বৃহস্পতিবার, ১২ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল ও মেশিনারি সংকট

লক্ষীপুর প্রতিনিধি

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল ও মেশিনারি সংকট

লক্ষীপুরের কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল ও মেশিনারি সংকট চলছে দীর্ঘদিন ধরে। এতে করে স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। কাক্সিক্ষত সেবা বঞ্চিত হয়ে চরম ভোগান্তির শিকার এখানকার সাধারণ মানুষ। সংকট নিরসনসহ স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতের দাবি জানান রোগী ও স্বজনরা। কর্তৃপক্ষ বলছেন, স্বল্প সংখ্যক জনবলে বিশাল জনগোষ্ঠীর সেবায় হিমশিম খেতে হয় তাদের। জানা যায়, মেঘনা উপকূলীয় এলাকা লক্ষীপুরের রামগতি উপজেলার ৩ লাখ জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য সেবায় ১৯৭৪ সালে কমলনগরের করইতলায় ২০ শয্যার হাসপাতাল নির্মাণ করে সরকার। এরপর ৩১ শয্যা ও পরবর্তীতে ২০১৫ সালে হাসপাতালটিকে ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণ করা হয়। বর্তমানেও এ উপজেলার প্রায় ৩ লাখ জনগোষ্ঠীর প্রধান চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র এটি। প্রতিদিন স্থানীয় নারী-শিশুসহ ৪০০ থেকে ৫০০ রোগী এ হাসপাতালের ইনডোর ও আউটডোরে চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। করোনার এই মহা সংকটে উপচে পড়া ভিড় রয়েছে এখন হাসপাতালটিতে। এখানে দীর্ঘদিন ধরে জনবল ও মেশিনারি সংকট রয়েছে। হৃদরোগ, হাড়, চক্ষু, চর্ম ও প্রসূতি সার্জারিসহ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। ৫০ শয্যার হাসপাতাল হিসেবে চিকিৎসক (মেডিকেল অফিসার) ২৬টি পদের মধ্যে শূন্য এখন ১৭টি পদ, কনসালটেন্ট আটটি পদের সাতটি শূন্য। নার্স ৪৫টি পদের ৩৭টি শূন্য রয়েছে। এদিকে টেকনিশিয়ানের অভাবে এক্স-রে, ইসিজি, এনেসথেসিয়া মেশিন চালু করা যাচ্ছে না। পরিচ্ছন্নতাকর্মী, নৈশপ্রহরী, সুইপার ও টিকিট ক্লার্ক পদগুলোতে জনবল শূন্য থাকায় হাসপাতালের পরিবেশ রক্ষাসহ সার্বিক চিকিৎসা সেবা মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বিশাল জনগোষ্ঠীর সেবায় হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। গতকাল হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে বিপুল সংখ্যক রোগী ও স্বজনরা হাসপাতালের ভিতর বাইরে অবস্থান করছেন। করোনা ঝুঁকি উপেক্ষা করে গাদাগাদি অবস্থায় স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না কেউ। টিকা গ্রহণে এসেছে কেউ কেউ অনেকে রোগী হিসেবে আবার কেউবা রোগীর সহযোগী স্বজন হিসেবে হাসপাতালে অবস্থান করতে দেখা গেছে। এ সময় রোগী ও স্বজনদের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, হাসপাতালটির জন্মলগ্ন থেকে এখানে আল্ট্রাসনোগ্রাফি মেশিন নেই, দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে এক্স-রে মেশিন নষ্ট ছিল, এখন ঠিক থাকলেও টেকনেশিয়ানের অভাবে বন্ধ কক্ষে তা অচল হয়ে পড়ে আছে। অন্য যন্ত্রপাতিরও অভাব রয়েছে এ হাসপাতালে। এমন পরিস্থিতিতে নানা রোগে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা পড়তে হচ্ছে বিপাকে। বাধ্য হয়ে তারা বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা বাড়তি খরচ দিয়ে বাইরে করেন বলে জানান। হাসপাতালের ওষুধপত্রও না পাওয়ার অভিযোগ করেন অনেকে। এতে ভোগান্তির শিকার হন বলে জানান তারা। কেউ কেউ হাসপাতালের ময়লা আবর্জনাসহ চরম অব্যবস্থাপনা ও চিকিৎসক না পেয়ে কাক্সিক্ষত সেবা না পাওয়ার অভিযোগ করেন। যেসব চিকিৎসক আছেন তাদেরকেও ঠিকমতো হাসপাতালে না পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে রোগীদের। খুব দ্রুত সমস্যা ও সংকটের সমাধান চান তারা। জানতে চাইলে কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মীর মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম (মঞ্জু) বলেন, সল্প সংখ্যক জনবল দিয়ে বিশাল জনগোষ্ঠীর সেবা করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাছাড়া আল্ট্রাসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতির অভাবে সেবা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে বলে জানান তিনি। জনবল নিয়োগ ও যন্ত্রপাতি সরবরাহ হলে সংকট কাটবে বলে মতামত ব্যক্ত করেন এ কর্মকর্তা।

সর্বশেষ খবর