বৃহস্পতিবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

নিত্য যানজটে দুর্ভোগ ছয় উপজেলাবাসীর

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

নিত্য যানজটে দুর্ভোগ ছয় উপজেলাবাসীর

যানজটে আটকে থাকে কুমিল্লার ছয় উপজেলার সাধারণ মানুষের যাতায়াত। এই ছয় উপজেলায় প্রায় অর্ধকোটি মানুষের বসবাস। জেলার দাউদকান্দি উপজেলার গৌরিপুর বাজার এলাকায় এক যুগ ধরে যানজটে আটকে থাকে শত শত যানবাহন। প্রতিদিনই এমন দৃশ্য দেখা যায়। দুই জেলার উপজেলাগুলো হচ্ছে- দাউদকান্দি, হোমনা, তিতাস, মেঘনা, মুরাদনগর এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরসহ বিভিন্ন উপজেলা। এই সড়ক দিয়ে প্রায় অর্ধকোটি মানুষ দেশের নানা প্রান্তে যাতায়াত করে থাকে। কিন্তু সড়কটিতে যানজটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হয় এখানকার মানুষকে। সম্প্রতি ওই এলাকায় সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বাজারের পাশের সওজের অনেক জায়গা দখল হয়ে গেছে। জায়গা দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। লিজকৃত জায়গায় স্থায়ী বহুতল ভবন না করার অনুমতি থাকলেও ১০তলা পর্যন্ত ভবন উঠানো হয়েছে। গৌরিপুর তদন্ত কেন্দ্রের পাশে এবং বাজারের আশপাশে এমন বহু জায়গা দখল করে ভবন তুলেছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। ভবনের গাড়ি রাখার কারণে সড়কে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর কুমিল্লার দাউদকান্দির গৌরিপুর স্টেশনের এক কর্মকর্তার যোগসাজশে ওই এলাকায় জায়গা দখল করে ভবন তুলেছে প্রভাবশালীরা।

জায়গা দখল করে ভবন নির্মাণ ও মার্কেট করায় ভবিষ্যতে ওই সড়ক সম্প্রসারণ করা কঠিন হয়ে যাবে বলে স্থানীয়রা জানান। এ ছাড়াও জায়গা দখল করে ভবন করায় এখানে বাড়তি পরিবহনের চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। মার্কেটগুলোর পাশে পরিবহন জটলা পাকাচ্ছে। পাশাপাশি সড়কজুড়ে রিকশা, সিএনজি অটোরিকশা, অটোরিকশা ভিড় করছে। লম্বা সময় যানজট থাকায় সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়ছে সাধারণ মানুষ। সূত্র জানায়, এই সড়ক হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে উঠতে হয় ছয় উপজেলার মানুষকে। চিকিৎসা ও অন্যান্য কাজে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা শহরে যাতায়াতের জন্য এই সড়ককে ভায়া রুট হিসেবে ব্যবহার করেন এখানকার মানুষ।

 কিন্তু দখলদারিত্বের কারণে প্রাণহানিসহ চড়া মূল্য দিতে হয় তাদের। গৌরিপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পাশে গড়ে উঠেছে একটি ১০তলা ভবন। সড়ক ও জনপথ অধিদফতর গৌরিপুরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রমিজ উদ্দিন বলেন, দখলদাররা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।

আমি জায়গা উচ্ছেদে কাজ করছি, দখল নয়। জাল জমির কোনো কিছু আমি বুঝি না। এগুলো ভুয়া কথা। দাউদকান্দির নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম খান বলেন, এ এলাকায় তীব্র যানজট লেগে থাকে। আমরা চেষ্টা করছি। শিগগিরই অভিযান পরিচালনা করা হবে। তিনি আরও বলেন, সরকারের জায়গায় বহুতল ভবন করার নিয়ম নেই। এসিল্যান্ডকে পাঠিয়ে খবর নেব। সড়ক ও জনপথ অধিদফতর কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী রেজা-ই-রাব্বি বলেন, ২০১৫ সালের ভূমি অধিগ্রহণ আইন অনুযায়ী সওজ চাইলেই যে কোনো অবৈধ স্থাপনা যে কোনো মুহূর্তে ভেঙে দিতে পারে। সেখানে অনেক জায়গা দখল আছে। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের সমন্বয়ে আমরা অভিযান চালাব। উপ-সহকারী প্রকৌশলী রমিজ উদ্দিনের বিষয়ে তিনি বলেন, তাকে সম্প্রতি কক্সবাজার বদলি করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, দখলদারদের বিরুদ্ধে ও যানজট নিরসনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সর্বশেষ খবর