রবিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

কর্মচঞ্চল আখাউড়া স্থলবন্দর

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

কর্মচঞ্চল আখাউড়া স্থলবন্দর

দীর্ঘদিন পর কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর। সম্প্রতি এ বন্দর দিয়ে গম ও পিঁয়াজ আমদানি কার্যক্রম শুরু হওয়ায় সিএন্ডএফ এজেন্ট, আমদানি-রপ্তানিকারক, শ্রমিক-কর্মচারী সবার মাঝে কর্মচাঞ্চল্যতা বেড়েছে। আমাদানিকৃত পণ্য লোড-আন লোডের কাজ করছে দেড় শতাধিক শ্রমিক। হয়েছে ট্রান্সপোর্টের কর্মসংস্থান। এতে ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের মাঝে উৎসাহ উদ্দীপনা বিরাজ করছে। কাজ করার সুযোগ পেয়ে খুশি কর্মহীন হয়ে পড়া শ্রমিকরা। আমদানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রাজস্ব পাচ্ছে সরকার। আদায় হচ্ছে বন্দর মাসুল। জানা যায়, ১৯৯৪ সালে আখাউড়া স্থলবন্দর চালু হয়। ভারতের ত্রিপুরা, আসাম, মেঘালয়সহ সাতটি রাজ্যে প্রবেশের অন্যতম দ্বার হলো আখাউড়া স্থলবন্দর। এ বন্দর দিয়ে হিমায়িত মাছ, শুঁটকি, সিমেন্ট, সয়াবিন তেল, প্লাস্টিক সামগ্রী, পাথরসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় ৪২টি পণ্য ত্রিপুরাসহ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল রাজ্যগুলোতে রপ্তানি হয়ে আসছে। এসব পণ্য রপ্তানি করে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছে বাংলাদেশ। ভারত থেকে আমদানির অনুমতি রয়েছে শুঁটকি, আদা, মরিচ, পিঁয়াজ, তাজা ফলমূল, গবাদিপশু, চুনাপাথর, কয়লা, জিরা, কাগজ, চিনি, চকলেট, কনফেকশনারি দ্রব্যাদিসহ আরও কিছু পণ্য। তবে এ বন্দর দিয়ে রপ্তানি হয় বেশি। সম্প্রতি এ বন্দর দিয়ে আমদানিতে উৎসাহী হয়ে উঠেছেন ব্যবসায়ীরা। স্থলবন্দর সূত্রে জানা গেছে, গত মাসের ৮ তারিখ থেকে এ বন্দর দিয়ে প্রথমবারের মতো গম আমদানি শুরু হয়েছে। ২৯ আগস্ট পর্যন্ত ৮ হাজার ৭২.৩৬ মে. টন গম আমদানি হয়েছে। গমের পর আমদানি শুরু হয়েছে পিঁয়াজ। ঢাকার আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান শওগাত ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল ভারতের থেকে ২৪.২৫০ মে. টন পিঁয়াজ আমদানি করেন। এর আগে গত মাসে ১৫ মে. টন আদা আমদানি হয়। সূত্রে আরও জানা গেছে, ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে এ বন্দর দিয়ে ৬৯৭ কোটি ৭০ লাখ ১ হাজার ৭৫৮ টাকার পণ্য ভারতে রপ্তানি হয়েছে। আমদানি হয়েছে ১ কোটি ৯৯ লাখ ২ হাজার ২১৮ টাকা মূল্যের পণ্য। রাজস্ব আয় হয়েছে ৩২ লাখ ৬৮ হাজার ১৯৮ টাকা। বন্দর মাসুল আদায় হয়েছে ৩৬ লাখ ৫৭ হাজার ৭২২ টাকা। বন্দরের শ্রমিক সর্দার ফরিদুল হুদা বলেন, এ বন্দরে দেড় শতাধিক শ্রমিক লোড-আনলোডের কাজ করে। আমদানি বৃদ্ধি পাওয়ায় শ্রমিকরা আবার কাজ করার সুযোগ পেয়েছে। নিয়মিত আমদানি হলে শ্রমিকরা আরও বেশি কাজ করে আয় রোজগার করতে পারবে। স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সফিকুল ইসলাম বলেন, গম ও পিঁয়াজ আমদানির ফলে দেড় শতাধিক বেকার শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে। ব্যবসায়ীরাও উপকৃত হচ্ছে। দেশের অন্যান্য বন্দরের ন্যায় এ বন্দর দিয়ে সব ধরনের পণ্য আমদানির অনুমোদন পেলে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে এবং ব্যবসায়ীরা লাভবান হবে। তিনি নিষিদ্ধ ব্যতীত সব পণ্য আমদানির অনুমোদন দেওয়ার জন্য সরকারের নিকট দাবি জানান। আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, পিঁয়াজ আমদানি থেকে ৬৬ হাজার ৮৫৮ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। খাদ্যপণ্য হওয়ায় গমে রাজস্ব নেই। তবে ভ্যাট ও ট্যাক্স আদায় হয়েছে।

আখাউড়া স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, স্থলবন্দর বাংলাদেশ সরকারের একটি অন্যতম আয়ের খাত। আমদানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কাস্টমস রাজস্ব আয় করছে, বন্দরের মাসুল আদায় হচ্ছে। এ বন্দর দিয়ে সব ধরনের পণ্য আমদানি হলে বন্দরের কর্মচাঞ্চল্য আরও বৃদ্ধি পাবে। সরকারের রাজস্ব আয়ও অনেক বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করেন তিনি।

সর্বশেষ খবর