শনিবার, ৭ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

চাহিদা বাড়ায় ওষুধ সংকট

লালমনিরহাটে আগ্রহ নেই করোনা পরীক্ষায়

রেজাউল করিম মানিক, লালমনিরহাট

লালমনিরহাট জেলার পাঁচ উপজেলার গ্রামাঞ্চলে আশঙ্কাজনক হারে বেড়েই চলছে করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা। উপজেলার ৪৫ ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি, ঠান্ডা, মাথা ও শরীর ব্যথায় ভুগছেন মানুষ। বেশির ভাগ মানুষের করোনা পরীক্ষায় আগ্রহ নেই। তারা ঠান্ডা, জ্বর কিংবা ব্যথাজনিত অসুখে অসুস্থ হয়ে করোনা পরীক্ষা না করিয়ে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ সেবন করছেন। এর মধ্যে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধও খাচ্ছেন। তাই প্রয়োজনের তুলনায় চাহিদা বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। সিভিল সার্জন অফিস জানিয়েছে, গত জুলাইজুড়ে করোনার দাপট ছিল অসহনীয়। আক্রান্তের হার ছিল ৩১.৫ শতাংশ। গ্রামপর্যায়ের মানুষ লজ্জায় করোনা পরীক্ষা না করায় শহরের মানুষই বেশি বিপাকে পড়েছেন। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত আর মৃত্যুর সংখ্যা, জানালেন সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু রায়। জানা গেছে, জেলার ফার্মেসিগুলোয় সরবরাহ না থাকায় প্রত্যন্ত অঞ্চলের ফার্মেসিগুলোতেও প্যারাসিটামল পাওয়া যাচ্ছে না। এ ছাড়া দুই সপ্তাহ হলো জেলা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও প্যারাসিটামলের পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় এ সংকট আরও বেড়েছে। এ ক্ষেত্রে নাপা, নাপা এক্সটেইন্ড, নাপা এক্সট্রা, নাপা সিরাপ এ জাতীয় ওষুধ বাজারে বহুল ব্যবহৃত হচ্ছে। অনেকে এ ওষুধ খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা বোধ করছেন না। এসব কারণে উল্লিখিত ওষুধের বিক্রি বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। ওষুধ কোম্পানির একাধিক বিপণন কর্মকর্তা এবং ফার্মেসি মালিকরা জানালেন, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ না থাকায় উপজেলাসহ জেলাজুড়ে এ জাতীয় ওষুধটির সংকট দেখা দিয়েছে। আদিতমারী উপজেলার কমলাবাড়ি গ্রামের কৃষক হেলাল হোসেন মাঠে কাজ করার সময় বৃষ্টিতে ভিজেছিলেন। এর এক দিন পর থেকে তার শরীরে অনেক জ্বর, সঙ্গে ঠান্ডা, সর্দি। এলাকার ফার্মেসিতে নাপা কিনতে গিয়েছিলেন কিন্তু পাননি। প্যারাসিটামল গ্রুপের কোনো ওষুধ তিনি পাননি।  সদরের অন্যান্য ফার্মেসিতে খোঁজ করে না পেয়ে, এক দোকানে অন্য একটি ওষুধ কোম্পানির তৈরি প্যারাসিটামল খাচ্ছেন তিনি। কালীগঞ্জ উপজেলার শিয়াল খোওয়া গ্রামের শাহ আলী গতকাল বিকালে এলাকায় স্থানীয়দের সঙ্গে ফুটবল খেলতে গিয়ে বৃষ্টি কাদায় মাখামাখি। রাতেই শরীর ঝাঁকুনি দিয়ে জ্বর আর অসহ্য মাথাব্যথা। এলাকার এবং পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন পর্যায়ের সব ফার্মেসি খুঁজেও নাপা ট্যাবলেট পাননি। শিয়াল খোওয়া বাজারের রামিশা ফার্মেসির মালিক রেজাউল করিম বলেন, ঠান্ডা-জ্বর বেড়ে যাওয়ায় সবাই নাপা চাচ্ছেন। কিন্তু পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় তিন সপ্তাহ আগে থেকেই নাপার সংকট চলছে। লালমনিরহাট শহরের ওষুধপট্টি হিসেবে পরিচিত পুরানবাজার এলাকার একাধিক ফার্মেসির বিক্রয়কর্মীরাও একই কথা জানালেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর