মঙ্গলবার, ৫ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

মহিলা মাদরাসা বটে!

শেরপুর প্রতিনিধি

মহিলা মাদরাসা বটে!

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার কলেজ রোডে অবস্থিত জামিয়া ফয়জুননেছা মহিলা মাদরাসা। এটি শতভাগ আবাসিক একটি ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এখানের কোনো শিক্ষার্থী অসুস্থ হলে অভিভাবকদের জানানো হয় না। তিনটি রুমে অন্তত ৪৫০ শিক্ষার্থী গাদাগাদি করে থাকে। রাতে  শোবার গেলে চিৎ-কাত হওয়ার মতো অবস্থা থাকে না। হাত-পা পর্যন্ত নাড়ানোর সুযোগ নেই। এমন অভিযোগ মাদরাসায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি দুই শিক্ষার্থীর। ওই দুই শিক্ষার্থী সহোদর বোন। একজনের নাম সামিরা, অপরজন সামিমা। তারা ঝিনাইগাতী উপজেলার ফাকড়াবাদের আহসান হাবিব জুয়েলের কন্যা। সামিরা ও সামিমার অভিযোগ- ১০ দিন আগে তারা দুই বোনসহ বেশ কিছু শিক্ষার্থী জ্বরসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়। কিন্তু মাদরাসা কর্তৃপক্ষ বাড়িতে খবরও দিতে দেয়নি, ওষুধও দেয়নি। বারবার বললেও গালমন্দ করে। পরে রবিবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সামিমা জ্বরে ২-৩ বার জ্ঞান হারালেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। এ অসুস্থতার মধ্যেই সামিমাকে তিনটি পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়েছে। রাতে বড় বোন সামিমা বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে ছোট বোন সামিরার চিৎকারে বাধ্য হয়ে গতকাল সামিমার অভিভাবককে বিষয়টি অবগত করা হয়। সামিমার মা সেলিনা হাবিব মাদরাসা কর্তৃপক্ষের এমন আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করলে তাকে শুনতে হয়েছে বকাঝকা। মেয়ের অবস্থা বেগতিক দেখে কোনোরকম দুই মেয়েকে মাদরাসা থেকে উদ্ধার করে দুপুরে ঝিনাইগাতী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন মা। সামিমা ও সামিরার দেওয়া তথ্যে জানা গেছে- ১০০ জনের থাকার জায়গায় ৪৫০ নারী শিক্ষার্থীকে রাখা হয়। জেলখানাকেও হার মানায় কর্তৃপক্ষের শাসন। একজনের জায়গায় শুতে হয় ৫ জনকে। বাথরুম, খাওয়া-দাওয়া কোনো কিছুরই ঠিক নেই। প্রতিবাদ দূরের কথা, মন খারাপ করলেও শাস্তি পেতে হয়। স্থানীয় লোকজন এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে নিয়ে নানা কথা বলেছেন। স্থানীয়দের মতে, এখানে কী হয় তা জানার কোনো সুযোগ নেই। শিক্ষার্থীদের কঠিন শাসনের মধ্যে থাকতে হয় এমন কথা সবাই বলেছেন। ঝিনাইগাতী থানার ওসি ফয়জুর রহমান বলেন, বিষয়টির খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ আল হাসান বলেন, খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর