নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার প্রধান অর্থকরী কৃষিপণ্য ধান অর্থনীতিতে ভূমিকা পালন করে আসছে। এখানকার মানুষের অন্যতম আয়ের উৎস ধান-চাল। দেশের উত্তরাঞ্চলের অন্যতম ধান উৎপাদনকারী এ উপজেলায় বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে আউশের আবাদ হয়েছে। চলতি মৌসুমে ৬৫ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ। আনুমানিক বাজারমূল্য ১৫০ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। বর্তমানে শেষ মহূর্তের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন আউশ চাষিরা। প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা কোনো বিপর্যয় না ঘটলে কৃষকের বাড়ির আঙ্গিনা ভরে উঠবে সোনালি ধানের হাসিতে। আগামী ১০-১২ দিনের মধ্যে কাটা-মাড়াই শুরু হবে। নতুন ধান উঠবে কৃষকের গোলায়। গৃহস্থ আর কিষান-কিষানিরা গোলা ও আঙ্গিনা পরিষ্কার করায় ব্যস্ত। কৃষকরা বলছেন, আউশ চাষ বৃষ্টিনির্ভর হওয়ায় সেচ খরচ লাগে না। সার-কীটনাশকও খুবই কম প্রয়োগ করতে হয়। ফলে তুলনামূলক খরচ কম, লাভ বেশি। জানা যায়, খারিপ-১, ২০২১-২০২২ মৌসুমে উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ৩০টি ব্লকে ১৩ হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে আউশের আবাদ হয়েছে। এ পরিমাণ জমি থেকে ধান উৎপাদন হবে ৬৫ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন। আউশ চাষ বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষি বিভাগ প্রণোদনা হিসেবে বিনামূল্যে ১ হাজার ৫০০ জন কৃষকের প্রত্যেককে ৫ কেজি বীজ, ২০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার সরবরাহ করেছে। এ ছাড়া চাষিদের উদ্বুদ্ধ করতে রাজস্ব অর্থায়নে ১৫টি প্রদর্শনীও স্থাপন করেছে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর।
উপজেলার সিদ্দিকপুর এলাকার কৃষক রহমত আলী, খাইরুল ইসলাম ও তোফাজ্জল হোসেন বলেন, খেতে রোগ-বালাই ও পোকা-মাকড় আক্রমণ করতে পারেনি। বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে কাটা-মাড়াই শুরু হবে। এবারও অধিক ফলন হবে বলে আশা করছেন তারা। মহাদেবপুর উপজেলা কৃষি অফিসার অরুণ চন্দ্র রায় বলেন, মাঠ পর্যায়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা আউশ আবাদে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছেন। ভূগর্ভস্থ পানির অপচয় রোধ করে বৃষ্টির পানি কাজে লাগিয়ে আউশ আবাদ জনপ্রিয় করতে কৃষি মন্ত্রণালয় বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়েছে। তিনি আরও বলেন, কৃষকরা যাতে লাভবান হতে পারেন এবং কোনো সমস্যায় না পড়েন এজন্য তারা সার্বক্ষণিক নজর রাখছেন। এবারও বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছেন তিনি।
