শনিবার, ৯ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় যানজট, বিড়ম্বনায় পর্যটক

প্রতিদিন ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বিভিন্ন জেলা থেকে আসা শত শত বাস থেমে থাকে সড়কজুড়ে

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় যানজট, বিড়ম্বনায় পর্যটক

পর্যটন শহর কুয়াকাটার সড়কজুড়ে আন্তজেলা বাস-মিনিবাসের ছড়াছড়ি -বাংলাদেশ প্রতিদিন

পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় নেই নির্দিষ্ট বাস টার্মিনাল। মূল সড়কে যত্রতত্র রাখা হচ্ছে পর্যটকবাহী বাস ও দূরপাল্লার পরিবহন। আর সৈকতে নামার সড়কে দুই পাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে একাধিক পরিবহন কাউন্টার। এসব টিকিট কাউন্টার থেকে যাত্রীদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য হাঁক-ডাক, অনবরত হর্ন আর যান্ত্রিক শব্দদূষণ চরম বিরক্তিতে ফেলেছে পর্যটকদের। এ ছাড়া এলোমেলোভাবে বাস পার্কিং করে রাখার কারণে সৈকতে যাওয়ার একমাত্র সড়কের প্রশস্ততা কমে গেছে। এর ফলে প্রতিনিয়ত তৈরি হচ্ছে যানজট। যে কোনো সময় দুর্ঘটনার শঙ্কায় রয়েছেন পর্যটকসহ পথচারীরা। সরেজমিন দেখা যায়, কুয়াকাটা টিঅ্যান্ডটি রেস্ট হাউস পার হয়ে মোড় ঘুরলেই সড়কের দুই পাশে দূরপাল্লার পরিবহন ও বিআরটিসির বাসগুলো যত্রতত্র দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া বেড়িবাঁধের চৌরাস্তায় গিয়ে সৈকতের দিকে তাকালে হাতের ডানে (পশ্চিম দিকে) দেখা যাবে পটুয়াখালীর আন্তজেলা ও বরিশাল বাস কাউন্টার। এসব বাসের কারণে সরু হয়েছে রাস্তা। পর্যটক ও স্থানীয়দের হোটেল ও জেলেপল্লীতে অনেক কষ্ট করে আসা-যাওয়া করতে হচ্ছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তের বেলাভূমি সাগরকন্যা কুয়াকাটা। সারা দেশের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হওয়ায় শুধু পর্যটন মৌসুম নয়। সারা বছরই পর্যটকদের পদভারে মুখরিত থাকে কুয়াকাটা সৈকত। এরই সঙ্গে আরও বেড়েছে পরিবহনের সংখ্যা। এ সমস্যা নিরসনের জন্য দ্রুত বাস টার্মিনাল নির্মাণের দাবি তাদের। পর্যটক ইমরান হাসান লিমন ও মুনিরা নুসরাত মুনা দম্পতি বলেন, সড়কের ওপরেই আমাদের বাস থামল। ওখান থেকে ছেলেমেয়ে নিয়ে হোটেলে যেতে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে। অপর পর্যটক আহসান জানান, এভাবে সড়কের ওপর পরিবহন থামানো খুবই বিপজ্জনক। এতে অনেক ঝুঁকি থাকে। তবে এখানে নির্দিষ্ট একটি বাসস্ট্যান্ড দরকার বলে তিনি মনে করেছেন। কুয়াকাটার বাসিন্দা এনামুল হক বলেন, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা কুয়াকাটাগামী পরিবহনগুলো যখন পৌঁছে তখন সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। প্রতিদিন সৈকতে যাওয়ার সড়কজুড়ে এসব পর্যটকবাহী বাস ও দূরপাল্লার পরিবহন এলোমেলোভাবে পার্কিং করা হচ্ছে। এতে কুয়াকাটার সৌন্দর্য যেমন নষ্ট হচ্ছে, তেমনি পর্যটকসহ স্থানীয়দের চলাফেরায় সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিবন্ধকতা। অটোচালক আবুল কাশেম বলেন, কোনো ধরনের নিয়ম না মানায় বিভিন্ন জেলা থেকে আগত আন্তজেলার বাসের কারণে শহরজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে এক ঘণ্টার পথ যেতে লাগে দুই ঘণ্টা। মিনিবাস চালক খোরশেদ মিয়া বলেন,  বিভিন্ন জেলা থেকে আসা বাসগুলো শহরের বিভিন্ন স্থানে যত্রতত্র পার্কিং করায় যানজটের সৃষ্টি হয়।

কুয়াকাটা পৌর মেয়র মো. আনোয়ার হাওলাদার বলেন, ৬ একর জমির ওপর কুয়াকাটায় নির্মিত হচ্ছে আধুনিক মানের বাস টার্মিনাল। এতে প্রায় ৫০০ গাড়ি পার্কিং করা যাবে। ইতিমধ্যে বাস টার্মিনালের জন্য বালু-মাটি ভরাট ও              বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়েছে। এ ছাড়া যাত্রীদের জন্য যাত্রী ছাউনির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে এ সমস্যার সমাধান হবে। জেলা পুলিশের টাফিক পরিদর্শক ফজলু মিয়া বলেন, যানজট নিয়ন্ত্রণে শিগগিরই পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর