সোমবার, ৩০ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা
হত্যা রহস্য উদ্ঘাটন

ঘাড় মটকে খুন করা হয় মতিনকে

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

ঘাড় মটকে খুন করা হয় মতিনকে

হত্যার আড়াই মাস পর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সিরাজগঞ্জের তাড়াশের ইলেকট্রিক মিস্ত্রি আব্দুল মতিন খুনের রহস্য উদঘাটন করেছে। একই সঙ্গে হত্যাকান্ডে জড়িত দুই আসামিকে  গ্রেফতার করেছে। তারা হলো-সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার তালম পান্ডুরা পাড়া গ্রামের আরিফুল ইসলাম (৩১) ও একই উপজেলার গুল্টা মিশনপাড়া এলাকার নিরাঞ্জন তির্কী। আরিফের চেয়ে খুনের শিকার মতিনের ব্যবসা ভালো হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে মতিনকে ঘাড় মটকে হত্যা করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা খুনের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছে। গতকাল সিরাজগঞ্জ পিবিআই কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম এ তথ্য জানান। তিনি জানান, গত ১৬ জুন তাড়াশ উপজেলার গুল্টা বাজার দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের টয়লেট থেকে গুল্টা পদ্মপাড়া গ্রামের ফজলার রহমানের ছেলে ইলেক্ট্রিক মিস্ত্রি আব্দুল মতিনের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আব্দুল মতিনের ভাই  মোতালেব বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি উল্লেখ করে তাড়াশ  থানায় হত্যা মামলা করে। এরপর গত ১৯ জুন পিবিআই মামলার দায়িত্বভার গ্রহণ করে। পিবিআইয়ের এসআই আব্দুল খালেক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ২৫ আগস্ট ৪ জনকে আটক করে। এর মধ্যে আসামি আরিফুল ইসলাম ও নিরাঞ্জন তির্কী হত্যার দায় স্বীকার করেন।

আসামিদের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার জানান, হত্যাকান্ডের শিকার ইল্ট্রেটিক মিস্ত্রি আব্দুল মতিন ও আসামি আরিফুল ইসলাম দুজনের গুল্টা বাজারে ইলেক্ট্রনিক্স দোকান ছিল। কিন্তু আসামি আরিফুলের চেয়ে মতিনের দোকানে কাস্টমার বেশি হওয়ায় আরিফুল তার উপর ক্ষুব্ধ হয়। এ কারণে তাকে শায়েস্তা করার সিদ্ধান্ত নেয়। অন্যদিকে নিরাঞ্জন যখন বাড়িতে থাকে না তখন রাতে তার বাড়িতে কে বা কারা বাড়ির ঘরে টোকা দেয়। পরে তার বউকে উত্ত্যক্ত করে। আরিফ কৌশলে নিরাঞ্জন ও তার বউকে বলে কাজটি আব্দুল মতিন করেছে। এ জন্য দুজনই ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়।

পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৬ জুন রাত ১টায় মতিন দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফেরার পথে আরিফুল ও নিরাঞ্জনসহ অন্য আসামিরা তার গতিরোধ করে। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে মতিন এবং আরিফ একে অপরের গলা চেপে ধরলে অন্য আসামিরা আরিফুলকে বাঁচাতে মতিনের হাত ছাড়িয়ে দেয়। তারপর আরিফুল সহযোগী নিরাঞ্জনের সহায়তায় মতিনকে মাটিতে ফেলে ঘাড় মটকে দেয়। অন্য আসামিরা মতিনের হাত পা মাটিতে চেপে ধরে যাতে সে নড়তে না পারে। কিছুক্ষণ পরে আব্দুল মতিন নিস্তেজ হয়ে পড়ে। ঘটনার সময় অন্যলোক যাতে না আসে সেজন্য অপর দুইজন সহযোগী আসামি রাস্তায় পাহারা দেয়। আসামিরা মৃত মতিনকে নিয়ে প্রথমে নিরাঞ্জনের বাড়িতে ১০-১৫ মিনিট রাখার পর মৃতদেহটি আরিফ, নিরাঞ্জন ও অন্যান্য সহযোগী আসামিরা ধরাধরি করে গুল্টা বাজার সংলগ্ন দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের টয়লেটে ফেলে দেয়। সংবাদ সম্মেলনে সংবাদকর্মীসহ পিবিআই পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর