্টর আমন বীজতলা, ৩৫২ হেক্টর রোপা আমন ও ২৮৫ হেক্টর বিভিন্ন প্রজাতির সবজির ক্ষেত প্লাবিত হয়েছে। ৬৭ হাজার ৮২৪ জন ক্ষতিগ্রস্ত চাষির ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১৭ কোটি টাকা। এই মুহুর্তে কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ধান বীজ তিবরণ করা হচ্ছে। সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির জানান, চলমান অতিবৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা নিরসনে ও জনদুর্ভোগ লাঘবে খাল ও ঘের মালিকদের দেওয়া অবৈধ নেট-পাটা অপসারণের জন্য স্থাপনকারীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যারা এখনো নেট-পাটা অপসারণ করেননি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) এর নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলার মৎস্য, কৃষিসহ বিভিন্ন সেক্টরে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা নিরূপণ করে সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানো হবে। জলাবদ্ধতার কারণে যারা বেশি ক্ষতি হয়েছে তাদের জন্য চাল ও নগদ অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর