সোমবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

১৫ বছরেও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি বিসিক শিল্পনগরী

জয়পুরহাট প্রতিনিধি

১৫ বছরেও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি বিসিক শিল্পনগরী

প্রতিষ্ঠাতার ১৫ বছরেও ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না জয়পুরহাট বিসিক শিল্পনগরী। কিছু শিল্পকারখানা গড়ে উঠলেও বিনিয়োগ বাড়ছে না এ শিল্প নগরীতে। ফলে নতুন নতুন শিল্পোদ্যোক্তাও তৈরি হচ্ছে না। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের অভিযোগ, গত কয়েক বছরে কিছু শিল্পকারখানা গড়ে উঠলেও প্লট সংকটে বিনিয়োগ বাড়াতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। একদিকে নতুন উদ্যোক্তারা প্লট না পেয়ে বিনিয়োগ করতে পারছে না। অন্যদিকে নতুন কোনো শিল্পকারখানা না হওয়ায় কর্মসংস্থানের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন জেলার বেকার যুবসমাজ। যদিও কর্তৃপক্ষ বলছেন, তারা এ শিল্প নগরীর পরিধি বাড়িয়ে নতুন কর্মসংস্থানের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। সূত্রে জানা যায়, বিসিক শিল্পনগরী  তৈরির লক্ষ্যে জয়পুরহাট শহর থেকে তিন কিলোমিটার দূরে দাদড়া জন্তিগ্রাম এলাকায় ১৯৯১ সালে ১৫ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। পরে ১৯৯৬ সালে ১১১টি প্লট তৈরি করে তা উদ্যোক্তাদের মাঝে বরাদ্দ দেওয়া হয়। শুরুর দিকে প্লট বিক্রি না হলেও এখানে পোলট্রি শিল্প সম্প্রসারণ হওয়ায় অনেকেই কারখানা তৈরি করতে আগ্রহী হন। ২০০৭ সালে বরাদ্দকৃত সব কটি প্লট শেষ হয়ে যায়। বর্তমানে ৪৭টি শিল্প কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে পোলট্রি ফিড, হ্যাচারি, জৈব সার কারখানা, পোলট্রি মেডিসিন কারখানা, মুড়ি তৈরির মিল, বস্তা তৈরি এবং বালতি তৈরিসহ বেশ কয়েক রকমের শিল্প কারখানা গড়ে উঠেছে এ শিল্প নগরীতে। শহরের কোলাহল মুক্ত, উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ সুবিধাসহ শিল্পকারখানা উপযোগী পরিবেশ হওয়ায় অধিকাংশ ব্যবসায়ীরা এখানে শিল্পকারখানা তৈরি করতে আগ্রহী বলে জানান স্থানীয় উদ্যোক্তারা। জেলার ব্যবসায়ী সামস মতিন, কালাইয়ের আবদুল আজিজ, আক্কেলপুরের ব্যবসায়ী মন্টু কবিরাজ, ক্ষেতলালের দুলাল মিয়াসহ কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, তারা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা হিসেবে ছোট ছোট শিল্প-কারখানা তৈরি করতে চান কিন্তু বিসিকে নতুন প্লট না পাওয়ায় তারা উদ্যোগ নিতে পারছেন না। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিসিক এলাকায় ইতিমধ্যে যারা শিল্পকারখানা তৈরি করছেন, তাদের কারখানা সম্প্রসারণের জন্য আরও প্লট দরকার। কিন্তু কর্তৃপক্ষ নতুন করে প্লট দিতে পারছে না। এতে প্লট সংকটে তারা কারখানা সম্প্রসারণ করতে পারছেন না। জয়পুরহাট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সিনিয়র সহসভাপতি আহসান কবীর জানান, বিসিকে প্লট সংকটের কারণে অনেক নতুন উদ্যোক্তা তারা শিল্পকারখানা করতে পারছেন না। অনেকেই আবার বাধ্য হয়ে বিসিকের পাশে জমি নিয়ে শিল্পকারখানা তৈরি করছে। এতে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তারা অনেক আগে থেকেই সরকারের ওপর মহলে এ ব্যাপারে আবেদন করলেও এখনো এর সুফল আসেনি বলে জানান। ব্যবসায়ীদের দাবি, জয়পুরহাটে আরেকটি বিসিক শিল্পনগরী করা হলে একদিকে সরকারের রাজস্ব বাড়বে, অন্য দিকে স্থানীয় অর্থনীতির চাকাও থাকবে সচল। জয়পুরহাট বিসিকের উপব্যবস্থাপক লিটন চন্দ্র বলেন, বিসিকে প্লটের অনেক চাহিদা রয়েছে। এ এলাকার অর্থনীতি কৃষিভিত্তিক হওয়ায় পোলট্রি, হাস-মুরগি ও মাছের খাদ্য, জৈব সার ও ওষুধ কারখানাসহ ছোট-বড় অর্ধশত কলকারখানা রয়েছে। এখানে প্লট না থাকায় নতুন উদ্যোক্তারা শিল্পকারখানা করতে পারছেন না। আমরা ইতিমধ্যে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি এবং জেলায় একটি ইকোনোমিক জোন হলেই এ অঞ্চলে জনসাধারণের ব্যাপক কর্মসংস্থানসহ শিল্পায়ন ত্বরান্বিত হবে।

সর্বশেষ খবর