সোমবার, ৯ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

দাবদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

দাবদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত

কুড়িগ্রামে গত কয়েকদিন ধরে প্রচ- দাবদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। একদিকে, করোনা সংক্রমণ রোধে লকডাউন অপরদিকে, প্রচ- তাপদাহে কুড়িগ্রাম জেলার মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। এ গরমে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে জেলার নিম্ন আয়ের মানুষজন। আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে বৃষ্টির ভরা মৌসুমে নেই কোনো বৃষ্টি। সকাল থেকে প্রখর রোদে সবকিছু খাঁ খাঁ করছে। এ রোদের ঘাম ঝরানো তাপমাত্রার কারণে এখানকার শ্রমজীবী মানুষ পড়েছে চরম বিপাকে। দিনমজুর, শ্রমিক, রিকশাচালক, ঠেলা ও ভ্যান চালকরা অসম্ভব রকমের গরমে প্রায় কর্মহীন হয়ে পড়েছে। একদিকে মহামারী করোনা সংক্রমণের কারণে লকডাউনে আয় রোজগার কমে যাওয়া চরম ভোগান্তিতে নিম্ন আয়ের মানুষ। অপরদিকে, তীব্র গরমে অস্থির অবস্থা। যদিও কারও কারও কাজ জুটলে তীব্র গরমে সে কাজ করতেও পারেন না তারা। প্রচ- গরমে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে রয়েছে শিশু ও বৃদ্ধরা। অনেকেই গাছের ছায়ায় শীতল পরশ পেতে ঠাঁই নিচ্ছেন। আবার কেউ কেউ একটু স্বস্তি পেতে ঠান্ডা শরবত, লেবু পানি, ডাবের পানি কিংবা আইসক্রিম খেয়ে তৃষ্ণা মেটানোর চেষ্টা করছেন।

 চলতি মাসে কুড়িগ্রামে তাপমাত্রা গড়ে ৩৫ থেকে ৩৬ ডিগ্রিতে ওঠানামা করছে। তবে এ তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে স্থানীয় আবহাওয়া অফিসের আশঙ্কা। বৃষ্টিপাত না হওয়ায় এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে জীববৈচিত্র্যের ওপরও। একটু ঠান্ডা পেতে অনেক শিশু-কিশোর স্থানীয় পুকুর-নদী, বিলে গিয়ে জিরিয়ে নিচ্ছেন বলে জানা যায়। তাছাড়া প্রচ- গরমে শিশু, বৃদ্ধদসহ অনেকের দেখা দিয়েছে ডায়রিয়া। ঘন ঘন পাতলা পায়খানায় শিশুরা কাহিল হয়ে পড়েছে। হাসপাতালসমূহে বেড়েছে গরমজনিত রোগীর সংখ্যা। প্রত্যেক বাড়িতে বাড়িতে দেখা দিয়েছে জ্বর-সর্দি-কাশি। ফলে করোনা উপসর্গের সঙ্গে আবহাওয়ার এমন পরিবর্তনে জনজীবনে দেখা দিয়েছে এক ধরনের আতঙ্ক। কুড়িগ্রাম পৌর এলাকার জিয়া বাজারের বাসিন্দা লুনা জাহান বলেন, এত অসহ্য গরমে কোনো কিছুই ভালো লাগে না। তীব্র গরমে অসহ্য হচ্ছে জনজীবন। গড়ের পাড় এলাকার ঠেলাগাড়ি চালক মোহন বকসী জানান, এত গরম জীবনে দেখিনি। যে দুই পইসা কামাই করচি তাকো গরমের ঠেলায় আর করবার মোনায় না। রাজারহাট উপজেলার চাকির পশার গ্রামের কৃষক ফুলবাবু জানান, বৃষ্টি না থাকায় আমাদের আবাদের খুব সমস্যা হয়েছে। জমি ফেটে চৌচির হচ্ছে। তাপদাহ সম্পর্কে জেলা সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুর রহমান জানান, এসময়টাতে বৃষ্টি হওয়ার কথা। সেখানে প্রচন্ড গরমে জনজীবন কাহিল প্রায়। তবে সবাইকে ঘনঘন শরবত ও তরল খাবার খেতে হবে।

সর্বশেষ খবর