রবিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

ধামরাইয়ে সেবাবঞ্চিত রোগীরা

ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি

ধামরাইয়ে সেবাবঞ্চিত রোগীরা

ঢাকার ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিনিয়তই রোগীরা প্রকৃত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। উপজেলার ৬ লাখ মানুষের জন্য হাসপাতালে রয়েছে তিন কনসাল্টেনসহ ১৬ জন চিকিৎসক। অথচ এখানে চিকিৎসক থাকার কথা ৪৩ জন। ৫০ শয্যা এ হাসপাতালে চিকিৎসকসহ ব্যাপক জনবল সংকট। যার কারণে ভেঙে পড়েছে স্বাস্থ্যসেবা।  গ্রামের অভাবী অসহায় মানুষসেবা নিতে গেলেই হাসপাতালে বর্তমানে কর্মরতরা অন্য হাসপাতালে রেফার্ড করেন। যার কারণে সরকারি এ হাসপাতালের উপর ভরসা না করে রোগীরা ছুটছেন  প্রাইভেট হাসপাতালে। জানা গেছে, বিশাল এলাকা জুড়ে ধামরাই উপজেলা। এখানে ১৬টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে উপজেলা গঠিত। লোক সংখ্যা রয়েছে প্রায় ৬ লাখ। ইউনিয়ন পর্যায়ে যে ধরনের স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র রয়েছে তাতে চিকিৎসক থাকছে না। যারা থাকছেন তারা সকাল ১১টায় খুলে দুপুর ১২টায় বন্ধ দিচ্ছেন। তাই গ্রামে লোকজনদের চিকিৎসা সেবা পেতে ছুটতে হচ্ছে ধামরাইয়ের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। কিন্তু সেখানেও মিলছে না গ্রামে সাধারণের মানুষ কাক্সিক্ষত সেবা। হালকা জটিল ও কঠিন রোগ নিয়ে সরকারি এ হাসপাতালে গেলেই তারা তাদের ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে যাওয়ার কথা বলছেন। ধামরাইয়ে এ ৫০ শয্যা  হাসপাতালটি ১৯৮২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এখানে  চিকিৎসক থাকার কথা ৪৩ জন বর্তমানে আছে ১৬ জন। এদের মধ্যে তিনজন রয়েছে বিভিন্ন বিষয়ে কনসাল্টেন। আর এ হাসপাতালে কোনো আয়া নেই, নেই কোনো ওয়ার্ড বয়। এলএমএসএস থাকার কথা ৯ জন আছে দুজন। ৪০ জন নার্স এ হাসপাতালে কর্মরত থাকলে এখান থেকে আট জন ঢাকা স্বাস্থ্য অধিদফতরে কর্তব্য পালন করছেন আর ছয় জন করছেন ধামরাইয়ের কৃষ্ণনগর নামে অপর একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। আর হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি সবই এনালক। যার পরীক্ষার মানও খুব ভালো হয় না। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে বিভিন্ন গ্রাম থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ হাসপাতালে এসে টিকিট কেটে চিকিৎসকদের রুমের গেটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। কারণ বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির লোকজনদের সঙ্গে কথা বলে সময় পার করছেন তারা। তাদের কাছে  রোগীদের চেয়ে ওই ওষুধ কোম্পানির লোকজনদের গুরুত্ব অনেক বেশি বলে জানান তারা। তাই সরকারি হাসপাতালে সেবা নিতে এসে দুর্ভোগে পড়ছেন গ্রামের মানুষ। তাই তারা টাকা দিয়ে প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া অনেক ভালো বলে দাবি করেন। হাসপাতালে কয়েকজন ভর্তি রোগীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভর্তি রোগীদের অধিকাংশ ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। আর খাবারের মানটা একেবারেই খারাপ বলে জানান তারা। এছাড়া নার্সরা করেন অনেক সময় খারাপ ব্যবহার। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ হাসপাতালের একজন চিকিৎসক জানান, ঢাকার অতি কাছে হলেও অনেক চিকিৎসক এখানে এসে থাকতে চান না। এছাড়া ধামরাই একটি বিশাল এলাকা। রোগীদের প্রচুর চাপ। নেই পর্যাপ্ত চিকিৎসক। আমরা কয়েকজন রয়েছি। এতে ৬ লাখ মানুষের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছি আমরা। ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রধান ডা. নুর রিফাত আরা জানান, ধামরাই এ সরকারি হাসপাতাল আগের চেয়ে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। এখানে দীর্ঘদিন চিকিৎসকদের অভাবে সিজারিং বন্ধ ছিল। যা সম্প্রতি চালু হয়েছে।

অ্যাম্বোলেন্স বিকল ছিল। যা কয়েকদিন আগে সরকার একটি অ্যাম্বোলেন্স দিয়েছে। জনবল কিছু সংকট রয়েছে বলে জানান তিনি। তার দাবি ধামরাইবাসী যথেষ্ট চিকিৎসাসেবা পাচ্ছে তার হাসপাতাল থেকে।

সর্বশেষ খবর