মঙ্গলবার, ১২ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

বিয়ের দাবিতে স্কুলছাত্রী সাত দিন ধরে অনশনে

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

বিয়ের দাবিতে স্কুলছাত্রী সাত দিন ধরে অনশনে

ঝিনাইদহের শৈলকূপায় বিয়ের দাবিতে সাত দিন ধরে স্কুল ছাত্রীর অনশন চলছে। এমন ঘটনা শুরু হয়েছে উপজেলার জাঙ্গালিয়া গ্রামে। প্রেমিকের নাম আকাশ ওরফে আক্কাচ। সে একই উপজেলার আলম খোন্দকারের ছেলে। আর প্রেমিকা একই গ্রামের ১০ম শ্রেণির ছাত্রী বিথী (ছন্দনাম) (১৫)। বর্তমান মেয়েটি ৭ দিন ধরে প্রেমিকের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অবস্থান করলেও কারোর কোনো টনক নড়েনি। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২০ সেপ্টেম্বর আকাশ  মেয়েটিকে বিয়ে ও অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে ভাগিয়ে নিয়ে যান এবং বিয়ের নামে একটানা ১৫ দিন ঝিনাইদহ বন্ধুর বাসায় রেখে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। পরে তাকে ছেড়ে পালিয়ে আসেন  শেখপাড়াতে। গত ৫ অক্টোবর সন্ধ্যায় আকাশের গ্রামের বাড়িতে ওঠেন মেয়েটি এবং বিয়ের দাবিতে অনশনে বসেছে। আকাশের সংসারে স্ত্রী ও দুটি সন্তানও রয়েছে। আকাশ বর্তমানে পেশায় একজন সবজি ব্যবসায়ী। সে তার স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে উপজেলার শেখপাড়া বাজারে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করে। অনশনকারী প্রেমিকা বিথী (ছন্দনাম) বলেন, প্রায়ই আকাশ আমাকে স্নেহ করার নামে শরীরে বিভিন্ন স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দিত। এভাবেই বছরের পর বছর আকাশ আমার দুর্বলতার সুযোগে জেনেশুনে আমার দেহ ভোগ করেছে। আকাশ বিয়ে করাসহ নানা প্রলোভন দেখিয়েছে। বাবার বাড়িতে কোনো জায়গা নেই বিধায় উপায়ন্তর না দেখে ওর বাড়িতে উঠেছি। আমাকে বিয়ে না করা পর্যন্ত আমি এই বাড়ি ছেড়ে যাব না। তার বাড়ির  লোকজন আমাকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। জোরপূর্বক বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার পাঁয়তারা করছে। অনশনকারী ছাত্রীর বাবা বলেন প্রায়ই রাতে আকাশ আমার বাড়ি আসত। আমার মেয়েকে কাছে ডেকে গল্প করত। আমি কখনো ভাবিনি তার দ্বারা এত বড় সর্বনাশ হবে মেয়ের। আমার মেয়েকে ফুসলিয়ে ও বিয়ের আশ্বাসে অনৈতিক সম্পর্ক করেছে।

দেখিয়ে বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে গিয়ে মেলামেশা করেছে। আমার পরিবারের মানসম্মান শেষ করে দিয়েছে। এখন আমার মরণ ছাড়া উপায় নেই। নানাভাবে হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছে। নিরাপত্তা নিয়েও আমরা এখন চিন্তিত। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, উপজেলার কাঁচেরকোল ইউনিয়নের জাঙ্গালিয়া গ্রামের আকাশের সঙ্গে মেয়েটির প্রেমের সম্পর্ক হয় বিধায় গত ৫ অক্টোবর সন্ধ্যায় আকাশের গ্রামের বাড়িতে ওঠে এবং বিয়ের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছে মেয়েটি। আকাশের সঙ্গে দীর্ঘদিন অবৈধ  প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। পরিবারের সঙ্গে আসা যাওয়া করত আকাশ। কিন্তু চরিত্রহীন আকাশ  মেয়েটির সরলতার সুযোগে এমন কাজ করবে তারা চিন্তাও করতে পারেনি। আকাশের কঠোর শাস্তি হওয়া দরকার। তবে প্রেমিক আকাশ মুঠোফোনে বলেন, মেয়েটির সঙ্গে আমার তেমন কোনো সম্পর্ক ছিল না। আমার ফাঁসাতে এসব ষড়যন্ত্র চলছে। কাঁচেরকোল ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সালাউদ্দিন জোয়ার্দ্দার মামুন জানান, ঘটনাটি আমি কিছুই জানিনা। লোক মারফত শুনেছি। তবে এমন ঘটনা যদি ঘটেই থাকে তাহলে আকাশের চরম শাস্তি হওয়া উচিত। শৈলকূপা থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলম জানান, ছাত্রীর অনশনের ঘটনায় কোনো লিখিত অভিযোগ আমার কাছে আসেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সর্বশেষ খবর