বুধবার, ১১ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

জাহাজমারা দিবস আজ

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

আজ ১১ আগস্ট। জাহাজমারা দিবস। মহান স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এক গৌরবোজ্জ্বল দিন। জাহাজে আক্রমণ ও দখলের ঘটনাকে মুক্তিযুদ্ধের টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর মরণাস্ত্র, গোলাবারুদ, জ্বালানি ও রসদ বোঝাই সাতটি যুদ্ধজাহাজ নারায়ণগঞ্জ থেকে উত্তরবঙ্গে যাচ্ছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময় টাঙ্গাইলের যমুনা ধলেশ্বরী নদীপথে মাটিকাটা নামক স্থানে নদীপথের দায়িত্বে ছিলেন কাদেরিয়া বাহিনীর সাহসী কোম্পানি কমান্ডার হাবিবুর রহমান বীরবিক্রম।

তিনি তার দূরদর্শিতা ও অল্প কয়েক জন সাহসী মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে জীবনবাজি রেখে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দুটি অস্ত্রবোঝাই জাহাজ এসইউ ইঞ্জিনিয়ার্স এলসি-৩, ও এসটি রাজন ধ্বংস করে  দেন। এর মাধ্যমে হানাদারদের পরিকল্পনা নস্যাৎ হয়ে যায়। জাহাজগুলো আক্রমণ ও দখল করে ২১ কোটি টাকা মূল্যের অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ মুক্তিযোদ্ধাদের হস্তগত হয়েছিল। দীর্ঘ ৯ মাসে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীদের সামগ্রিকভাবে অন্য কোথাও মুক্তিবাহিনীদের হাতে এত বড় ক্ষতি ও বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে হয়নি। পরে যুদ্ধজাহাজ ও অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করার জন্য পাকিস্তানি কমান্ড্যান্ট লে. জেনারেল আমির আব্দুল্লাহ খান নিয়াজি ও ব্রিগেডিয়ার কাদের খানের নেতৃত্বে ৪৭ ব্রিগেড, ৫১ কমান্ডো ব্রিগেড ও হানাদার বিমান বাহিনীর দুটি এফ-৮৬ স্যাবর জেট বিমান দ্বারা মুক্তিবাহিনীর ওপর চতুর্দিক থেকে আক্রমণ করা হয়। হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বের কাছে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয়। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এই যুদ্ধকে পটপরিবর্তনকারী অধ্যায় বা টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে গণ্য করা হয়। মহান মুক্তিযুদ্ধে কমান্ডার হাবিবুর রহমানের বলিষ্ঠ সাহসিকতা ও নেতৃত্বের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ‘বীরবিক্রম’ ও ‘জাহাজমারা হাবিব’ উপাধিতে ভূষিত করেন। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষক ও লেখক জুলফিকার হায়দার বলেন, জাহাজমারার ঘটনাটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের একটি স্মরণীয় অধ্যায়। এর ফলে আমাদের বিজয় ত্বরান্বিত হয়েছে। টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের সিরাজকান্দিতে জাহাজমারার ঘটনাটি নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে একটি স্মৃতি স্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে। আর এতে নেতৃত্বদানকারী কমান্ডার হাবিবুর রহমান ছিলেন একজন দুঃসাহসিক যোদ্ধা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর