জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক দরকার ২১ জন। আছেন মাত্র ৫ জন। এর মধ্যে একজন ছুটিতে, আরেকজনকে প্রেষণে পাঠানো হয়েছে অন্য জায়গায়। ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও চিকিৎসকসহ বাড়ানো হয়নি জনবল। তাই হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবা চরম সংকটে। মাত্র তিনজন চিকিৎসক দিয়ে চলছে উপজেলা ক্ষেতলাল হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম। গাইনি চিকিৎসক না থাকায় অন্তঃসত্ত্বাদের জটিল পরিস্থিতিতে সেবা দেওয়া যাচ্ছে না গত দুই বছর ধরে। এছাড়া পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও ওয়ার্ডবয়সহ অন্যান্য পদেও তীব্র সংকট রয়েছে। এতে গ্রাম পর্যায়ে চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসাসেবা। উপজেলার আলমপুর গ্রামের আসমা খাতুন নামের একজন রোগী হাসপাতালে গাইনি ডাক্তারের কাছে চিকিৎসাসেবা নিতে এলে তাকে না পেয়ে তিনি বলেন, শুনলাম অনেক দিন ধরে হাসপাতালে গাইনি ডাক্তার নেই। তাই ফিরে যাচ্ছি। আমি গরিব মানুষ কি করব ভেবে পাচ্ছি না। আমাকে জরুরিভিত্তিতে গাইনি ডাক্তার দেখাতে হবে। এখন কোনো উপায় নাই। তাই যেকোনো ক্লিনিকে চিকিৎসাসেবা নিতে হবে। উপজেলার দেওতারহার গ্রামের আব্দুল হালিম অভিযোগ করে বলেন, ধানের কাজ করার সময় আমার কোমড়ে ব্যথা পেয়েছিলাম। সেই ব্যথা এখন আরও বেশি হচ্ছে। তাই এই হাসপাতালে আসলাম। বহির্বিভাগে কর্তব্যরত এক ডাক্তার বললেন এখানে হবে না জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালে যেতে বললেন। আমি কিভাবে যাব তা ভেবে পাচ্ছি না। উপজেলার জামুহালি গ্রামের পরীবাণু বলেন, আমার ৬ মাসের শিশুকে নিয়ে এসেছি কিন্তু শিশুদের জন্য আলাদা কোনো চিকিৎক না থাকায় ফেরত যেতে হচ্ছে। চিকিৎসক না থাকার কারণে ক্ষেতলাল উপজেলাবাসী স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। চিকিৎসক ও জনবল সংকটে চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে উল্লেখ করে ক্ষেতলাল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. মোহাম্মদ আতাউর রহমান বলেন, ‘আমাদের পাঁচটি কন্সালটেন্ট পদের মধ্যে একটি পদেও কোনো নিয়োগ নাই। বিশেষ করে গাইনি কন্সালটেন্ট না থাকার কারণে আমরা প্রতিনিয়ত গর্ভবতী মায়েদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছি।
আমাদের মেডিসিন এবং সার্জারি বিশেষজ্ঞও নাই।’ পর্যায়ক্রমে এ থেকে উত্তরণের আশ্বাস দিলেন জয়পুরহাটের সিভিল সার্জন। সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী জানান, তারা এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন এবং যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে, যাতে সমস্যার সমাধান হয়। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ গুরুত্বপূর্ণ শূন্যপদগুলো দ্রুত পূরণ করে গ্রাম পর্যায়ে চিকিৎসাসেবায় গুরুত্ব দিবেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এমন প্রত্যাশা ক্ষেতলালবাসীর।