মঙ্গলবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

পদ্মার তীব্র ভাঙনে পড়েছে রাজবাড়ী

দেবাশীষ বিশ্বাস, রাজবাড়ী

পদ্মার তীব্র ভাঙনে পড়েছে রাজবাড়ী

রাজবাড়ীতে পদ্মা নদীতে আবারও নতুন করে ভাঙন শুরু হয়েছে। গত দুই দিনের ভাঙনে জেলার সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের চর-সিলিমপুর এলাকার নদীর ডানতীর এলাকা রক্ষা প্রকল্পের ৫০ মিটার এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এ  নিয়ে প্রকল্পের সাড়ে চার কিলোমিটার এলাকার মধ্যে প্রায় ৮০০ মিটার এলাকা ভাঙনে বিলীন হয়েছে। ভাঙনকবলিত এলাকা থেকে কয়েকটি বাড়িঘর সরিয়ে নিয়েছেন স্থানীয়রা।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, রাজবাড়ীর পদ্মা নদীর তীর স্থায়ীভাবে সংরক্ষণের জন্য ৩৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। প্রকল্পের আওতায় সাড়ে চার কিলোমিটার এলাকায় পদ্মা নধীর তীর প্রতিরক্ষামূলক কাজের ব্যয় ধরা হয় ১৬৭ কোটি টাকা। এ ছাড়া একই এলাকায় খনন করা হবে। খননে ব্যয় ধরা হয় ১৩৫ কোটি টাকা। কাজের মূল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড। কাজ বাস্তবায়ন করেছে মেসার্স দুলাল ব্রাদার্স লিমিটেড (ডিবিএল)। কাজ সম্পন্ন করার মেয়াদ ছিল ২০২০ সালের ৩১ মে। কাজের মেয়াদ এক বছর বৃদ্ধি করা হয়। কাজ শেষ হয় এ বছরের ৩১ মে। কাজ শেষ হওয়ার দুই মাস পর থেকেই প্রল্পের এলাকায় ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়। স্থানীয় বাসিন্দা মো. সবেদ আলী বিশ্বাস বলেন, সরকার সিসি ব্লক দিয়ে সাড়ে চার কিলোমিটার অংশ নদী বেঁধে দিয়েছিল। তার ১ কিলোমিটার অংশ ভেঙে পানিতে চলে গিয়েছে। কাজে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছিল। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছিল। উপমন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছিল কারও কিছু হয়নি। রাজবাড়ী পৌরসভার বাসিন্দা মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ভাঙন এক সময় মিজানপুর ইউনিয়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। বর্তমানে রাজবাড়ী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় ভাঙন রয়েছে। এখান থেকে প্রায় সাত/আটটি বাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছেন স্থানীয়রা। কাজের গুণগতমান খারাপ হওয়ার কারণেই সিসি ব্লকগুলো ধ্বংসে যাচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যক্তি (৪৫) বলেন, ভাঙনকবলিত এলাকায় উপমন্ত্রী পরিদর্শন করেছেন। প্রতিমন্ত্রী পরিদর্শন করেছেন। কারও কোনো শাস্তি হয়েছে। অথচ এখানে দুর্নীতির অভিযোগ শুরু থেকেই রয়েছে। বলে কোনো লাভ আছে। অপর বাসিন্দা এনামুল হক বলেন, ৩৭৬ কোটির টাকার মধ্য থেকে অনেক বড় বড় জায়গায় টাকার ভাগ গেছে। ফলে বেড়িবাঁধের স্থায়িত্ব টেকেনি। রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী  প্রকৌশলী আবদুল আহাদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বৃষ্টি ও পদ্মার পানি বৃদ্ধির কারণে গত এক সপ্তাহ থেকে ফের ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনে সদর উপজেলার চর-সিলিমপুর এলাকায় প্রায় ৫০ মিটার অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ও জিও টিউব দিয়ে ভাঙনরোধের চেষ্টা করে যাচ্ছে। শিগগিরই বাঁধের ভাঙন অংশে মেরামত কাজ শুরু হবে।

সর্বশেষ খবর