শুক্রবার, ১৩ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

২৩ বছরেও পূর্ণতা পায়নি গাইবান্ধা বিসিক শিল্পনগরী

গৌতমাশিস গুহ সরকার, গাইবান্ধা

২৩ বছরেও পূর্ণতা পায়নি গাইবান্ধা বিসিক শিল্পনগরী

গাইবান্ধা শহরের পাশে ধানঘড়া এলাকায় ১৯৯৮ সালে ১৫ একর জমির উপর বিসিক শিল্পনগরী গড়ে তোলা হয়। এখানে ১০৫টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৪ শিল্প উদ্যোক্তাকে। কিন্তু এরমধ্যে কারখানা চালু হয়েছে ৩২টি। যার অর্ধেকই লাভের মুখ দেখেনি। আর উৎপাদনে নেই ২২টি শিল্প ইউনিট। আর্থিক সংকটসহ উপযুক্ত শিল্পোদ্যোক্তা না থাকায় এরকম সমস্যা দীর্ঘদিন থেকেই চলছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন। বিসিক সূত্রে জানা গেছে, এখানে জৈব সার, জুতার কারখানা, চিঁড়ার মিল, রাইস মিল, তারকাটা, রশি, সরিষার তেল, মাছ সংরক্ষণ, তুলা, হোমিও ওষুধ তৈরির শিল্প প্রতিষ্ঠান আছে। ব্যবসায়ীরা জানান, শিল্প নগরীতে অবকাঠামোগত উন্নয়নের ঘাটতি আছে। অভ্যন্তরীণ রাস্তাগুলো ভাঙাচোরা, সীমানা প্রাচীর নেই,  ড্রেন নিয়মিত পরিষ্কার হয় না, বর্জ্য শোধনাগার ও ডাম্পিং ইয়ার্ড নেই। গ্যাস সংযোগের সুবিধা না থাকায় বিদ্যুতের উপর নির্ভর করতে হয়। ১৮ বছর ধরে বিদ্যুৎ সমস্যা প্রকট ছিল যা সম্প্রতি সমাধা হয়েছে। তবে গ্যাস সংযোগ থাকলে উৎপাদন খরচ কম পড়তো। এছাড়া ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের বাইরে গাইবান্ধা শহরের অবস্থান হওয়ায় এলাকাটি পকেটে পরিণত হয়েছে। তাই যোগাযোগ ও পরিবহণের ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা আছে। রেল ও নৌপথেও পরিবহনের সুযোগ কম। কাঁচামাল পরিবহন ও উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতকরণে সমস্যা সে কারণেই সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে বিসিক তার নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় প্রতিষ্ঠান প্রতি মাত্র ২ লাখ টাকা ঋণ দিতে পারে। এই সামান্য ঋণের টাকা কোনো কাজে আসে না বলে শিল্প নগরীর কোনো উদ্যোক্তা এই ঋণ নিতেও আগ্রহী হন না। এর বাইরে ব্যাংকগুলোও বড় অঙ্কের টাকা ঋণ দিচ্ছে না। এসব কারণে শিল্প নগরীটি সফলতার মুখ দেখছে না। গাইবান্ধা বিসিক শিল্পনগরী মালিক সমিতির আহ্‌বায়ক প্রতাপ ঘোষ বলেন, এখানে অর্ধেক প্রতিষ্ঠানই ব্যবসায়িকভাবে সফল হতে পারছে না। তাই মাঝে মধ্যেই প্লটগুলোর মালিকানা অন্যের কাছে ছেড়ে দেন তারা। ব্যাংকগুলো শুধুমাত্র অবকাঠামোর উপর ঋণ দিতে চায় যা খুব সামান্য। তাদের যুক্তি যেহেতু প্লটগুলো লিজ নেওয়া তাই বড় অঙ্কের ঋণ দেওয়া সম্ভব নয়। আর বিসিক আমাদের কাছ থেকে বড় অঙ্কের টাকা সার্ভিস চার্জ হিসেবে নিলেও সে অনুযায়ী আমরা সার্ভিস পাই না। সীমানা প্রাচীর না থাকায় নিরাপত্তার সমস্যা আছে। কিন্তু সীমানা প্রাচীর তৈরি করা বিসিকের দায়িত্ব নয় বলে তারা জানিয়ে দিয়েছে। বিসিকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক রবীন চন্দ্র রায় বলেন, নির্দিষ্ট সীমার বাইরে আমরা ঋণ দিতে পারি না। উদ্যোক্তারা চাইলে ব্যাংকগুলোর সঙ্গে আমরা বসে মধ্যস্থতা করতে পারি। দীর্ঘ সময়েও শিল্প নগরী সফলতার মুখ না দেখার কারণ হিসেবে তিনি মূলধন সংকটের পাশাপাশি স্থানীয় উদ্যোক্তাদের শিল্প উদ্যোক্তা হিসেবে অভিজ্ঞতা না থাকার বিষয়টি কাজ করছে বলে মনে করেন।

সর্বশেষ খবর