রবিবার, ২২ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

অতি বৃষ্টিতে পচে গেছে আমনের বীজতলা

গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

অতি বৃষ্টিতে পচে গেছে আমনের বীজতলা

পর পর বঙ্গোপসাগরে লঘু চাপের প্রভাবে অতিরিক্তি বৃষ্টিপাতে গলাচিপার কৃষকদের হয়েছে মরণদশা। আমন ধানের অধিকাংশ বীজতলার ধানবীজ পচে যাওয়ায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে কৃষকদের ঘরে ঘরে চলছে বোবা কান্না। এ অবস্থায় তারা না পাচ্ছে সরকারি সহায়তা না পাচ্ছে স্থানীয় কৃষি বিভাগের সহায়তা। কৃষকরা ধানচারা সংগ্রহের জন্য হন্যে হয়ে গ্রাম থেকে গ্রামান্তর এমনকি অন্য উপজেলায়ও ধানচারা সংগ্রহের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছেন। কোথাও কিছু চারা পাওয়া গেলেও তার দাম আগুন ছোঁয়া। এক মণ অর্থ্যাৎ ৪৮ কেজি ধানের বীজতলার মূল্য ৫ থেকে সাড়ে ৫ হাজার দরে কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। এত উচ্চদামে ধানচারা কেনার কারণ হিসেবে কৃষকরা জানান, মৌসুমের শেষ সময় এখন নতুন করে বীজতলা তৈরি করে সে চারা খেতে রোপণের উপযোগী হতে কমপক্ষে ২০ থেকে ২৫ দিন সময় লাগবে। সে জন্য উচ্চদামে তারা চারা সংগ্রহে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।

.স্থানীয় কৃষি দফতর সূত্র জানায়, এ বছর বর্ষা মৌসুমে আমন আবাদের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৩৩ হাজার ৫০০ হেক্টর। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৬৭ হাজার ৫ মেট্রিক টন। তবে কৃষি বিভাগ বলছে শতকরা ১০ ভাগ বীজতলার বীজ নষ্ট হয়ে গেছে। কিন্তু কৃষকরা বলছে ভিন্ন কথা। তারা বলছে শতকরা ৭০ থেকে ৭৫ ভাগ বীজতলার বীজ সম্পূর্ণ পচে গেছে। আংশিক পচে গেছে আরও ৫ থেকে ১০ ভাগ। এ অবস্থা সৃষ্টির ফলে অনেক জমি অনাবাদী থাকার আশঙ্কা রয়েছে।  এদিকে কৃষকদের ব্যাপক চাহিদার কারণে গত এক সপ্তাহে গলাচিপা উপজেলা সদরের বিভিন্ন কোম্পানির বীজ বিক্রেতাদের গুদামের বীজ বিক্রি হয়ে গেছে। গুদামগুলো হয়ে পড়েছে ফাঁকা। বীজ বিক্রেতা আল আমিন জানান, গত কয়েক বছরেই আমন ধানের বীজের এত চাহিদা ছিল না। এতদিন কৃষকরা নিজস্ব উৎস থেকে ধান দিয়ে বীজতলা তৈরি করছিল। এ বছর অতিরিক্ত বর্ষার কারণে অধিকাংশ কৃষকের বীজতলার বীজ পচে গেছে। উপজেলার পানপট্টি ইউনিয়নের গ্রামর্দ্দন গ্রামের আবদুস সোবাহান গাজী জানান, তিনি ৫ একর জমি রোপণ করার জন্য ৫০ শতাংশ জমিতে বীজতলা তৈরি করেছিলেন। কিন্তু অতিরিক্ত বর্ষার কারণে সব বীজ পচে যায়। এত উচ্চমূল্যে ধানচারা কিনে তার পক্ষে জমি রোপণ করা সম্ভব হবে না বলে তিনি জানান। গলাচিপা সদর ইউনিয়নের কৃষক আবদুস সালাম গাজী, আমিরুল ইসলাম জানান, তারা ৬০ শতক জমিতে আমন ধানের বীজতলা তৈরি করেছেন। তাদের বীজতলার অধিকাংশ বীজ পচে গেছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরজু আক্তার জানান, এ এলাকা এমনিতেই দুর্যোগপ্রবণ এলাকা। উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে কৃষকরা আমন ধানের বীজতলা তৈরি করেছিল ২ হাজার ৩৩৩ হেক্টর জমিতে। লঘুচাপের প্রভাবে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে ৫৭ দশমিক ৪৫ হেক্টর জমির বীজতলা সম্পূর্ণ পচে গেছে। তবে এ অবস্থা সামাল দিতে সব ধরনের প্রচেষ্টা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।  

সর্বশেষ খবর