সোমবার, ১ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

হিলিতে পিঁয়াজের কেজি ৩০ টাকা

হিলি প্রতিনিধি

হিলিতে পিঁয়াজের কেজি ৩০ টাকা

দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে অস্থিতিশীল থাকার পর দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে পাইকারিতে প্রতি কেজি পিঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। ফলে দাম স্থিতিশীল অবস্থায় ফিরতে শুরু করেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে পিঁয়াজের দাম কমেছে কেজিতে ১০ টাকা করে, পূর্বে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এদিকে পিঁয়াজের দাম কমায় খুশি বন্দরে কিনতে আসা পাইকাররা। একইভাবে স্বস্তি ফিরেছে নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে। হিলি স্থলবন্দরের আড়তগুলোতে বগুড়া থেকে পিঁয়াজ কিনতে আসা পাইকার রফিকুল ইসলাম বলেন, কয়েক দিন আগে হিলি স্থলবন্দর থেকে পিঁয়াজ কিনে নিয়ে গেছি। সে সময় পিঁয়াজের দাম ছিল ৩৮ টাকা থেকে ৪০ টাকা কেজি। এখন পিঁয়াজের দাম অনেক কমে গেছে। যার কারণে এখন ভালো মানের পিঁয়াজ ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আর কিছুটা নিম্ন মানের পিঁয়াজ ২০ থেকে ২২ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। কম দামে পিঁয়াজ কিনতে পারায় আমরা নিয়ে গিয়ে কম দামে বিক্রি করব। এতে যেমন সুবিধা হবে, তেমনি জনগণ কম দামে কিনতে পারবে। হিলি স্থলবন্দরের পিঁয়াজ ব্যবসায়ী শরিফুল ইসলাম বলেন, হঠাৎ করেই দুর্গাপূজার আগে বাজারে দেশি পিঁয়াজের সরবরাহ কমে দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়ে যায়। একইভাবে ভারতে অতিবৃষ্টি ও বন্যার কারণে পিঁয়াজের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় সরবরাহ কমায় সেখানেও পিঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়ে যায়। এতে বাড়তি দামে আমদানির ফলে দেশের বাজারে পিঁয়াজের দাম বাড়তে থাকে। ফলে দেশে অস্থিতিশীল হয়ে উঠে পিঁয়াজের বাজার। এতে চরম বিপাকে পড়েন নিম্ন আয়ের মানুষ। এমন অবস্থায় সরকার পিঁয়াজের আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করে নেয়। ফলে পূজার বন্ধের পর ভারত থেকে বাড়তি পিঁয়াজ আমদানি হওয়ায় দেশের বাজারে পণ্যটির সরবরাহ বাড়ায় দাম কিছুটা কমতে শুরু করেছে। এ ছাড়া অতিরিক্ত গরমের কারণে ও ক্রেতা সংকটে পিঁয়াজ পচে নষ্ট হওয়ায় খানিকটা কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছিল আমদানিকারকরা। পিঁয়াজের দাম পূজার বন্ধের আগে যা ৪৮ টাকায় উঠে গিয়েছিল সেটি কমে ৪০ টাকায় নেমে আসে। ভারতের পাশাপাশি মিয়ানমার থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পিঁয়াজ আমদানির ফলে দেশের বাজারে পিঁয়াজের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। এর ওপর বাজারে দেশি পিয়াজের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। পরে শীতকালীন দেশীয় নতুন পাতা পিঁয়াজ ইতিমধ্যে বাজারে উঠতে শুরু করেছে। দামও কিছুটা কম রয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে আমদানিকৃত পিঁয়াজের চাহিদা কমায় ও ক্রেতা সংকটের কারণে পিঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে।

বর্তমানে বন্দরে পাইকারিতে ভারতীয় পিঁয়াজ ৩০ থেকে ৩২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। হিলি স্থলবন্দরের পিঁয়াজ ব্যবসায়ী মাহফুজার রহমান বলেন, হিলি স্থলবন্দরে পিঁয়াজ পাইকারিতে ৩০ টাকা বিক্রি হলেও ঢাকায় সেই পিঁয়াজ এখনো দ্বিগুণ দামে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যা ঢাকার ব্যবসায়ীদের একটি কারসাজি ছাড়া আর কিছুই নয়। তারা দেখে বাজারে যদি একটু পিয়াজের চাহিদা বেশি হয় জোগান কম থাকে অযথা পিয়াজের দাম বাড়িয়ে দেয় তারা। আর তাদের এই দাম বাড়ার কারণে খুচরা পর্যায়ে দাম আরও বেড়ে যাচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে যে পিঁয়াজ হিলিতে ৩০ টাকা বিক্রি হচ্ছে সেই পিয়াজ ঢাকায় যদি ৪০ টাকার ওপরে বিক্রি হয় তাহলে বুঝতে হবে এটি ব্যবসায়ীদের কারসাজি। কারণ হিলি স্থলবন্দর থেকে পিঁয়াজ ক্রয় করে ঢাকা পর্যন্ত পৌঁছে খুচরা পর্যায়ে যেতে ৩/৪ হাত বদল হয়। এতে পরিবহন খরচ আড়ত খরচ মিলিয়ে ৩৭ থেকে ৩৮ টাকা হতে পারে। সেখানে না হয় ৪০ টাকা ধরলাম, এর বেশি হওয়ার কথা নয়। হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পিঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রয়েছে। গড়ে প্রতিদিন বন্দর দিয়ে ১০ থেকে ১৫ ট্রাক করে পিঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। গতকাল বন্দর দিয়ে ১৩টি ট্রাকে ৩৫৮ টন পিঁয়াজ আমদানি হয়েছে। পিঁয়াজ যেহেতু কাঁচা পণ্য দ্রুত পচনশীল তাই পিঁয়াজ যাতে দ্রুত খালাস হয় সে জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়ে রেখেছে।

সর্বশেষ খবর