মঙ্গলবার, ১৭ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

নির্মাণের ১৫ দিনেই বেহাল সড়ক

গাফিলতির কারণে ১০ লাখ টাকার সড়কে কোনো সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে না

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

নির্মাণের ১৫ দিনেই বেহাল সড়ক

সঠিক পরিকল্পনা ও অনিয়মের কারণে নির্মাণের ১৫ দিনের মধ্যেই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত একটি সড়ক। এমন অদ্ভুত একটি সড়কের খোঁজ মিলেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার বিশুক্ষেত্র-গোঙ্গলপুর গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার, পর্যাপ্ত পরিমাণে উপকরণ না দেওয়া, নিচে ভরাট বালু কম দেওয়া ও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না রাখার কারণে সড়কটির এমন বেহাল অবস্থা দেখা গেছে। তারা বলছেন, সঠিক পরিকল্পনার অভাব ও কাজে গাফেলতির কারণে ১০ লাখ টাকার সড়ক কোনো সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে না। গোমস্তাপুর উপজেলার বিশুক্ষেত্র-গোঙ্গলপুর গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকায় দেখা গেছে, হাঁটুভর্তি কাদা, পানি, আবার কোথাও বালুর ভরাট। দুই ধারে ফসলী জমি দেখে মনে হবে মাঝ দিয়ে ছোট ছোট যান চলাচলের মাটির সড়ক। এখানে থাকার কথা ছিল দুই স্তরের মজবুত ইটের হেয়ারিংবন্ড সড়ক। ১৫ দিন আগে আনুমানিক মাত্র ২০০ মিটার এজিং (ইটের তৈরি) সড়কের জন্য এলজিইডি থেকে ব্যয় করা হয়েছে ১০ লাখ টাকা। সরেজমিনে গিয়ে কোনো ইটের সড়ক খুঁজে পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে বিশুক্ষেত্র-গোঙ্গলপুর মাঠে ফসলী জমির পাশেই চলছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণ কাজ। অন্য সড়কের সঙ্গে আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকার সংযোগ স্থাপন ও নির্মাণ সমাগ্রী পরিবহনের কাজে সড়কটি নির্মাণ করা হয়। গোমস্তাপুর উপজেলা এলজিইডি ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে সড়কটি নির্মাণ করে। স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রহমান জানান, এঁটেল মাটির উপর মাটি খুঁড়ে কোনোদিন সড়ক হয়? তাও আবার নিচে বালু ভরাট কম। এভাবে সড়ক টিকবে না। এখন ইট, রড, সিমেন্ট, বালু নিয়ে ট্রাক ও ট্রাক্টরগুলো আসতেই পারছে না। কারণ সড়কে যে ইটগুলো বিছিয়েছিল, তা মাটিতে দেবে গেছে। এই প্রসঙ্গে গোমস্তাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামাল উদ্দীন ম ল বলেন, সড়ক তৈরির সময়েই আমি বলেছিলাম, আগে ইট দিয়ে সড়ক ঘিরতে হবে। তা না হলে পাশের ফসলী জমির পানি ও বৃষ্টির পানি এসে সড়ক নষ্ট হবে। আর সড়ক নির্মাণের পরে তাই হয়েছে। বৃষ্টির পানি এসে সড়ক দেবে গেছে। পরে আমি নিজ খরচে সড়কের পাশ দিয়ে পানি নামার জন্য ড্রেন নির্মাণ করেছি। এদিকে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান জানান, আশ্রয়ণ প্রকল্পের সঙ্গে সংযোগ ও নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে যেতেই সড়কটি নির্মাণ করা হয়েছে। এটি এলজিইডি নির্মাণ করেছে। তবে এর বেশি কিছু বলতে রাজি হননি তিনি। আর গোমস্তাপুর এলজিইডি’র উপজেলা প্রকৌশলী নূরুল আফসার মোহাম্মদ সুলতানুল ইমাম বলেন, পুরাতন মাটির সড়কের উপর ইটের সড়ক নির্মাণ করলে কোনো সমস্যা হয় না। কিন্তু এক্ষেত্রে ধানের জমির উপর দিয়ে সড়কটি করা হয়েছে। ফলে নরম কাদা মাটিতে সড়ক করার কারণে গাড়ি চলতে গিয়ে দেবে গেছে। সব নিয়ম মেনে সড়কটি নির্মাণ করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

সর্বশেষ খবর