মোটরসাইকেল কিংবা ভ্যান উঠলেই কেঁপে ওঠে সেতুটি। অনেকেই ভয়ে সেতুটি দিয়ে ভারী কোনো জিনিসপত্র নিয়ে ওঠেন না। যদি ধসে পড়ে এই ভয়েই তারা তটস্থ থাকেন সব সময়। দীর্ঘ ১০/১২ বছর ধরে সেতুটির এ বেহাল দশা থাকলেও নজর নেই কর্তৃপক্ষের। স্থানীয়রা ভগ্নদশা এ সেতুটির বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার অনুরোধ করলেও কোনো কাজ হয়নি। বর্তমানে সেতুটির ধসে পড়া বড় একটি অংশ কাঠের পাটাতন লাগিয়ে কোনো রকম চলাচলের যোগ্য রাখা হয়েছে। জোড়াতালি দেওয়া এই সেতু দিয়েই প্রতিদিন মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করে শত শত মানুষ। যে কোনো সময় সেতুটি ধসে পড়ে ঘটতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা। ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার পাঁচুড়িয়া ইউনিয়নের বেড়িরহাট বাজারসংলগ্ন সেতুটির অবস্থান। এ সেতু দিয়ে চরনারানদিয়া, দক্ষিণ চরনারানদিয়া, ধুলজুরী, কালি শংকরপুর ও দেউলী গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের যাতায়াত। এ ছাড়াও গ্রামের উৎপাদিত পণ্য আনা-নেওয়া করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে সেতুটি একেবারেই ভগ্নদশা অবস্থায় রয়েছে। ফলে ৫টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ চলাচল করছে ঝুঁকি নিয়ে। বর্তমানে সেতুটির অবস্থা একেবারেই শোচনীয়। যে কোনো সময় ধসে যেতে পারে সেতুটি। সেতুটির বড় একটি অংশ কাঠের পাটাতন লাগিয়ে চলাচলের যোগ্য করা হয়েছে। এজন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বছরজুড়ে খোরশেদ আলম নামের স্থানীয় এক ব্যক্তিকে সেতুটির পাহারায় রেখেছেন। কাঠ খসে পড়লে কিংবা নষ্ট হয়ে গেলে তা তিনি পাল্টানোসহ সেতুটির নজরদারিতে রয়েছেন। খোরশেদ আলম জানান, পাঁচুড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান তাকে প্রতি মাসে বেতন দিয়ে সেতুটি দেখার দায়িত্ব দিয়েছেন। সেতুটির কাঠ নষ্ট হলে তিনি তা ঠিক করে দেন। তিনি জানান, কয়েকদিন পর পর কাঠ নষ্ট হয়। আর সেখানে কাঠ লাগিয়ে সেতুটি চলাচলের যোগ্য করে রাখেন তিনি। গত ৫ বছর ধরে তিনি এ কাজ করছেন।
এ পর্যন্ত ১ লাখ টাকার বেশি খরচ হয়েছে সেতুটি সচল রাখতে গিয়ে। গ্রামবাসী জানান, এ সেতু দিয়ে তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেন। ভারী কোনো জিনিসপত্র নিয়ে তারা সেতু দিয়ে যাতায়াত করতে পারেন না। পাঁচুড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান এস এম মিজানুর রহমান জানান, সেতুটির অবস্থা ভালো নয়। দীর্ঘদিন ধরে সেতুটির বেহাল দশা থাকলেও কর্তৃপক্ষ মেরামত কিংবা নতুন সেতুর বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। তিনি নিজের পকেটের টাকা খরচ করে এক ব্যক্তিকে দায়িত্ব দিয়েছেন সেতুটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য। ৫ বছর ধরে তিনি সেই কাজ করছেন।