বৃহস্পতিবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

কোমর তাঁতে তৈরি হবে না কঠিন চীবর : উৎসবেও সীমাবদ্ধতা

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

কোমর তাঁতে তৈরি হবে না কঠিন চীবর : উৎসবেও সীমাবদ্ধতা

পাহাড়ে এবার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোমর তাঁতে তৈরি করা হবে না কঠিন চীবর। বসানো হবে না বেইন ঘর  অর্থাৎ কোমর তাঁতের অস্থায়ী ঘর। তবে নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যে মাসব্যাপী পালন করা হবে চীবর দানোৎসব। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান রাঙামাটি রাজবন বিহারের সহ-সভাপতি  গৌতম দেওয়ান। তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে পুণ্যার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কারণ প্রতি বছর রাঙামাটি রাজবন বিহারসহ বিভিন্ন বিহারে চীবন দানোৎসবে হাজারও মানুষের সমগম হয়। তাই  মানুষের স্বাস্থ্য সচেতনতার কথা মাথায় রেখে কঠিন চীবর দনোৎসবে বিভিন্ন কাটছাঁট করা হয়েছে। তবে ক্রয় করা রঙ কাপড়ে দানোৎসব হবে। বেইন ঘর অর্থাৎ কোমর তাঁতের আয়োজন করা হবে না। অন্যান্য আচার-অনুষ্ঠানও ঠিক থাকবে। আগামী ২০ অক্টোবর প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসবের পর অর্থাৎ ২১ অক্টোবর থেকে তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে  শুরু হবে কঠিন চীবর দানোৎসব। অন্যদিকে এরই মধ্যে পার্বত্যাঞ্চলে শুরু হয়েছে প্রবারণা পূর্ণিমার আয়োজন। বিহারে বিহারে ফানুস তৈরিতে ব্যস্ত বৌদ্ধ ধর্মালম্বী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ছেলেমেয়েরা। পূর্ণিমার আকাশে প্রদীপ জালিয়ে কঠিন চীবর উৎসেবের জানান দিতে প্রস্তুত করা হচ্ছে বিহারগুলোকে। হরেক রঙের রঙিন কাগজ, রঙ বে-রঙের বাতিতে সাজ সাজ রব বিহারগুলোতে। শুধু তাই নয়, বিহার চত্বরে চলছে ফানুস তৈরির কাজও। স্থানীয় সুনীল চাকমা জানায়, ফানুসের জন্য পাহাড় থেকে কচি বাঁশ সংগ্রহ করা হয়। সে বাঁশের কঞ্চি তৈরি করে রঙিন কাগজ আর  মোমের মাধ্যমে ফানুস তৈরি করা হয়। একটা ফানুস তৈরি করতে মাত্র ২০০ টাকা খরচ লাগে। তবে  দোকানেও হরেক রঙের তৈরি করা ফানুস পাওয়া যায়। কিন্তু দাম একটু বেশি। এ ছাড়া উৎসব থাকলে দাম বৃদ্ধি পাই। তাই পাহাড়ের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীরা ছেলেমেয়েরা নিজেরাই চেষ্টা করে ফানুস তৈরি করে। সেগুলো পূর্ণিমার আকাশে উড়ানো হয়। এবার কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠানকে সামনে রেখে বাঘাইছড়ি উপজেলায় প্রায় ৫ হাজার ফানুস উড়ানোর হবে বলে জানান মারিশ্যা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মানব  জ্যোতি চাকমা। তিনি বলেন, প্রবারণা পূর্ণিমার উৎসবের পর কঠিন চীবর দানোৎসব শুরু হচ্ছে। তাই পূর্ণিমাতে ফানুস তৈরির জন্য এলাকার পাড়াগুলো ভাগ করে যুবকদের ফানুস তৈরির কাজ দেওয়া হয়েছে। সবাই ব্যস্ত সময় পার করছে। আর মাত্র ৭ দিন বাকি পূর্ণিমার। এর মধ্যে শেষ হবে ফানুস তৈরি কাজ। ফানুস তৈরির মধ্যে সবার মনে আনন্দ উৎসব কাজ করেছে।

সর্বশেষ খবর