শুক্রবার, ২০ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

চিকিৎসক সংকটে ৪ লাখ মানুষ সেবাবঞ্চিত

মনিরুল ইসলাম মনি, সাতক্ষীরা

চিকিৎসক সংকটে ৪ লাখ মানুষ সেবাবঞ্চিত

সাতক্ষীরার তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স -বাংলাদেশ প্রতিদিন

ডাক্তার সংকটে সাতক্ষীরার তালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসাসেবা ভেঙে পড়েছে। গাইনি, নাক-কান-গলা, শিশু, প্যাথলজি, রেডিওলজিস্ট ও সার্জারি বিশেষজ্ঞ নেই। চক্ষু ও অ্যানেসথেসিয়া ডাক্তার না থাকায় অপারেশন করতে আসা রোগীদের হাসপাতাল থেকে ফিরে যেতে হচ্ছে। স্বাস্থ্যসেবা বঞ্চিত হচ্ছেন তালা উপজেলার প্রায় ৪ লাখ মানুষ।

৫০ শয্যার সরকারি এ হাসপাতালের কার্যক্রম চলছে ৩০ শয্যার লোকবল নিয়ে। এখানে প্রথম শ্রেণির ২৩টি পদের মধ্যে চিকিৎসকের ১৩টি পদই শূন্য। ফলে খুঁড়িয়ে চলছে চিকিৎসা কার্যক্রম। মেডিকেল টেকনোলজিস্ট রেডিওগ্রাফি এবং রেডিও টেকনোলজিস্ট ডেল্টাল না থাকায় বিপাকে পড়ছেন ভুক্তভোগীরা। নেই সিটিস্কান মেশিন। প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে চিকিৎসা নিতে এসে ডাক্তার না পেয়ে ৩০-৩৫ রোগী ফিরে যাচ্ছেন। এমএলএসের দুটি এবং স্টোর কিপারের একটি পদও শূন্য। অতিরিক্ত আউটসোর্সিংয়ের লোকজন দিয়ে কোনোভাবে চলছে কার্যক্রম। মানুষ করোনার উপসর্গ নিয়ে র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন্ট টেস্ট করাতে এ হাসপাতালে এসে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে অপেক্ষা করতে হয় তাদের। এ ছাড়া বিশেষজ্ঞ ডাক্তার না থাকায় চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগীরা হয়রানির শিকার হন পদে পদে। সরেজমিন দেখা যায়, হাসপাতালের দুটি এক্স-রে মেশিনের একটি অচল। অন্যটি সচল থাকলেও কোনো মতে চলছে। চারটি প্যাথলজি পদের বিপরীতে লোক আছেন মাত্র একজন। বাধ্য হয়ে রোগীরা বাইরের ক্লিনিক থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাচ্ছেন। এতে তাদের বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে। সার্জারি বিশেষজ্ঞ বা অ্যানেসথেসিয়া ডাক্তার না থাকায় অপারেশন থিয়েটারটি বহুদিন ধরে বন্ধ। সিজারসহ কোনো সাধারণ অপারেশনও হয় না এখানে। পাঁচজন পরিচ্ছন্নতাকর্মীর স্থালে রয়েছেন একজন। নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাবে হাসপাতালে স্তুপ হয়ে আছে আবর্জনা। একটি অত্যাধুনিক জেনারেটর মেশিন থাকলেও তার কার্যকারিতা নেই। অথচ প্রতি মাসে এর পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় সরকারি কোষাগারে দেখিয়ে বিল তোলা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। প্যারামেডিকেলের পাঁচটি পদও ফাঁকা। একজন দন্ত চিকিৎসক থাকলেও পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি না থাকায় শুধু দাঁত উঠানো ছাড়া অন্য চিকিৎসা দেওয়া হয় না। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাজিব সরদার বলেন, ‘পর্যাপ্ত ডাক্তার না থাকায় তিনি বিপাকে পড়েছেন। এই মুহুর্তে শূন্য পদে ডাক্তার ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী প্রয়োজন। চিকিৎসক সংকট দূর হলে মানুষ কাক্সিক্ষত সেবা পাবেন। সমস্যা সমাধানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়েও বিষয়টি জানানো হয়েছে।’

সর্বশেষ খবর