বৃহস্পতিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

আলু নিয়ে লোকসানের ভয়

শামীম কাদির জয়পুরহাট

আলু নিয়ে লোকসানের ভয়

আলু নিয়ে লোকসানের ভয়ে আছেন জয়পুরহাটের কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। জেলার বিভিন্ন হাট বাজারে  দাম কম হওয়ায় আলু নিয়ে শঙ্কায় আছেন তারা একই সঙ্গে বেকায়দায় পড়েছেন হিমাগার মালিকরাও। বর্তমান বাজারে ৬০ কেজির এক বস্তা আলুতে লোকসান হচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০  টাকা। ফলে কমে গেছে আলুর বেচা-কেনা। দাম কমে যাওয়ায় লোকসানের ভয়ে জয়পুরহাটের কৃষক ও ব্যবসায়ীরা হিমাগার থেকে আলু তুলছেন না। এতে হিমাগারগুলোতে আলুর স্তুপ জমছে। এমন পরিস্থিতিতে মৌসুম শেষে বিপুল আলু অবিক্রীত থাকার আশঙ্কা করছেন সংশ্নিষ্টরা। কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছর দাম বেশি পেয়ে এবার কৃষকের পাশাপাশি হিমাগারে আলু সংরক্ষণ করে ব্যবসায়ীরা। হিমাগার ভাড়াসহ ৬০ কেজির প্রতিবস্তা আস্টেরিক জাতের আলুতে এবার খরচ পড়েছে এক হাজার টাকা আর দেশি পাকরি জাতের আলুতে খরচ পড়েছে ১২০০ টাকা। কিন্তু বর্র্তমানে প্রতি বস্তা আস্টেরিক আলু ৫০০ এবং পাকরি আলু বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৬০০ টাকায়।  কৃষক ও ব্যবসায়ীরা  জানান, আলু রাখার সময় হিমাগারের মালিকের থেকে ঋণ নিয়েছিলেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। এখন আলু বিক্রি করতে না পেরে হিমাগার মালিক ও ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করা নিয়েও বেকায়দায় পড়েছেন তারা।  দাম কমের পাশাপাশি বাজারে চাহিদা না থাকায় হিমাগারে মজুদের মাত্র ২০ ভাগ আলু বিক্রি হয়েছে। ৮০ ভাগ আলু এখনো মজুদ রয়েছে জেলার হিমাগারগুলোতে। অথচ হিমাগার খালি করার সময়সীমা রয়েছে আগামী ১৫ নভেম্বর। এ অবস্থায় হিমাগারে সংরক্ষণ করা আলু নিয়ে চরম লোকসানে পড়েছেন তারা। গত বছর দাম বেশি হওয়ায় সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণ করলেও লোকসান ঠেকাতে কোনো নজরদারি নেই সরকারের- এমন অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, জয়পুরহাটে এবার ৪০ হাজার ৩১৫ হেক্টর জমি থেকে আলু উৎপাদন হয়েছে ৮ লাখ ৪৫ হাজার ২৯৭ মেট্রিক টন। যার মধ্যে জেলার ১৭ হিমাগারে সংরক্ষিত আলুর পরিমাণ ১ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন। জেলার মোলামগাড়ী বাজারের আলু ব্যবসায়ী বুলবুল হোসেন জানান, মৌসুমের শুরুতে ১১ হাজার বস্তা আলু হিমাগারে রেখেছিলেন। বাজারের বর্তমান অবস্থায় ওই আলু বিক্রির পরও ঋণের টাকা পরিশোধ করতে আরও ৩০ লাখ টাকা পকেট থেকে দিতে হবে। সে কারণে তিনি এক বস্তা আলুও বিক্রি করেননি। একই ধরনের বক্তব্য দেন আরেক ব্যবসায়ী আনিছুর রহমান। তিনি জানান, হিমাগার থেকে ২২ শতাংশ সুদে ঋণ নিয়েছেন তারা। এটি এখন তাদের গলার কাঁটা হয়ে দেখা দিয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর