মঙ্গলবার, ১০ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

দুর্ভোগে তিন গ্রামের মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

দুর্ভোগে তিন গ্রামের মানুষ

মিরসরাইয়ে খালের গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে জনগুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে তিন গ্রামের মানুষ। উপজেলার হিঙ্গুলী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বুক চিরে বয়ে গেছে হিঙ্গুলী খাল। আর সেই খালের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া হিঙ্গুলী ব্রিজ-ইসলামপুর মুক্তিযোদ্ধা কামাল পাশা সড়কটি পূর্ব হিঙ্গুলী, মোহাম্মদপুর, ইসলামপুর গ্রামের প্রায় আড়াই হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের প্রবল স্রোতের কারণে গত কয়েক বছরে ক্রমাগত ভাঙনের ফলে সড়ক বিলীন হওয়ার পর এখন খালের পাশের একটি বাড়িও বিলীন হওয়ার পথে। একসময় এ সড়ক দিয়ে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করত, পাশাপাশি ইসলামপুর থেকে এই সড়ক দিয়ে হিঙ্গুলী ব্রিজ হয়ে করেরহাট বাজারে আসা-যাওয়া করত স্থানীয়রা। বর্তমানে সড়কটি দিয়ে পায়ে হেঁটে চলাচল করাও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে একসময়ের ব্যস্ততম সড়কটি। ইতিমধ্যে সড়কটি ভাঙনের কবল থেকে রক্ষাকল্পে স্থানীয় সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন ২০২০ সালের ১০ সেপ্টেম্বর ডিও লেটার দেন পানি উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রাম জোনের প্রধান প্রকৌশলী বরাবর। স্থানীয় বাসিন্দা আমজাদ হোসেন শিপন জানান, আমাদের জন্য কি কোনো সহযোগিতা নেই, আমরা আর কতকাল ভোগান্তির মধ্য দিয়ে দিন কাটাব। বেশ কয়েক বছর ধরে শুনে আসছি অবহেলিত এই সড়কের কাজ হবে। কিন্তু কবে এই সড়কের কাজ হবে সেটা নিয়ে শঙ্কা। স্থানীয় বাসিন্দা লিংকন জানান, আজ থেকে কয়েক বছর পূর্বে যে সড়ক দিয়ে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করত সেই সড়ক খালের গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে ভাবতে খুবই খারাপ লাগে। তবে বিলীন হওয়ার পর থেকে সড়কটি সংস্কারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো নজরদারি না থাকায় স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দা নাসির উদ্দীন কোম্পানি বলেন, সড়কটি দিয়ে এখন পায়ে হেঁটে চলাচল করাও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে অসুস্থ রোগী ও ভারী কোনো জিনিস আনা নেওয়ার ক্ষেত্রে চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েন তিন গ্রামের মানুষ। স্কুলছাত্রী ফারিয়া আক্তার বলেন, সড়কটি ভেঙে যাওয়ার পর থেকে স্কুলে যাওয়ার সময় ভয়ে ভয়ে যেতে হয়। ঝুঁকিপূর্ণ সড়কটি দ্রুত সংস্কার করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট বিশেষ অনুরোধ জানাচ্ছি। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা কামাল পাশা বলেন, সড়কটি সংস্কারের বিষয়ে সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে অবহিত করলে তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রাম জোনের প্রধান প্রকৌশলী বরাবর ডিও লেটার দেন। আশা করি শিগগিরই এ বিষয়ে সুখবর পাব। হিঙ্গুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দীন হারুন বলেন, বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে এবং ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের পক্ষ থেকে ডিও লেটার দেওয়া হয়েছে। তবে সড়কের কাজের দায়িত্ব যদি এলজিইডি অথবা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকত তাহলে আরও অনেক আগে সংস্কার হয়ে যেত। কারণ এটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে হওয়ায় একটু সময় লাগছে, আশা করি অচিরেই কাজ হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রাম জোনের সার্কেল-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদুজ্জামান খান বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি নিশ্চিত হয়েছি এবং উপ-বিভাগীয় সহকারী প্রকৌশলীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আমাদের টিম ঘটনাস্থলে যাবে এবং আমরা কাজটি দ্রুত সম্পন্ন করতে চেষ্টা করব।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর