মঙ্গলবার, ৩১ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

নওগাঁয় বারোমাসি তরমুজ কারিশমা চাষে সাফল্য

বাবুল আখতার রানা, নওগাঁ

নওগাঁয় বারোমাসি তরমুজ কারিশমা চাষে সাফল্য

নওগাঁয় বারোমাসি কারিশমা জাতের তরমুজ চাষে সাফল্য লাভ করেছেন কৃষকরা। দেশের শস্যভান্ডারখ্যাত নওগাঁ জেলা। এ জেলার বদলগাছীর ছোট যমুনা নদী বিধৌত এ উপজেলা প্রচুর পরিমাণে ধান উৎপাদনের পাশাপাশি আলু, পটোল, কাঁচামরিচ, লাউসহ সব প্রকার সবজি চাষেও সমৃদ্ধ। আমের বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলা নাক ফজলী আমের জন্যও বিখ্যাত। সম্প্রতি উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সার্বিক সহযোগিতায় বারো মাস চাষযোগ্য কারিশমা জাতের তরমুজ চাষে ব্যাপক সফলতা পেয়েছে এক কৃষক। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় তরমুজের চাষ হয় না বললেই চলে। তরমুজের ক্ষেত্রে পুরোপুরিই বাইরের জেলা থেকে আমদানিনির্ভর এ উপজেলা। এ আর মালিক সিডস নামের একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান জাপানের সাকাতা থেকে কারিশমা জাতের তরমুজের বীজ নিয়ে আসে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সার্বিক সহযোগিতায় প্রদর্শনী প্রকল্প হিসেবে পরীক্ষামূলকভাবে একজন কৃষক হাইব্রিড জাতের এই কারিশমা তরমুজ চাষ করে। পরীক্ষামূলক চাষেই ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন কোলা ইউপির ভোলার পালশা গ্রামের কৃষক আরমান হোসেন। ঘন ও মাচাং পদ্ধতিতে এক বিঘা জমিতে কারিশমা জাতের বারোমাসি তরমুজের চারা রোপণ করা যাবে ১ হাজার থেকে ১২০০টি। রোপণের ৬০ থেকে ৬৫ দিনের মধ্যেই এই তরমুজ বিক্রয়ের উপযোগী হয়। এক থেকে দেড় ফুট দূরত্বে রোপণকৃত প্রতি গাছে ফল হয় তিন থেকে চারটি। প্রতিটির ওজন আড়াই থেকে তিন কেজি। কৃষক আরমান হোসেন বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে ও সার্বিক সহযোগিতায় আমি তরমুজের চাষাবাদ করছি। জুন মাসের শুরুতে ২৫ শতক জমিতে ৪০০টি কারিশমা জাতের তরমুজের চারা রোপণ করেছি। গাছগুলো বেশ ভালোভাবেই বেড়ে উঠেছে। চারা রোপণের দুই মাস পর থেকেই আমি ফল বিক্রি শুরু করেছি। তিনি আরও বলেন, ২৫ শতক জমিতে মোট খরচ হয়েছে ২৫ হাজার টাকা। জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে তরমুজ বিক্রি শুরু করেছি। ৪০ টাকা কেজি দরে ৩০০ কেজি তরমুজ বিক্রি করেছি। সবকিছু ঠিক থাকলে আমার যে পরিমাণ গাছ আছে তা থেকে আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার কেজি ফলন হবে। দাম হবে ১ লাখ টাকারও বেশি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসান আলী বলেন, তরমুজ অনেক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ একটি ফল। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, সি, পটাশিয়াম ও আঁশ আছে। যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। কারিশমা জাতের হাইব্রিড এ তরমুজ চাষে অল্প সময়ে ও অল্প খরচে অধিক লাভবান হওয়া যায়।

প্রদর্শনী প্রকল্প হিসেবে চাষাবাদ করে আমরা ব্যাপক সফলতা পেয়েছি। এ জাতের তরমুজ বারো মাস চাষ করা যায়। কারিশমা জাতের তরমুজের বাজারমূল্যও বেশি। এ উপজেলার কৃষকদের কারিশমা জাতের তরমুজ চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। বেশি পরিমাণে চাষাবাদ হলে আমরা এর জন্য একটা বাজার  তৈরি করতে পারব। এতে করে কৃষক খুব সহজেই ভালো দামে বিক্রি করতে পারবে।

 

সর্বশেষ খবর