বৃহস্পতিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পকারখানায় উৎপাদন বন্ধ, কর্মহীন শত শত শ্রমিক

আফজাল, টঙ্গী

রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পকারখানায় উৎপাদন বন্ধ, কর্মহীন শত শত শ্রমিক

গাজীপুরের টঙ্গীতে অবস্থিত রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প কারখানার প্রায় সবকটিই উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ। বস্ত্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক শ্রমিক মালিকানায় হস্তান্তরকৃত কারখানাগুলো বিটিএমসির বেঁধে দেওয়া ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে কিছুদিন চলার পর ৬০ দশকের তৎকালীন সময়ের পুরনো সেই যন্ত্রাংশ বিকল হয়ে পড়ে। এরপর ধীরে ধীরে নিউ মন্নু ফাইন কটন মিলস, নিউ অলম্পিয়া টেক্সটাইলস মিলস, কাদেরিয়া টেক্সটাইলস মিলস এবং নিউ মেঘনা টেক্সটাইল মিলস কারখানাগুলো বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়ে ওঠে। এতে করে শত শত শ্রমিক কর্মচারী কর্মহীন হয়ে পড়েন। তবে টঙ্গীর চারটি বস্ত্রকলের মধ্যে তিনটির উৎপাদন কার্যক্রম বর্তমানে বন্ধ থাকলেও নিউ মেঘনা টেক্সটাইল মিলস এখনো সচল রয়েছে এবং প্রায় ৮০০ শ্রমিক কর্মচারী কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। বন্ধ এসব কারখানার প্রাণ ফিরিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ জরুরি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল। সরকার ঋণ সুবিধা দিলে শ্রমিকরা শতভাগ মালিক হবে। ফের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, বিগত ২০০০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি বস্ত্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত হয় নির্দেশনা। এতে শ্রমিক কর্মচারীদের কাছে রাষ্ট্রায়ত্ত খাতে বস্ত্র মিলের মালিকানা পদ্ধতি ও শর্তাবলি নীতিমালায় হস্তান্তরিত মিলের পরিচালনা (বিএমআরই) কার্যক্রম অর্থায়নের জন্য ব্যাংক কর্তৃক ঋণ সংগ্রহের বিষয়ে উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া সরকার মিল গ্রহীতাদের সহযোগিতা দেওয়ার শর্তে ২০০১ সালের এপ্রিল মাসে শ্রমিক মালিকানায় কারখানাগুলো হস্তান্তর করেন বস্ত্র মন্ত্রণালয়। কিন্তু বিগত ২০ বছরেও ব্যাংক কর্তৃক ঋণ সুবিধা না পাওয়ার ফলে কিছুদিন চলার পর কারখানাগুলো বন্ধ হয়ে পড়ে। এর মধ্যে কাদেরিয়া টেক্সটাইল মিলসের অস্তিত্ববিহীন। নিউ মন্নু ফাইন কটন মিলস, নিউ অলম্পিয়া টেক্সটাইলস মিলসের যন্ত্রাংশ পোকা মাকড়ে খাচ্ছে। উৎপাদন কার্যক্রম একেবারেই বন্ধ। কর্তৃপক্ষ মিলের জায়গায় গোডাউন স্থাপন করে অন্যত্র ভাড়া দিয়ে কোনো মতে চলছে। এ বিষয়ে নিউ মেঘনা টেক্সটাইল মিলসের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ জাহিদ আল মামুন বলেন, মিলটি হস্তান্তরের সময় অতিরিক্ত ঋণের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিটিএমসির রেখে যাওয়া ৪০ কোটি টাকার ঋণ চক্রবৃদ্ধি হারে ১৪২ কোটি টাকা দাঁড়িয়েছে। তিনি আরও বলেন, বিটিএমসির রেখে যাওয়া ৬০ দশকের পুরনো ১৭৬ তাঁত মেশিন মরিচা পড়ে নষ্ট হয়ে আছে। ডাইং বিভাগ ছাড়া অন্যান্য বিভাগ ব্যবহারের অনুপযোগী। আমরা অনেক কষ্ট করে ডাইং বিভাগের আয় দিয়ে প্রায় ৮০০ শ্রমিক কর্মচারীর বেতন ভাতা ও প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো উন্নয়ন, কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নুতন যন্ত্রাংশ ক্রয় করে বাজারে টিকে রয়েছি। শ্রমিক মালিকানায় এই কারখানাগুলো যাতে ভালোভাবে চালাতে পারে সেই জন্য আমরা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

সর্বশেষ খবর