মঙ্গলবার, ১৭ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

আলোর মুখ দেখেনি শিশুপার্ক

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

আলোর মুখ দেখেনি শিশুপার্ক

ঠাকুরগাঁওয়ের শহরজুড়ে নেই কোনো বিনোদন কেন্দ্র। শিশুদের জন্যও গড়ে উঠেনি কোনো খেলার পার্ক। এতে করে জেলা পরিষদের শিশুপার্ক বানানোর ঘোষণার পর  থেকেই উচ্ছ্বসিত ছিল শহরবাসী। তবে ১১ বছর পেরিয়ে  গেলেও আলোর মুখ দেখেনি পার্কটি। জানা যায়, শিশুদের বিনোদনের জন্য ২০১০-১১ অর্থবছরে শহরের টাঙ্গন নদীর ধারে একটি শিশুপার্ক নির্মাণের কাজ শুরু করে জেলা পরিষদ। সে সময় ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে মাটি ভরাট, প্রাচীর নির্মাণ, প্রবেশ গেট ও টিকিট কাউন্টার নির্মাণ করা হয়। কিন্তু এরপর অজানা কারণেই থেমে যায় সেই পার্ক নির্মাণের কাজ। সরেজমিন দেখা যায়, দীর্ঘ ১০ বছরেও পার্কটিতে রাইডার বা খেলার সরঞ্জাম স্থাপন করা হয়নি। পার্কের ভিতরটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পরে আছে। পাশের নির্মাণাধীন একটি সেতুর কিছু সরঞ্জাম পার্কের একপ্রান্তে রাখা। ঠাকুরগাঁও শহরে শিশুদের জন্য কোনো বিনোদনের ব্যবস্থা না থাকায় শহরের বাসিন্দারা এখনো স্বপ্ন দেখছেন এই পার্কটি নিয়ে। পার্কের পাশেই সদ্য নির্মিত টাঙ্গন সেতুতে সন্তান নিয়ে ঘুরতে এসেছিলেন কলেজপাড়া এলাকার বাসিন্দা আব্দুল্লাহ আল মামুন। তার সঙ্গে কথোপকথনে তিনি বলেন, বাচ্চাদের সবসময় বাসায় বন্দী করে রাখা তো ঠিক না। একটু বাইরে ঘুরতে নিয়ে এসেছি। দুঃখজনক বিষয় এ শহরে কোনো শিশু বিনোদন কেন্দ্র নেই।  তাদের খেলার জন্য নির্দিষ্ট কোনো মাঠও নেই। শিশু পার্কটি হলে একটু ভালো হয়। প্রতিদিন বিকালে শহরের  জেলা স্কুল বড় মাঠে গেলেই অনুমান করা যায় শহরের চিত্র। মাঠের অর্ধেকে খেলা চলছে। বাকি অর্ধেকে শহরবাসীর ভিড়। সঙ্গে তাদের শিশু সন্তান। বিনোদন  কেন্দ্রের অভাবে এই খোলা মাঠে একটু মুক্ত বাতাস নিতেই ছুটে আসা তাদের। তবে সেখানেও মুক্ত বাতাস  নেই। রয়েছে শুধু মানুষের ভিড়। সমাজকর্মী সুবর্ণা খানম বলেন, বিগত ২০১০ সালে যখন জানতে পারি ঠাকুরগাঁও জেলা পরিষদ একটি শিশুপার্ক করছে। তখন এটা দেখে বেশ ভালো লেগেছিল। আমাদের শহরে শিশুদের বিনোদনের জন্য একটি পার্ক প্রয়োজন। কিন্তু এই ১১ বছরেও ওটা আর সম্পন্ন হলো না। যদি সম্ভব হয়, দ্রুতই এই শিশুপার্কটির কাজ শেষ করে শিশুদের জন্য উন্মুক্ত করা উচিত। না হলে নতুন প্রজন্মের স্বাভাবিক বিকাশ নিয়ে শঙ্কায় থাকতে হবে। ঠাকুরগাঁও  জেলা শিশুবিষয়ক কর্মকর্তা জাবেদ আলী বলেন, ‘শিশুদের বিনোদনের মধ্যে প্রধান হলো খেলার মাঠে বা  খোলা জায়গায় সহপাঠী এবং বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে  খেলাধুলা করা।

 শিশুদের যদি ঘরে আবদ্ধ রেখে শুধু টিভি, অনলাইন বা কম্পিউটার বিনোদনের মধ্যে রাখা হয় তাহলে সে বিচ্ছিন্ন জীবনযাপনে অভ্যস্থ হয়ে পড়বে।  জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাদেক কুরাইশি জানান, জেলা পরিষদের পক্ষে অর্থায়ন সম্ভব না হওয়ায় ব্যক্তিগতভাবে শিশুপার্ক করার জন্য লিজ দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই ব্যক্তিগতভাবে শিশুপার্কের কাজ শুরু হবে।

সর্বশেষ খবর