রবিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

সারের সংকটে শঙ্কিত চাষিরা

কামরুজ্জামান সোহেল, ফরিদপুর

সারের সংকটে শঙ্কিত চাষিরা

ফরিদপুরের নয় উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে এবার আমন ধানের আবাদ বেড়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর কয়েক হাজার হেক্টর বেশি জমিতে আবাদ হয়েছে আমন ধানের। ফলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি আমন ধানের আবাদ করেছে জেলার চাষিরা। কিন্তু হঠাৎ করেই ইউরিয়া সারের সংকটে বেশ বিপাকে পড়েছেন জেলায় কয়েক হাজার চাষি। ইউরিয়া সারের সংকটের কারণে খুচরা বাজারে হঠাৎ করেই বেড়েছে দাম। ফলে আমন আবাদে কাক্সিক্ষত উৎপাদন নিয়ে শঙ্কিত জেলার চাষিরা। জানা গেছে, ফরিদপুরের সদর উপজেলাসহ ৯টি উপজেলায় এবার চাহিদার তুলনায় অর্ধেক সার সরবরাহ করা হয়েছে। চাহিদার তুলনায় সারের সরবরাহ কম থাকায় খুচরা বাজারে দাম বেড়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। কয়েক দিন আগে ইউরিয়া সার খুচরা বাজারে বিক্রি হতো ১৬ টাকা কেজি দরে। কিন্তু বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে ১৮ থেকে ২০ টাকা কেজি দরে। ভাঙা উপজেলার তুজারপুর ইউনিয়নের জান্দি গ্রামের কৃষক নাসিম মোল্লা জানান, তিনি কয়েক দিন আগে প্রতি বস্তা ইউরিয়া সার কিনেছেন ৯০০ টাকায়। কেজি প্রতি তার কাছ থেকে ২ টাকা করে বেশি নেওয়া হচ্ছে। নগরকান্দার বাউতিপাড়ার কৃষক বরুন মন্ডল জানান, তিনি প্রতি বস্তা সার কিনেছেন ৯২৫ থেকে ৯৫০ টাকা দরে। বেশ কয়েকজন কৃষক জানান, হঠাৎ করে ইউরিয়া সারের দাম বেড়ে যাওয়ায় তারা বেশি দামে সার কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। অনেকেই বলেছেন, তারা চাহিদা অনুযায়ী ইউরিয়া সার পাচ্ছেন না। ফলে জমিতে চাহিদার তুলনায় কম সার দিতে হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফরিদপুর জেলায় সারের ডিলার রয়েছেন ৯৬ জন। খুচরা সার বিক্রেতা রয়েছে ৭২৯ জন। এ ছাড়া বিভিন্ন গ্রামগঞ্জের বাজারগুলোতে আরও কয়েকশ সার বিক্রেতা রয়েছেন। সার বিক্রেতারা জানান, প্রয়োজনের তুলনায় তারা এবার কম সার পেয়েছেন। ফলে সারের দাম কিছুটা বাড়তির দিকে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুর জেলায় এ বছর ইউরিয়া সারের চাহিদা ছিল ৭৭ হাজার মেট্রিক টন। কিন্তু বরাদ্দ পাওয়া গেছে ৩৯ হাজার মেট্রিক টন। চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম পাওয়ায় চাষিরা চাহিদা মাফিক সার পাচ্ছেন না। শহরের টেপাখোলা এলাকার সার ডিলার লিটন মৃধা বলেন, ডিলারদের কারসাজির কারণেই হয়তো ইউরিয়া সারের দাম বেড়েছে। ফলে কৃষকেরা অধিক দামে সার কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। এদিকে, ইউরিয়া সারের চাহিদা কম থাকায় চলতি আমন মৌসুমে ধানের ফলন কম হওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করছেন চাষিরা।

বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের ফরিদপুর শাখার সভাপতি আবদুস সালাম বলেন, ডিলার পর্যায়ে সারের দাম কম বেশি হয়নি। তবে খুচরা বাজারে কিছুটা দর বেড়েছে। তিনি বলেন, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে জেলায় ইউরিয়া সারের যে চাহিদা ছিল সে তুলনায় কম সার সরবরাহ করা হয়েছে। এ কারণে খুচরা বাজারে দামের কিছুটা প্রভাব পড়েছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক ড. হযরত আলী বলেন, জেলায় সারের সংকট হওয়ার কথা নয়। খুচরা বাজারে ইউরিয়া সারের দাম কিছুটা বেড়েছে। এ দর বেশি দিন থাকবে না বলে তিনি জানান।

সর্বশেষ খবর