রবিবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

বেহাল সাতক্ষীরা সরকারি হাঁস-মুরগি প্রজনন কেন্দ্র

♦ পরিত্যক্ত পড়ে আছে ভবন ♦ নষ্ট বাচ্চা ফোটানোর মেশিন ♦ রয়েছে জনবল সংকট

মনিরুল ইসলাম মনি, সাতক্ষীরা

বেহাল সাতক্ষীরা সরকারি হাঁস-মুরগি প্রজনন কেন্দ্র

পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে মুরগির শেড (বাঁয়ে), দীর্ঘদিন ধরে অকেজো বাচ্চা ফোটানোর ইনকিউবেটর মেশিন -বাংলাদেশ প্রতিদিন

নিরাপদ প্রাণী পুষ্টির চাহিদা পূরণ ও জনসাধারণের কল্যাণে গড়ে ওঠা সাতক্ষীরা সরকারি হাঁস-মুরগি খামার প্রজনন কেন্দ্রটি কাজে আসছে না। মুরগি পালনের চারটি শেডের মধ্যে তিনটি এবং ভবনগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।         রয়েছে জনবল সংকট। হ্যাচারি ভবনে ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানো ইনকিউবেটর মেশিন থাকলেও তা দিয়ে এক দিনও বাচ্চা ফোটানো হয়নি। বছরের পর বছর পড়ে থেকে মরিচা ধরে মেশিনটি এখন অকেজো অবস্থায় আছে। কালেভদ্রে দুই-এক বার বাইরে থেকে মুরগির বাচ্চা এনে এখানে খামারে পালন করা হয়।

জানা যায়, সাতক্ষীরাবাসীর নিরাপদ প্রাণী পুষ্টির চাহিদা পূরণ এবং দরিদ্র মানুষের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ১৯৮৫ সালে শহরের জেলা পরিষদ অফিস-সংলগ্ন এলাকায় তিন একর জমির ওপর গড়ে ওঠে সরকারি হাঁস-মুরগি প্রজনন ও পালন কেন্দ্র। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় এবং জনবল সংকটে এখন বেহালদশা এ প্রজনন কেন্দ্রের। প্রশাসনিক ভবনের পলেস্তারা খসে পড়ছে। মোরগ ও মুরগি পালনের চারটি শেডের তিনটিই পরিত্যক্ত। বাচ্চা উৎপাদনের হ্যাচারি ভবনটি রয়েছে তালাবদ্ধ। খামারের জন্য বরাদ্দ করা জনবল সাতজন। এর মধ্যে চারটি পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য। যশোর সরকারি মুরগি প্রজনন উন্নয়ন খামারের আওতায় পরিচালিত হয়ে আসছে সাতক্ষীরার সরকারি এই হাঁস-মুরগি প্রজনন ও উন্নয়ন খামার। যশোর থেকে মুরগির বাচ্চা এনে দায়িত্বরতরা এখানে লালন-পালন করে থাকেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বছরে এখানে মাত্র দু-একবার মুরগির বাচ্চা নিয়ে এসে লালন-পালন করা হয়। সরেজমিন দেখা গেছে চারটি শেডই মুরগিশূন্য। নেই কোনো কার্যক্রম। খামারের পোলট্রি ডেভেলপমেন্ট অফিসার কে এম সাদ্দাম হোসেন জানান, লোকবল সংকট, সংস্কার ও পর্যাপ্ত বরাদ্দের অভাবে কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনা করা যাচ্ছে না। প্রতিষ্ঠার এক বছরের মাথায় খামারের হ্যাচারিতে প্রায় ২ লাখ টাকা খরচ করে ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানোর জন্য ইনকিউবিটর মেশিন বসানো হয়। সেখানে একদিনের জন্যও বাচ্চা উৎপাদন করেননি আগের কর্মকর্তারা। আমি সদ্য যোগদানের পর দেখলাম খামারটির বেহাল দশা। তিনি বলেন, কার্যক্রম না থাকায় হ্যাচারি ভবনটি পরিত্যক্ত গুদামে পরিণত হয়েছে। চলতি অর্থবছরে ২০ হাজার মুরগি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১৪২০টি ফাউমি ও সোনালি জাতের মুরগি উৎপাদন করে তা খামারিদের মধ্যে বিক্রি করা হয়েছে। সাতক্ষীরা সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু জানান, মাংস ও মুরগির ডিম মানুষের সুস্বাস্থ্যের অন্যতম উপাদান। নিরাপদ প্রাণী পুষ্টির চাহিদা নিশ্চিত এবং দরিদ্র মানুষের কর্মসংস্থানের জন্য দ্রুত সাতক্ষীরা সরকারি মোরগ-মুরগি প্রজনন কেন্দ্রের কর্যক্রম সচল করা খুবই জরুরি। তা না হলে শুধু শুধু সরকারের অর্থ অপচয় হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর